ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

রেশনের চাল-গম কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫২, ৮ অক্টোবর ২০২২   আপডেট: ১০:৫৮, ৮ অক্টোবর ২০২২
রেশনের চাল-গম কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ

পুলিশের রেশনের চাল-গম বাজারে কেনাবেচার নিয়ম না থাকলেও কিশোরগঞ্জে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে পুলিশের রেশন কেনাবাচা হয় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ রেশনের চাল-গম কেনাবেচার কোনো সুযোগ নেই দাবি করেন। তিনি বলেছেন, অভিযাগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শুক্রবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে খাদ্য গুদাম থেকে একটি ট্রাক আট মেট্রিক টন গম নিয়ে শহরের নগুয়া-বটতলা এলাকার ফিরোজ মিয়ার দোকানের সামনে যায়। এসময় স্থানীয় লোকজনের প্রশ্নের মুখে পড়েন ট্রাক চালক। তখন পুলিশ সুপারের নামে বরাদ্দ দেওয়া খাদ্য অধিদপ্তরের একটি বরাদ্দপত্র বা ডিও দেখান চালক। এরপর পুলিশের রেশনের গম কেনাবেচার বিষয়টি জানাজানি হয়। 

চাল ব্যবসায়ী ফিরোজ মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বড় বাজারের ব্যবসায়ী জুয়েল মিয়ার কাছ থেকে এসব গম কিনে এনেছি। আমরা কাগজপত্র দেখেই চাল-গম কিনে থাকি। এটি বৈধ ব্যবসা।’ 

এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বড় বাজারের ব্যবসায়ী জুয়েল। তিনি বলেন, ‘আপনারা এসপি সাহবেকে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন। কারণ এসব তাদেরই মালামাল।’ 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জুয়েল ৫৫ মেট্রিক টন চাল-গম কিনেছেন বলে স্বীকার করেন। এর মধ্যে ৩৭ মেট্রিক টন চাল ও ১৮ মেট্রিক টন গম রয়েছে।

ট্রাক ড্রাইভার বলেন, এ গম ব্যবসায়ী জুয়েলের। সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে এসব এনেছেন তিনি। ট্রাকে করে গম এখানে আরেক ব্যবসায়ীর কাছে নিয়ে এসেছি। এছাড়া বৃহস্পতিবার রাতে আরো ১০টন গম বিসিকের একটি কারখানায় দিয়ে এসেছি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুলিশ প্রতিমাস চাল,গম, চিনি, ডাল, তেলসহ যেসব পণ্য পেয়ে থাকে, সেগুলো তাদের ভর্তুকিমূল্য দেওয়া হয়। রেশনের এসব পণ্য বাজারে বিক্রি করা অবৈধ। এসব পণ্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্য সরাসরি গ্রহণ করে থাকন।

স্থানীয়রা বলছেন, রেশনের চাল-গম বিক্রিযোগ্য  না হলেও, এগুলো ব্যবসায়ীদের হাতে গেল কীভাবে তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশের রেশনের চাল-গম কেনাবেচার কেনা বেচার কোনো সুযোগ নেই। এটি পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র হতে পারে। তাছাড়া পুলিশ সুপারের নামে বরাদ্দপত্রের কাগজটিও সঠিক কি-না তা-ও যাচাইসহ পুরো বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘জেলায় ২ হাজার ৪৪৯জন পুলিশের নামে প্রতিমাসে রেশন আসে। রেশন বিতরণসহ সব কার্যক্রম অনলাইনে হয়ে থাকে। অভিযাগ পেয়ে আমি নিজে পুলিশ লাইনন্সে গিয়ে রেশনের মজুদসহ সবকিছু পরীক্ষা করে এসেছি। তবে এখানে অন্যকিছু রয়েছে কি-না কোনো সিন্ডিকেট কাজ করছে কি-না সবই খুঁজে বের করব আমরা। পুলিশর কেউ এসবে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রুমন/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়