ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

নতুন ঘরে ওঠা হলো না মুক্তিযোদ্ধা হামিদ আলীর

পঞ্চগড় প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪০, ১৭ জানুয়ারি ২০২৩  
নতুন ঘরে ওঠা হলো না মুক্তিযোদ্ধা হামিদ আলীর

বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদ আলী

দেশের শীর্ষস্থানীয় ও জনপ্রিয় অনলাইন নিউজপোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকমে সংবাদ প্রকাশের পর সরকারি ঘর বরাদ্দ পেয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদ আলী। কিন্তু সেই ঘরে ওঠা হলো না তাঁর। ঘরের কাজ শেষ হওয়ার আগেই মারা গেলেন তিনি।

হামিদ আলীর বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের অধিকারীপাড়া গ্রামে। তিনি সেখানকার মৃত দারাজ আলীর ছেলে।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ভোরে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান হামিদ আলী। পরে দুপুরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। হামিদ আলী শ্বাসকষ্টসহ নানান রোগে ভুগছিলেন। 

১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে হামিদ আলী যুদ্ধে গিয়েছিলেন। ফিরে এসেছেন বিজয়ের পতাকা উড়িয়ে। কিন্তু জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে পারেননি। শেষ বয়সে পাকা ঘরে থাকার ইচ্ছে ছিলো তার। এজন্য একটি সরকারি ঘরের জন্য আকুতি জানিয়েছিলেন তিনি।

তাঁর এই আকুতির কথা তুলে ধরে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রাইজিংবিডি ডটকমে ‘দেশের জন্য যুদ্ধ শেষে একটি ঘরের আকুতি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

এই প্রতিবেদনটি নজরে আসে তৎকালীন পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফ হোসেনের। পরে ইউএনও হামিদ আলীর বাড়িতে গিয়ে সার্বিক খোঁজ খবর নিয়ে ঘর করে দেয়ার আশ্বাস দেন। আশ্বাস বাস্তবায়নও হয়েছে। পেয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ বরাদ্দের ঘর ‘বীর নিবাস’। বীর নিবাসের কাজ এখনো শেষ না হওয়ায় পুরনো টিনের ঘরে থেকে শেষ নিঃশ্বাস ছাড়তে হলো তাঁকে।

হামিদ আলীর তিন ছেলে। এর মধ্যে স্ত্রী নিলুফাসহ দুই ছেলে মানসিক রোগী। তার দেখভাল করতেন মেজ ছেলে রুবেল। স্ত্রী নিলুফা বেগম বড় ছেলে পিয়ার আলীর সঙ্গে অন্যত্র থাকেন।

হামিদ আলীর মেজ ছেলে রুবেল বলেন, ‘আব্বার ইচ্ছা ছিল শেষ সময়টা সরকরি ঘরে কাটানোর। ঘরের কাজে ধীরগতির কারণে সেই ইচ্ছা আর পূরণ হলো না। ৬ মাস আগে ঘরের কাজ শুরু করে অর্ধেক কাজ শেষ না হতেই এখন কাজ বন্ধ। কবে কাজ শেষে হবে তাও জানি না।’ 

ঘর নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অদিত এন্টারপ্রাইজের পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা সঠিকভাবে কাজের বিল পাচ্ছি না। এ জন্য অনেক কাজই আটকে আছে। দু-একটা বিল পেলেও কাজগুলো আগাতে পারতাম।’ 

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জিয়াউর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিল পাননি বিষয়টি সত্যি। আমাদের ফান্ডে সরকার থেকে এখনো টাকা না আসায় আমরাও বিল দিতে পারছি না।’
 

নাঈম/বকুল 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়