ঢাকা     মঙ্গলবার   ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ২৫ ১৪৩১

ফরিদপুরে মরিচের সরবরাহ কম, কেজি ৫০০ টাকা

তামিম ইসলাম, ফরিদপুর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪৭, ১০ অক্টোবর ২০২৪   আপডেট: ১৮:০১, ১০ অক্টোবর ২০২৪
ফরিদপুরে মরিচের সরবরাহ কম, কেজি ৫০০ টাকা

ফরিদপুরে টানা বৃষ্টিতে মরিচের ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। এতে জেলার বিভিন্ন খুচরা বাজারে ৪৮০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে।

জেলা কৃষি অফিস বলছে, কাঁচা মরিচ চাষের এখন মৌসুম না হওয়ায় বাজারে মরিচের সরবরাহ কম। এরপর গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে মরিচ ক্ষেতে ক্ষতির কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় বাজারে সরবরাহ কম এবং আমদানি বন্ধ থাকায় বাজারে দাম বেড়েছে। 

ফরিদপুর শহরের হাজী শরিয়ত উল্লাহ বাজারের ব্যবসায়ী চুন্নু মণ্ডল জানান, স্থানীয় তাম্বুলখানা বাজারে মরিচ ৪৫০ টাকা কেজি পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। বাজারে মরিচের সরবরাহ কম তাই দাম বেড়েছে।

আরো পড়ুন:

ব্যবসায়ী সোহেল রানা জানান, বাজারে মরিচের সরবরাহ তুলনামূলক অনেক কম, তাই দামও বেড়েছে। বর্তমান বাজারে পাইকারি দর কেজি প্রতি ৪৫০ টাকা।

শহরের অম্বিকাপুর বাজারে খুচরা ব্যবসায়ী আবুল শেখ জানান, এক কেজি খুচরা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা দরে। সকালে আড়ত থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে মরিচ কিনে বাজারে ১২০ টাকা পোয়া করে বিক্রি করছেন।

ক্রেতারা জানান, এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। অন্যান্য জিনিসপত্রের সঙ্গে কাঁচা মরিচের দাম এভাবে বাড়লে সংসার চালাবে কীভাবে? রান্না করতে তো মরিচ লাগবেই। তবে ক্রেতারা বলছেন, বাজারে সুষ্ঠু তদারকির অভাবে দাম বাড়ছে। 

ক্রেতারা আরও জানান, গত সপ্তাহে মরিচের দাম কম ছিল। এক সপ্তাহে দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এটা কীভাবে হয়? দাম বাড়বে মানে যদি সেটা দ্বিগুণ হয়, তাহলে বুঝতে হবে সিন্ডিকেটের কারণে এটা হয়েছে।

এদিকে, ফরিদপুর জেলার মধ্যে মরিচ উৎপাদনে বিখ্যাত মধুখালী উপজেলা। মধুখালী কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ২ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচ আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ২০ হেক্টর বেশি।

এ ব্যপারে মধুখালী উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, মধুখালী উপজেলায় যে মরিচ চাষ হয়, তা এক মৌসুমী মসলা জাতীয় ফসল। এখন মরিচের মৌসুম প্রায় শেষ। কৃষকেরা এখন মরিচ খেতে কুমড়া, শষা চাষ করছেন। এ এলাকা উচু হওয়ায় কৃষকরা মরিচ চাষ করে থাকে। জৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে এর ফলন পাওয়া যায়। বর্ষা মৌসুমে এর ভালো ফলন পাওয়া গেলেও এ বছর ফলন ভালো হয়নি।

মধুখালী উপজেলার মরিচ চাষি শিলা রায় জানান, এ বছর মরিচ চাষ করে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। প্রথমে খরায় গাছের ক্ষতি, তারপরে বৃষ্টিতে ফলনের ক্ষতি। ক্ষেতে এখন মরিচ নেই। মরিচের ক্ষেতে কুমড়ার চাষ করেছেন।

মধুখালী বাজারের পাইকার ব্যবসায়ী আলম শেখ জানান, বাজারে এখন মরিচ নেই বললেই চলে। এখন যে মরিচ আসছে, তা ঝিনাইদহ, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা এলাকার। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) মধুখালী বাজারে পাইকারি ৪৫০-৪৮০ টাকা কেজি দরে মরিচ কিনেছেন। 

এ ব্যপারে ফরিদপুর জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সোহেল শেখ বলেন, ‘বেশ কয়েক দিন ধরে ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। তবে বাজারে কাঁচা মরিচের অস্বাভাবিক দাম নিয়ন্ত্রণে কাল থেকে নিয়মিত মনিটরিং শুরু করা হবে।’

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, এখন কাঁচা মরিচের মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। এবার ফলন কম এজন্য বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহও কম। ক্ষেতে যে মরিচ আছে, তা গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার কারণে বাজারে মরিচের দাম বেড়েছে।
 

তামিম/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়