ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

পদ্মা সেতু চালু হলে খুলে যাবে দক্ষিণের মৎস্যজীবীদের ভাগ্যের চাকা

বরগুনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৩, ১২ জুন ২০২২  
পদ্মা সেতু চালু হলে খুলে যাবে দক্ষিণের মৎস্যজীবীদের ভাগ্যের চাকা

স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের অপেক্ষায় দেশের দক্ষিণ প্রান্ত বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষা জেলা বরগুনার মানুষ। মৎস্যজীবীরা বলছেন পদ্মা সেতু খুলে দেওয়া হলে ঘুরে যাবে এই উপকূলের মানুষের ভাগ্যের চাকা।  ঢাকাসহ সারাদেশে কম সময়ে তাজা সব মাছ সরবরাহ করা সম্ভব হবে। 

বরগুনার পাথরঘাটার মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) দেশের ২য় সর্ববৃহৎ মৎস্য অবতরণকেন্দ্র। আড়ৎদার-পাইকাররা এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে মাওয়া পার হয়ে ঢাকাসহ দেশের ৪০টি জেলায় ইলিশসহ বিভিন্ন মাছ সরবরাহ করেন।  

পাথরঘাটা মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের আড়ৎদার সেভেন স্টার ফিশের মালিক মো. কামাল হোসেন বলেন, ১৯৯৮ সালে পাথরঘাটার মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনে ব্যবসা করি আমি। যে টাকা দিয়ে মাছ জেলেদের থেকে কিনে থাকি, ঢাকা মাছ পাঠাতে প্যাকেটিং, বরফ ও পরিবহনে প্রায় সমপরিমান টাকা খরচ হয়। মাছ নিয়ে যাওয়ার সময় মাওয়া ঘাটে ফেরির সিরিয়াল ধরার জন্য ১০-১৫ হাজার টাকা দিতে হয়। এর পুরো প্রভাবটা পড়ে মাছের উপরে। এ কারণে মাছের দাম বেশি থাকে সারা বছর। 

তিনি বলেন, এবার আমাদের সেই সমস্যার সমাধান হতে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর আমাদের আর ঘাটের চাঁদার টাকা দিতে হবে না। সারাদেশের পাইকারদের কাছে কম দামে মাছ বিক্রি করতে পারবো আমরা। প্যাকেটিং ও পরিবহন খরচ কমলে কম টাকায় মাছ বিক্রি করা সম্ভব হবে।

মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের পাইকার আবুল কালাম আজাদ বলেন, পদ্মা ফেরি পার হতে ২ থেকে ৩ দিন সময় লাগার কারণে মাছের গুনগতমান কমে যায়। সেতু চালু হলে ৬ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছে যাবে মাছ। কমবে পরিবহন খরচ। সকালের ঢাকার বাজারে তাজা মাছ বিক্রি করা যাবে। কম টাকায় মাছ বিক্রি করলে একদিকে যেমন মাছের চাহিদা বাড়বে, তেমনি সারাদেশের হতদরিদ্র মানুষও কম দামে মাছ কিনে খেতে পারবে।

বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, এখন পাথরঘাটার মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনে মাছ কিনতে আসা বেশিরভাগ পাইকার উত্তর অঞ্চলের। মাওয়া ফেরির কারণে ঢাকার পাইকার ও বড় বড় ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রাম থেকে মাছ ক্রয় করে। কিন্তু পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগেই ঢাকার বড় মৎস্য ব্যবসায়ীরা আমাদের সাথে মাছ কেনার চুক্তি করতে যোগাযোগ শুরু করেছে।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন পাথরঘাটা’র ব্যবস্থাপক লে. মো. লুৎফর রহমান (বিএন) বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকার কারণে বরগুনার অনেক ট্রলার চট্টগ্রাম/খুলনা অঞ্চলে গিয়ে মাছ বিক্রি করতো। কিন্তু পদ্মা সেতু চালু হলে চট্টগ্রাম, বাগেরহাট, পটুয়াখালী ও নোয়াখালীর জেলেরাও মাছ শিকার শেষে পাথরঘাটা অবতরণ কেন্দ্রে এসে মাছ বিক্রি করবে। এতে বিপুল পরিমানে অর্থ রাজস্ব পাবে সরকার।

বরগুনায় দেড় লাখ জেলেসহ মৎস্য’র উপর নির্ভরশীল প্রায়  ৬ লাখ মানুষ। মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনে বিক্রি হওয়া প্রতি ১শ টাকার মাছ থেকে ১টাকা রাজস্ব পায় সরকার।

ইমরান/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়