ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

রাজশাহীতে পূজায় জমেনি কেনাকাটা, দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা

রাজশাহী সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৪০, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২  
রাজশাহীতে পূজায় জমেনি কেনাকাটা, দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা

আর কয়েকদিন পর সনাতন ধর্মাবলাম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। কিন্তু রাজশাহীর বাজারে এখনো জমে ওঠেনি কেনাকাটা। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পোশাকের দোকানিরা। বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর সবচেয়ে বড় বিপণিবিতান আরডিএ মার্কেটে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

দুপুরে দোকানে চেয়ারে বসে ঘুমাচ্ছিলেন সুমি খাতুন। এই মার্কেটে তার ‘সুমি ফ্যাশন’ নামে দোকান আছে। পূজার এই সময়েও বেচাকেনা না থাকায় সুমি ঘুমাচ্ছেন বলে জানালেন তার দোকানের কর্মচারী। তার কথায়, অন্য বছর পূজার আগে কেনাকাটা জমে উঠলেও এবার চিত্র ভিন্ন। 

সুমির মতো হতাশ আরডিএ মাকের্টের অন্য বিক্রেতারাও। পূজা উপলক্ষে দোকানভরা নতুন পোশাক এনে সাজিয়ে রেখেছেন তারা। তবে বিক্রি খুবই কম। মার্কেটে ক্রেতাদের আনাগোনাও কম। শহরের নিউমার্কেট ঘুরেও দেখা গেছে, গতবারের তুলনায় এবার ভিড় অনেক কম।

বিক্রেতারা বলছেন, পোশাকের দাম বেড়েছে আগের চেয়ে। তাই ক্রেতারা কম কিনছেন। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, পুরনো কালেকশনের জামা-কাপড়ই বেশি দামে বিক্রি করেছেন বিক্রেতারা। 

আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান জানান, বছরের অন্য সময়ের তুলনায় ঈদ ও পূজায় জমজমাট বেচাকেনা হয়। তখন প্রতিদিন প্রায়ই দোকানে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পোশাক বিক্রি হয়। তবে এবার দিনে বেচাকেনা ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় নেমে এসেছে। 
তিনি বলেন, করোনা সময়ের পর থেকে ঘাটতি কোনোভাবেই কাটিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। এবারও ক্ষতি কাটবে না।

দুপুরের পর আরডিএ মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, পোশাকের সব দোকানই প্রায় ফাঁকা। কোনো কোনো দোকানে দুই-একজন ক্রেতা ঘুরে ঘুরে নানা পোশাক দেখছেন। পছন্দ হলে কিনছেন কেউ কেউ।

একের পর এক দোকান ঘুরে পোশাক দেখছিলেন প্রেমা দাস। কেনাকাটা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি পোশাকও পছন্দ হয়নি। পোশাকের স্টাইল অনুযায়ী দাম অনেক বেশি। আর পোশাকে নতুনত্ব নেই। সব পুরনো ধাঁচের। তারপরও পছন্দ হলে কিনবেন।

দোকানিরা জানিয়েছেন, এবার সব পোশাকের দাম কিছুটা বেড়েছে। কাতান শাড়ি আগে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৮ হাজার টাকায় পাওয়া যেত। তবে এবার কাতান বিক্রি করা হচ্ছে ৩ হাজার টাকায়। লেহেঙ্গা ২ হাজার থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকায় পাওয়া যেত। এখন ২ হাজারের লেহেঙ্গা ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। সাধারণ থ্রি-পিসগুলো ৫০০ টাকায় পাওয়া গেলেও দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায়। জরজেট থ্রি পিচ ৮০০ টাকা থেকে বেড়ে ১ হাজার ২০০ টাকা হযেছে। এগুলো ছাড়াও ছোট-বড় সবার সব পোশাকের দামই বাড়তি। বাড়তি দাম হলেও বেশি বিক্রি না হওয়ায় হতাশ বিক্রেতারা।

আলভি চয়েসের স্বত্বাধিকারী সুখী খাতুন বলেন, ‘পূজায় মেয়েরা শাড়ি আর ব্লাউজ বেশি কেনে। তবে বিক্রির পরিমাণ এবার অনেক কম। ঢাকা থেকে কিছু নতুন পোশাক এনেছি, তার মধ্যে মাত্র তিনটা বিক্রি হয়েছে। এমন চললে এবার অনেক টাকা ক্ষতি হবে।’ 

জেসমনি কালেকশনের নূর হোসেনও বললেন একই কথা। তিনি জানান, এখন সব কিছুর দাম বাড়তি। তাই পোশাকের দাম কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু বিক্রি বাড়েনি। পূজার সময় গতবার দিনে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকায় পোশাক বিক্রি করেছেন তিনি। এবার ভিন্ন চিত্র।

তিনি জানান, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তিনি মাত্র ১০ হাজার টাকার পোশাক বিক্রি করেছেন। এত কম বিক্রির কারণে কর্মচারীর বেতন আর দোকান ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ তোলাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
 

কেয়া/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়