ঢাকা     বুধবার   ১৬ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৩১ ১৪৩১

গাজী টায়ার কারখানার আগুন 

নিখোঁজদের ছবি নিয়ে স্বজনদের আহাজারি

এমডি অনিক, নারায়ণগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪১, ২৭ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ২০:১২, ২৭ আগস্ট ২০২৪
নিখোঁজদের ছবি নিয়ে স্বজনদের আহাজারি

পুড়ে যাওয়া কারখানার বাইরে স্বজনের ছবি দেখিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এক নারী

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে টায়ার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গাজী টায়ার্স কারখানা আগুনে পুরোপুরি পুড়ে গেছে। কারখানার বাইরে জড়ো হয়েছেন নিখোঁজদের স্বজনরা। এদের অনেকে জাতীয় পরিচয় পত্রের অনুলিপি, কেউ মোবাইল ফোনে ছবি দেখিয়ে স্বজনদের খুঁজছেন। 

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকালে কারখানা ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন কিশোরী সুমাইয়া আক্তার। মা কল্পনা বেগমের গলা জড়িয়ে ধরে কাঁদছিল সে। সুমাইয়া জানায়, গত রোববার রাতে তার বাবা কারখানায় আসে। এরপর থেকে তার খোঁজ মিলছে না।

আরও পড়ুন: গাজী টায়ার্সের আগুন ৩২ ঘণ্টা পর নিভেছে, তদন্ত কমিটি গঠন

আরো পড়ুন:

সুমাইয়ার মা কল্পনা আক্তার বলেন, ‌‘আমার স্বামীর একটি জামদানি শাড়ি তৈরির কারখানা আছে। গত রোববার শ্রমিক মো. সাদ্দাম গাজী কারখানায় যান। তার খোঁজে আমার স্বামী রাতে কারখানাটিতে গিয়েছিলেন। ওই দিন রাত ১০টায় ফোনে তিনি কথা বলেন। এরপর থেকে ফোন বন্ধ। আল্লাহ জানেন তিনি বেঁচে আছেন কিনা।’

পাশেই কাঁদছিলেন কারখানার অদূরে কলাবাগ এলাকার বাসিন্দা মনি আক্তার। তিনি জানান, তার স্বামী মো. রাশেদ রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কারখানায় গিয়েছিলেন তিনি। তার সঙ্গে ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা ছিলেন। রাতে রাশেদ বাসায় ফেরেননি। মোবাইল ফোনে কল দিলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে। 

আহজারি করে মনি বলেন, ‘সারা রাত ধরে স্বামীকে খুঁজতেছি। পাইনি। যার সঙ্গে সে এখানে আসছিল তারে আমি চিনি না। আমি এখন কী করমু?’

এদিকে, মঙ্গলবার ভোরেও কারখানার ভেতর থেকে পুড়ে যাওয়া জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছেন শতাধিক মানুষ বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। 

ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আনোয়ারুল হক জানান, আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবনটির ৬ তলার ছাদে উঠেছিলেন তারা। সেখানে হতাহত কাউকে পাওয়া যায়নি।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, পুরো কারখানা ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। ৫ ও ৬ তলা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কারখানার ৪, ৫ ও ৬ তলা ধসে যেতে পারে যেকোনো সময়। পুড়ে যাওয়া ভবনের ছাদ থেকে লোহা, ইট ও বালিসহ ছাদের ঢালাই খুলে পড়ছে। 

এদিকে, আজ সকালে ঘটনাস্থলে সিআইডির একটি তদন্ত দল আসে। তবে ঝুঁকির কারণে তাদের ভেতরে ঢুকতে দেয়নি ফায়ার সার্ভিস। প্রচণ্ড গরমের কারণে তারা ভবনের বাইরে থেকে চারপাশ ঘুরে দেখছেন। 

প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, গত রোববার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ উপজেলার রুপসী খাদুন এলাকায় গাজী টায়ারের কারখানায় আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এর আগে, তারা বিকেল থেকেই কারখানাটিতে লুটপাট করতে থাকে। আগুন দেওয়ার খবর পয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট রোববার রাত থেকে গতকাল সোমবার রাত পৌঁনে ৮টা পর্যন্ত প্রায় ২১ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আজ মঙ্গলবার ভোরে আগুন পুরোপুরি নেভাতে সক্ষম হন তারা।

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়