ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বাবার লাশ রেখে পরীক্ষায় মেয়ে, ফেরার পর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া

নীলফামারী প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৫, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২   আপডেট: ১৩:২৪, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
বাবার লাশ রেখে পরীক্ষায় মেয়ে, ফেরার পর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া

ভোরে ঘুম থেকে উঠেই দুঃসংবাদ বাবা বেঁচে নেই। বাবার মরদেহ রেখেই পরীক্ষায় অংশ নেন নীলফামারীর ডোমার উপজেলার এসএসসি পরীক্ষার্থী নমিতা রানী ঝাঁ।ফিরে আসার পর শেষ হলো অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া।

ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের বাকডোকরা শিয়ালডাঙ্গা গ্রামে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬ টার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান নমিতার বাবা সুনিল চন্দ্র ঝাঁ। 

নমিতা তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট। বাবাকে হারিয়ে তিনি ভেঙে পড়েন। এদিন সকাল ১১টায় তার বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা পরীক্ষা। শোকে বারবার মুর্ছা যাওয়া নমিতার পক্ষে পরীক্ষা দেওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। এ সময় তার পরিবারের সদস্য ও আত্মীয় স্বজনরা তাকে বুঝিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠায় এবং সে ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।  

নমিতা রানী উপজেলার নিমোজখানা বাকডোকরা স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এ বছর মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। 

নমিতা রানীর বড়ভাই বিপুল কুমার ঝাঁ জানান, পরীক্ষা শেষে বাড়িতে এসে বাবার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে অংশ নেয় সে। 

ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, খবরটি পেয়ে আমরাও শোকাহত। আমরা ওই পরিক্ষার্থীকে বুঝিয়ে তার বিষয়টি অনুধাবন করে তার পরীক্ষা গ্রহণ করি।

খবর পেয়ে ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রমিজ আলম নমিতা রানীর কাছে এসে তার প্রতি সহানুভুতি প্রকাশ করেন। পরীক্ষা শেষ হলে তাকে নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় বলেও তিনি জানান। 

পরীক্ষা শেষে বাড়ি পৌঁছে নমিতা রানী তার বাবার লাশের পাশে বসে বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন। বাড়ি পৌঁছানোর আধাঘণ্টা পর তার বাবার লাশ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রমিজ আলম বলেন, খবরটি শুনে আমি পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে নমিতা রানীর সাথে দেখা করে তার প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করি। পরীক্ষা কেন্দ্রে তার যেন কোন অসুবিধে না হয় সে বিষয়ে কেন্দ্র সচিবকে ব্যবস্থা নিতে বলি। 

সিথুন/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়