ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বড় ভাই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা, অভিযোগ ছোট ভাইয়ের

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩২, ৩০ জানুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ২০:৪৬, ৩০ জানুয়ারি ২০২৩
বড় ভাই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা, অভিযোগ ছোট ভাইয়ের

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে খেতাবপ্রাপ্ত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইসলামকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারই ছোট ভাই গোলন্দাজ মিয়া। অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তে নেমেছে প্রশাসন।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াছিন চৌধুরী বলেন, ‘তাজুল ইসলাম ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা, এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তদন্ত শেষ হলে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে।’

গোলন্দাজ মিয়া বলেন, ‘তাজুল ইসলাম আমার সহোদর বড় ভাই। ১৯৭১ সালে তিনি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। এরপর তাকে আর কেউ খুঁজে পায়নি। কিন্তু তাকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে তার ছেলে দুলাল মিয়া ভাতা উত্তোলনসহ সরকারি অনেক সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। শহীদ নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন জনকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর কথা বলে টাকাও নিয়েছে। তা নিয়ে সালিশ বৈঠকও হয়েছে। দুলালের অন্যায় অত্যাচার সইতে না পেরে বাধ্য হয়ে অভিযোগ করেছি। সঠিক তদন্ত করলেই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিষয়টি বেরিয়ে আসবে।’

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুর আলী বলেন, ‘১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে এই এলাকার যারা যুদ্ধে গেছেন তাদের সকলেই একে অপরকে চিনে। তাজুল ইসলাম যুদ্ধে গেছে বলে আমাদের মনে হয় না। বলা হচ্ছে বেলাবো যুদ্ধে তাজুল ইসলাম শহীদ হয়েছেন। কিন্তু বেলাবোতে কোনো যুদ্ধই হয়নি।’

আরেক স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘তাজুল ইসলামের নাম কীভাবে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় উঠল তা বোধগম্য নয়। যে লোক যুদ্ধেই যায়নি সে কী করে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হয়। বাস্তবে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় বেসামরিক গেজেট ছাড়া অন্য কোথাও তাজুল ইসলামের নাম নেই। আমাদের দাবি মন্ত্রণালয় বিষয়টি সঠিক তদন্ত করে তার নামে দেওয়া ভাতা বন্ধ করবে।’

অভিযুক্ত পরিবারের দাবি, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গোলন্দাজ মিয়া এসব করাচ্ছেন।

তাজুল ইসলামের ছেলে দুলাল মিয়া বলেন, ‘জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আমার বাবার নামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। যে মানুষটা দেশের জন্য রক্ত দিয়েছে তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র কোনভাবেই কাম্য নয়। আজকে যারা অভিযোগ করছেন বিগত সময়ে তারাই আমার বাবার ভাতা উত্তোলন করে খেয়েছে। যখন থেকে ভাতা খাওয়া বন্ধ হয়েছে তখন থেকেই আমার বাবা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নন বলে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করছেন।’

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন গফরগাঁও উপজেলার চাকুয়া গ্রামের তাজুল ইসলাম। পরে জানা যায়, তিনি নরসিংদীর বেলাবোতে যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছেন তাজুল ইসলামের একমাত্র ছেলে দুলাল মিয়া।

মিলন/কেআই

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়