২০০ বৈদ্যুতিক খুঁটি সরেনি, এর মধ্যে চলছে সড়ক প্রশস্তকরণ
বাদল সাহা, গোপালগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম
টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ ঘোনাপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের খুঁটি অপসারণ নিয়ে সড়ক ও বিদ্যুত বিভাগের মধ্যে চলছে রশি টানাটানি। এতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা নিয়ে দেখা দিয়েছে শংকা। এ মহাসড়কের মাঝখানে রয়েছে প্রায় ২০০ বৈদ্যুতিক খুঁটি। সব খুঁটি রেখে চলছে মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়নমূলক কাজ। এতে রাস্তা প্রশস্ত হলেও যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চালাচলে পড়তে হবে দুর্ভোগে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, বিদ্যুত বিভাগকে (ওজোপাডিকো) খুঁটি সরানোর জন্য চিঠি দেওয়া হলেও তারা খুঁটি সরানোর উদ্যোগ নিচ্ছে না। তবে বিদ্যুত বিভাগ (ওজোপাডিকো) বলছে, অর্থ বরাদ্দ না থাকার কারণে খুঁটি সরানো যাচ্ছে না। অর্থ বরাদ্দ পেলে তারা খুঁটি সরানোর কাজ করবে।
২০২৪ সালের ৩০ জুন এই মহাসড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এই মহাসড়কের কাজ শেষ হলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের উপর যানবাহনের চাপ কমবে। ঢাকার সঙ্গে খুলনার দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার কমে আসবে। এতে যানবাহনের জ্বালানি খরচ সাশ্রয়ের পাশাপাশি যাতায়াতকারীদের সময়ও কম লাগবে।
গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ-ঘোনাপাড়া ৪৪ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক ৬টি প্যাকেজে ১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুট প্রশস্ত করার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে নির্মাণ কাজের ১ বছর পেরিয়েছে। আগামী ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার তাড়া রয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের। কিন্তু, গোপালগঞ্জ অংশে ৫ ও ৬ নম্বর প্যাকেজের বর্ধিত অংশের মধ্যে রয়েছে বিদ্যুত (ওজোপাডিকোর) বিভাগের প্রায় ২০০ বৈদ্যুতিক খুঁটি। রাস্তা প্রশস্ত কাজ করতে গিয়ে এসব খুঁটি রাস্তার মাঝখানে চলে এসেছে। এসব বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণ না করেই চলছে রাস্তা প্রশস্ত করার কাজ।
রাস্তার মাঝ থেকে খুঁটি না সরানোর কারণে সঠিক মতো রোলার দিয়ে মাটি ভরাট করতে পারছে না শ্রমিকরা। এতে করে ওই স্থানে মাটি ঠিক মতো না বসার কারণে পরবর্তীতে মাটি বসে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করেন তারা। এসব খুঁটির কারণে দুর্ঘটনা বাড়বে বলে এলাকাবাসি ও যানবাহন চালকরা মনে করেন।
সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের মো: দিদার শেখ বলেন, দুর্ভোগ কমাতে টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ ঘোনাপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রশস্তকরণের কাজ চলছে। কিন্তু বিদ্যুতের খুঁটি রেখে সড়কের কাজ করা হচ্ছে। সড়কের মাঝে যদি খুঁটি থাকে তাহলে চলাচল করতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হবে।
টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ ঘোনাপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের উন্নয়ন প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যনেজার বিভূতি ভূষন ভৌমিক ও টিকাদার কামরুল ইসলাম বলেন, বৈদ্যুতিক খুঁটি না সরিয়ে কাজ করায় মাটি ঠিকমত বসানো যাচ্ছে না। কাজের পর যদি আবারও খুঁটি উঠিয়ে কাজ করা হয়, তাহলে ঠিকমত হবে না। আর এ কারণে কাজের মান ভালো হবে না এবং সময় মতো কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না।
গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদ হোসেন বলেন, সদর উপজেলার হরিদাসপুর এলাকা থেকে ঘোনাপাড়া পর্যন্ত বিদ্যুত বিভাগকে তাদের প্রায় ২০০ বৈদ্যুতিক খুঁটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হলেও তারা তা করছেন না। যে কারণে কাজের অগ্রগতি কমে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গোপালগঞ্জ ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর (ওজোপাডিকো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুতের খুঁটি সরোনোর জন্য কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। তবে প্রাক্কলিত টাকা হাতে পেলে সরানোর কাজ হাতে নেওয়া হবে।
/বকুল/
আরো পড়ুন