ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ব্রিজের অভাবে ভোগান্তিতে লংগদুর হাজারো মানুষ

বিজয় ধর, রাঙামাটি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ২৯ অক্টোবর ২০২২   আপডেট: ১১:৪৭, ২৯ অক্টোবর ২০২২
ব্রিজের অভাবে ভোগান্তিতে লংগদুর হাজারো মানুষ

নৌকায় কাপ্তাই হ্রদ পার হয়ে প্রতিদিন স্কুলে যাতয়াত করেন শতাধিক শিক্ষার্থী।

রাঙামাটির লংগদুর উপজেলার বগাচতর ইউনিয়নের চারটি গ্রাম কাপ্তাই হ্রদ বেষ্টিত। ফলে ওই গ্রামগুলোর হাজারো মানুষকে নৌকা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে গ্রামবাসীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছায়। আর তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি সেতু নিমার্ণের দাবি জানিয়েছেন তারা।

সরেজমিনে বগাচতর ইউনিয়নে গিয়ে জানা গেছে, এই ইউনিয়নের মুসলিম ব্লক, অফিসটিলা, ফজলে শিবির এবং পেডানিমাছড়া গ্রামে প্রায় দুই হাজার মানুষ বসবাস করেন। চার গ্রামের দুই পাড়ে রয়েছে একটি বাজার, নুরানী মাদরাসা এবং উগলছড়ি মহাজনপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়সহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কিন্তু গ্রামগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কোনো ব্রিজ নেই। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় হ্রদ পার হয়ে প্রতিদিন স্কুল-মাদরাসায় যেতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। বছর খানেক আগে এই হ্রদে নৌকা ডুবে দুইজন শিক্ষার্থীও মারা গেছেন। 

ইউনিয়নের উগলছড়ি মহাজন পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টাম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া বলেন, ‘আমরা প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাপ্তাই হ্রদ পার হয়ে গ্রাম থেকে স্কুলে যাই। এই নদীর হ্রদের ওপর যদি ব্রিজ হয় তাহলে আমাদের জন্য খুবই সুবিধা হয়।’

একই স্কুলের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আনিকা আক্তার বলেন, ‘নৌকায় করে স্কুলে যাতায়াত করতে ভয় লাগে। অনেক অসুবিধাও হয়। একটি সেতু হলে আমরা খুবই উপকৃত হব।’

বগাচতর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘মুসলিম বøক, অফিসটিলা, ফজলে শিবির এবং পেডানিমাছড়া এই চার গ্রাম হ্রদ বেষ্টিত। ফলে এই গ্রামগুলো ইউয়নিয়ন সদর থেকে বিচ্ছিন্ন। একটি ব্রিজ না থাকার ফলে এখানকার গ্রামবাসীদের অত্যন্ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরকারের কাছে দাবি এই এলাকার মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে তারা যেন দ্রুত সময়ে মধ্যে একটি ব্রিজ নির্মাণ করে দেন।’ 

বগাচতর বাজারের ব্যবসায়ী মো. মোজাম্মেল বলেন, ‘হ্রদের ওপারে আমার বাড়ি। প্রতিদিন নৌকা দিয়ে আমাদের যাতায়াত করতে হয়। একবার নদী পার হতে সময় লাগে প্রায় ৩০ মিনিটি। বিশেষ করে রাতের বেলায় আমাদের খুব কষ্ট হয়। অনেক সময় ঘাটে নৌকা না পেলে রাত ৩টা পর্যন্ত বেজে যায় নদী পার হতে।’ 

বগাচতর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আবুল বশর বলেন, ‘এই এলাকার শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই নৌকায় করে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। এই চারটি গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে হ্রদ পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। এতে করে তাদের যাতায়াতের অসুবিধা হয়। একটি সেতু নির্মিত হলে এক গ্রামের মানুষের সাথে অন্য গ্রামের মানুষের এবং সড়ক যোগাযোগ বাড়বে। এলাকার সাধারণ মানুষ খুবই লাভবান হবেন। এলাকাবাসীর যাতায়াতের পথ সুগম করতে পার্বত্য জেলা পরিষদ  কর্তৃপক্ষের কাছে একটি সেতু  নিমার্ণের দাবি জানিয়েছি।’

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু  চৌধুরী বলেন, ‘বগাচতর ইউনিয়ন থেকে শুরু করে আরো বিভিন্ন উপজেলায় রাস্তা  এবং ব্রিজের সমস্যা রয়েছে। জেলা পরিষদের বাৎসরিক বাজেটেও আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নকে প্রধান্য দিয়ে থাকি।’ 
তিনি আরও বলেন, ‘বগাচতর ইউনিয়নের দিকে আমার বিশেষ সুদৃষ্টি থাকবে এবং আগামীতে  প্রকল্প গ্রহণ করলে ওই ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত এবং বিদ্যমান সমস্যা সমাধান করা হবে।’ 

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়