ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

পদ্মায় মালামাল পারপারে নৌকায় গুনতে হয় অতিরিক্ত ভাড়া

মেহেদী হাসান শিয়াম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪৩, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২   আপডেট: ১০:৪৯, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
পদ্মায় মালামাল পারপারে নৌকায় গুনতে হয় অতিরিক্ত ভাড়া

চাঁপাইনবাবগঞ্জের চর পাঁকার পদ্মা পাড়ের বাসিন্দা মোমিন উদ্দিন। তিনি গ্রামাঞ্চলে সাইকেলে ফেরি করে থান কাপড় বিক্রি করেন। ইদানিং মেয়েদের জন্য থ্রি-পিচের কাপড়ও বিক্রি করছেন তিনি। এসব কাপড় জেলা শহরের ক্লথ ষ্টোর গুলো থেকে গাট্টি বেঁধে কিনে নিয়ে যান। কিন্তু নৌকায় ওই গাট্টি নিয়ে যেতে হলে গুনতে হয় মোটা অংকের টাকা।

মোমিন উদ্দিন বলেন, ‘সাধারণ যাত্রীদের ভাড়ার পাশাপাশি যাত্রীদের বহন করা ব্যাগ কিংবা বস্তারও ভাড়া গুনতে হয় দ্বিগুণ। আমি নৌকায় আমার ভাড়া দিয়েছি। এছাড়া থান ও থ্রি-পিচ কাপড়ের গাট্টি নৌকায় পার করতে গিয়ে দিতে হয়েছে ১২০০ টাকা।’

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের আলিমনগর ঘাট থেকে চরাঞ্চলে যাওয়ার জন্য জহোরপুর, বাখের আলী, দক্ষিণ ও উত্তর পাঁকা মিলিয়ে মোট ৪টি ঘাট আছে। এসব ঘাটে যাতায়াতের সময় নৌকায় বিশ কেজির এক কার্টুন বহনে ৬০০ টাকা, মোটর সাইকেল ১০০ টাকার পরির্বতে ১৫০ টাকা, সিমেন্টের বস্তা প্রতি ব্যাগ ৫০ টাকা, ওষুধের কার্টুন পারাপার করতে ঘাটের ইজারাদারকে দিতে হয় ৮০-১০০ টাকা পর্যন্ত।

দুলালের ১২ বিঘা জমিতে উৎপাদন হয় ধান, কলাই, গম, কলা আর কাঁচা সবজি। উৎপাদিত ফসল বিক্রির জন্য বাজারে নিতে নৌকা ব্যবহার করেন তিনি। 

দুলাল বলেন, ‘ধান কিংবা গমের বস্তা নৌকায় পারাপার করলে দিতে হয় ৫০-৫৫ টাকা। প্রতিটি কলার কাঁদি বিশ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও ঘাটের লোকজন ৪০-৪৫ টাকা নিচ্ছে।’

মাসুম নামের পদ্মা পাড়ের এক বাসিন্দা বলেন, ‘নৌকায় গরু পারাপারে উপজেলা প্রশাসন ৫০০ টাকা টোল নির্ধারণ করলেও ঘাটের মালিক নেয় ৬০০ টাকা। বিভিন্ন ধরণের আটা, ভুষি, খৈল, সারের বস্তার ভাড়া নেওয়া হয় ৪৫-৫০ টাকা। প্রতিবাদ করতে গেলে ঘাটের লোকজন মারমুখি আচারণ করেন।’

পদ্মা পাড়ের আরেক বাসিন্দা তোজাম্মেল বলেন, ‘চলতি সপ্তাহে ২৫ কেজি ওজনের একটি লোহার  জানালা পারাপার করতে নৌকা ভাড়া নিয়েছে ২৫০ টাকা। প্রশাসনের নিদিষ্ট ভাড়ায় নৌকা চালাতে বললেও তারা তা মানেন না। ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পাই না কেউ। কাজের তাগিদে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে তাই শহর মুখি হতে হয়।’

আলিমনগর ঘাটের ইজারাদারকে সরাসরি পাওয়া না গেলেও তার এক অনুরাগির সঙ্গে কথা হয়। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তেলের দাম বেড়েছে। যার কারণে আমরা একটু ভাড়া বাড়িয়ে নিচ্ছি। তাছাড়া আমরা আমাদের কাজ ঠিকমতো করি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খান বলেন, ‘নৌকায় মালামাল পারাপারে ভাড়া বেশি নেওয়ার খবর পাইনি। তারপরেও আমি সদরের ইউএনও নাইমা খান ও শিবগঞ্জের ইউএনও আবুল হায়াতকে এ বিষয়টি জানাবো।’

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়