পানি সরার জায়গা নেই, ১০০ বিঘা জমির চাষ অনিশ্চিত
কাওছার আহমেদ, টাঙ্গাইল || রাইজিংবিডি.কম
পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বোরো মৌসুমে আবাদ অনিশ্চিত। ছবি: রাইজিংবিডি
টাঙ্গাইল পৌরসভার এনায়েতপুর পশ্চিম পাড়া মৌজায় বন্যার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় ১০০ বিঘা জমিতে আগামী বোরো মৌসুমে ধানের আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি সরে যেতে না পারায় গত রোপা আমন ও চলতি মৌসুমে সরিষার আবাদও করতে পারেনি অর্ধশতাধিক কৃষক। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত পাশাপাশি বিষাকে পড়েছেন চাষীরা।
স্থানীয়রা জানান, এর আগে ওই অঞ্চলের বন্যার পানি পাইপের মাধ্যমে স্থানান্তর হতো। কিন্তু গত ২৬ জুন বন্যার প্রবল পানির স্রোতে পুলিশ লাইনস-ধরেরবাড়ী সড়কের এনায়েতপুর ভাঙারপাড় এলাকায় সড়ক ভেঙে যায়। পরে টাঙ্গাইল শহরের সাথে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে। পরবর্তীতে টাঙ্গাইল পৌরসভার উদ্যোগে মাটি ভরাট করে সড়ক যোগাযোগ সচল করা হলেও কোন পাইপ বা কালভার্ট না থাকায় সড়কের উত্তর পাশের পানি সরে যেতে পারছে না। এতে গত রোপা আমন মৌসুম ও চলতি সরিষা মৌসুমে চাষাবাদ থেকে বঞ্চিত চাষিরা। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় আগামী বোরো মৌসুমেও ১০০ বিঘা জমির চাষাবাদও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, এনায়েতপুর পশ্চিম পাড়া থেকে বাঘিল ইউনিয়নের দুরিয়াবাড়ী পূর্বপাড়া পর্যন্ত এলাকায় জলাবদ্ধতা রয়েছে। পানির মধ্যে অনেকেই ক্ষেতের আগাছা পরিস্কার করছে। বন্যার পানি সরে না যাওয়ায় আমন ও সরিষার চাষ করতে পারেনি স্থানীয় কৃষকরা। ফসলি জমি পানিতে ডুবে রয়েছে।
এনায়েতপুর এলাকার চান মিয়া ও সফিজ উদ্দিন জানান, বন্যার পর বিভিন্ন অঞ্চলের পানি সরে গেলেও কোন কালভার্ট না থাকায় ওই অঞ্চলের পানি সরে যায়নি। ফলে গত বছর ওই জমিতে রোপন আমন ও সরিষার চাষ হলেও এ বছর তা আর সম্ভব হয়নি। তারা দুজনে ছয় বিঘা জমিতে আমন ধান ও সরিষার চাষ করতে পারেননি। আগামী মৌসুমে বোরো চাষ নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। স্থানীয়দের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাকোর মাধ্যমে চলাচল করতে হচ্ছে।
স্থানীয় সেচ পাম্পের মালিক আনিছুর রহমান আনিছ জানান, গত বছরও ওই অঞ্চলে আমন ধান ও সরিষার ফলনও অনেক ভালো হয়েছিলো। কিন্তু বন্যার পানির কারণে এবার তা সম্ভব হয়নি। ফলে আগামী মৌসুমে ১০০ বিঘা জমির বোরো চাষ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানানোর পরও পানি নিষ্কাশনের কোন সুরাহা হয়নি। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থার দাবি জানান তিনি।
টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর বলেন, বন্যার পানিতে সড়কটি ভাঙার পর তাৎক্ষণিক বক্স কালভার্ট বা সেতু করা সম্ভব ছিলো না। ওই স্থানের জলবদ্ধতা দূর করার জন্য ইতিমধ্যে পাক্কলন করা হয়েছে। কাউন্সিলরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ওই স্থানে বক্স কালভার্ট নির্মাণ করার জন্য। রাস্তাটি এলজিইডির হলেও পৌরবাসীর সুবিধার্থে ও জনগণের স্বার্থে এই কাজটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। জলাবদ্ধতা দূর হলে রবি ও বোরো শস্যসহ যেকোনো ফসলের চাষাবাদ করা সম্ভব হবে।
/কাওছার/সাইফ/
আরো পড়ুন