ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর ছবি অবমাননার মামলায় যুবক গ্রেফতার  

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৩, ১৯ অক্টোবর ২০২২   আপডেট: ১৭:৪৭, ১৯ অক্টোবর ২০২২
বঙ্গবন্ধুর ছবি অবমাননার মামলায় যুবক গ্রেফতার  

দিনাজপুরের একটি হাসপাতালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবমাননাকর ছবি ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে দিনাজপুরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হওয়া মশিউর রহমানকে (২২) কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

মশিউর ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দোগাছী গ্রামের বাসিন্দা এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ দ্য ফিউচার ফাউন্ডেশন ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সভাপতি। তিনি দিনাজপুর আদর্শ কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মশিউর রহমানের পোস্টে দেখা যায়,  এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বঙ্গবন্ধুর ছবি অবমাননা করা হয়েছে। এই পোস্টের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ওয়ার্ড মাস্টার ফারুক উল আলম ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে।

মশিউর রহমানের বন্ধু জুয়েল ইসলাম রাইজিংবিডিডটকম কে জানান, গত রোববার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে মশিউর তার এক বন্ধুর আত্মীয়কে রক্তদানের জন্য এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। রক্তদান শেষে ফেরার পথে হাসপাতালের নিচতলায় জাতির জনকের ছবিটি অবমাননাকর স্থানে ঝুলতে দেখতে পেয়ে সেটির ছবি তুলে ফেসবুকে দেন। ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘বিষয়টা খুব দুঃখজনক’।

তবে মামলায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, মশিউর নিজে বঙ্গবন্ধুর ছবিটি সেখানে রেখে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছেন। বতর্মান সরকার ও জাতির পিতার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছাড়ানোর উদ্দেশে তিনি এ ধরনের কর্মকাণ্ড করেছেন।

মশিউর রহমানের সহপাঠীরা জানিয়েছেন, মশিউর একজন রক্তদাতা ও করোনাযোদ্ধা। তিনি জেলা প্রশাসক স্বেচ্ছাসেবী টিমের সদস্য হিসেবে করোনাকালীন সময়ে কাজ করেছেন। তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি তুলে ধরতেই তিনি (মশিউর) ওই ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। নিজেদের দায় এড়াতে এখন তার বিরুদ্ধেই মামলা দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে সেভ দ্য ফিউচার ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নাজমুল বলেন, মশিউর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং গাফিলতির কথা তুলে ধরেছেন। রক্ত দেওয়ার নাম করে ডেকে সাদা পোশাকে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের দোষ ঢাকতে মশিউরের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করেছে।

সেভ দ্য ফিউচার ফাউন্ডেশন দিনাজপুরের প্রধান উপদেষ্টা হরিদাস মহন্ত বলেন, ‘মশিউরের পোস্টটি তদন্ত করে কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। জাতির পিতার ভাবমূর্তি ও সম্মান রক্ষার দায়িত্ব দেশের সব জনগণের।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. কাজী শামীম হোসাইন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর অবমাননা করলে তো আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি কোথা থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে এসে অসৎ উদ্দেশে সেখানে ছবিটি রেখেছেন এবং ফেসবুকে দিয়েছেন আমরা জানি না। যে জায়গায় ছবিটি রাখা হয়েছে ওই করিডর দিয়ে সব সময় মানুষ যাতায়াত করে। জাতির জনকের ছবিটি ওই জায়গায় থাকলে কারও চোখে পড়তো। বিষয়টি স্পর্শকাতর। বিষয়টি নিয়ে মামলা করা হয়েছে। ওই যুবক কেন সেখানে ছবিটি রেখেছেন তদন্ত সংস্থা তা বের করবে।’

কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মওলা বলেন, ‘মামলার এজাহারের ভিত্তিতে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তাকে আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

হিমেল/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়