ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ফল রক্ষায় পাখি হত্যার ফাঁদ

ইমরান হোসেন, বরগুনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫৪, ১১ জুন ২০২২  
ফল রক্ষায় পাখি হত্যার ফাঁদ

বরগুনা সদরের কড়ইতলা গ্রামে লিচু জামসহ বিভিন্ন ফল পাখির হাত থেকে রক্ষা করতে ফাঁদ পেতে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে কয়েক প্রজাতির শত শত পাখি। প্রকৃতিপ্রেমীরা বলছেন, ফল রক্ষায় প্রাণী হত্যা মারাত্মক অপরাধ। এভাবে পাখি হত্যা করতে থাকলে, পাখিশূন্য হবে পুরো বরগুনা। পাখি হত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেন জেলা প্রশাসন।

বরগুনার সদর উপজেলার ৮ নং বরগুনা সদর ইউনিয়নের কড়ইতলা গ্রামে শুক্রবার (১০ জুন) সকাল ১০টায় সরেজমিনে দেখা যায়, আহসান হাবির দেড় একর জমির আম, জাম ও লিচুর বাগান করেছেন। এই বাগানে ঝাঁকে ঝাঁকে শালিক বুলবুলিসহ নানা প্রজাতির পাখি ভিড় করছে। পাখির হাত থেকে ফল রক্ষার জন্য ফলগাছ জাল ও নেট দিলে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এতে জালে ফল খেতে আসা পাখিগুলো মারা পড়ছে। পাখির মধ্যে শালিক ও বুলবুলির সংখ্যা বেশি। 

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দারা জানান, প্রতি বছর বাগানের ফল পাখির হাত থেকে রক্ষার জন্য এভাবে জাল ও নেট দিয়ে বেড়া দিয়ে থাকেন। এতে বিভিন্ন ধরনের পাখি আটকা পড়ে মারা যায়। আবার ভয় দেখানোর জন্য মৃত পাখি লাঠির মাথা বেঁধে ঝুলিয়েও রাখা হয়েছে।
 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আহসান হাবিব এক সময় কোরিয়াপ্রবাসী ছিলেন। ২০০৮ সালে তিনি বাড়ির পাশে দেড় একর জমিতে বিভিন্ন ফলের বাগান গড়ে তোলেন। এই বাগানে ৪০টি জাম, ৭০টি আম, ৪০টি লিচু গাছ রয়েছে। মাঝেমধ্যে বাগানে পাখি ঢুকে ফলসহ বিভিন্ন পোকামাকড় খেয়ে থাকে। এসব গাছের ফল রক্ষায় বাগানমালিক ফাঁদ পেতে পাখি হত্যা করে।

বাগানমালিক আহসান হাবিবের কাছে পাখি হত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, বাগানের ফল  রক্ষার জন্য জাল দেওয়া হয়েছে। এরপরও পাখি ফল নষ্ট করছে। আমি কোনও পাখি হত্যা করিনি। পাখি জালে আটকা পড়লে ছোট ছোট শিশুরা ধরে নিয়ে যায়।

প্রকৃতিপ্রেমী আরিফ হোসেন ফসল রাইজিংবিডিকে বলেন, এসব পাখি ফল বাগানসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে থাকে। এতে আমরা উপকৃত হই। ফলবাগানটি আমি ঘুরে দেখেছি, যেভাবে পাখি হত্যা করা হচ্ছে এটা মারাত্মক অন্যায়। এতে প্রকৃতি ভারসাম্য হারাবে। 

উপকূলীয় বন কর্মকর্তা ও উপকূলীয় বন বিভাগ পটুয়াখালী কর্মকর্তা আবদুল্লা আল মামুন মুঠোফোনে রাইজিংবিডিকে বলেন, বন্যপ্রাণী আইনে ফাঁদ পেতে কোনও প্রাণী হত্যা আইনত অপরাধ। পাখি হত্যার এই বিষয়টি জানা ছিল না। স্থানীয় বন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে প্রশাসনের সহায়তায় অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা হবে।

বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাওসার হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, এ বিষয়ে কোনও তথ্য ছিল না। দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই ফল বাগানে অভিযান চালিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়