ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ফখরুলের মুক্তি দাবি

দেশকে সংঘাতে ঠেলে দিবেন না : খালেদা জিয়া

সেন্ট্রাল ডেস্ক: || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ১১ ডিসেম্বর ২০১২   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দেশকে সংঘাতে ঠেলে দিবেন না : খালেদা জিয়া

 

 

 

 

 

 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গ্রেফতারের পর বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে তার মুক্তি দাবি করেছেন।

দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সোমবার সন্ধ্যায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে আবারও মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

আমার সঙ্গে বাংলাদেশে সফররত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊধ্র্বতন কর্মকর্তা রবার্ট ও ব্লেকের পূর্ব নির্ধারিত বৈঠকে যোগদানের উদ্দেশে রওয়ানা দেওয়ার প্রাক্কালে তাকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

আমাদের পার্টির অন্যতম যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদকেও একই মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। আমি এ ধরনের ঘৃণ্য কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে মির্জা আলমগীরের নিঃশর্ত মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

দেশ পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ সরকার গণতন্ত্রের নাম-নিশানা মুছে ফেলতে বর্তমানে নগ্ন ফ্যাসিবাদী চেহারায় আবির্ভূত হয়েছে। গণবিচ্ছিন্ন এই সরকার খুন, গুম, হামলা, জুলুম, নির্যাতন, চক্রান্ত, গ্রেফতার ও মিথ্যাচারের মাধ্যমে বিরোধীদলকে নিশ্চিহ্ন, ভিন্নমত দমন এবং দেশবাসীকে ভয় দেখিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে।

শেয়ারবাজার ও ব্যাংকের অর্থ, রাষ্ট্রীয় তহবিল ও জনগণের সম্পদ তারা লুণ্ঠন করছে। জাতীয় সংসদ ও বিচার বিভাগসহ সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ ও অকার্যকর করে ফেলেছে। প্রজাতন্ত্রের সংবিধান স্বেচ্ছাচারী কায়দায় তছনছ করে ডেকে এনেছে সংকট ও চরম শাসনতান্ত্রিক নৈরাজ্য।

দেশের সচেতন ও বিবেকবান সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এই সরকারের চরম ব্যর্থতা, অপশাসন এবং শাসকদলের সীমাহীন অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় থেকে একটি কারচুপির নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার অসদুদ্দেশ্যে নির্বাচনকালীন নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়েছে।

বিরোধীদল যখন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের ভোটাধিকার রক্ষায় আন্দোলনের সূচনা করেছে, তখন স্বৈরাচারী ভূমিকায় আবির্ভূত হয়ে সরকার মিথ্যাচার, ষড়যন্ত্র ও চরম দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। বিরোধীদলের নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে তারা কেবল প্রশাসনিক প্রতিবন্ধকতাই আরোপ করছে না, দলীয় সন্ত্রাসীদের নামিয়ে সশস্ত্র হামলাও চালাচ্ছে। কেবল বিরোধী দল নয়, সাধারণ মানুষের ওপরেও তারা আক্রমণ চালাচ্ছে।

আমাদের ডাকা রাজপথ অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে গতকাল রোববার রাজপথে অবস্থানরত বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ওপর তারা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। প্রকাশ্যে জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে।

রাজধানী ঢাকায় গাবতলীতে তারা হামলা করেছে। আমাদের দলের প্রাক্তন এমপি নাজিমুদ্দিন আলম তাদের গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। তারা আইনজীবীদের ওপর হামলা করেছে। সারাবিশ্ব দেখেছে, সরকারি দলের হিংস্র সন্ত্রাসীরা কি নৃশংসভাবে বিশ্বজিত নামের কর্মজীবী এক তরুণকে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছত্রছায়ায় এইসব পৈশাচিক ঘটনা ঘটলেও এই সন্ত্রাসীদের কাউকে বাধা দেয়া হয়নি, গ্রেফতার করা হয়নি, এমনকি তাদের বিরুদ্ধে মামলা পর্যন্ত করা হয়নি। অথচ বিরোধীদলের শত শত নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে আটক ও নির্যাতন করা হচ্ছে। একটি সভ্য দেশে এমন দ্বৈত ব্যবস্থা চলতে পারে না। আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, জুলুম-পীড়ন করে জনগণের ন্যায্য অধিকার ও দাবিকে কখনো নস্যাৎ করা যায় না। আমি সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে দেশকে ঠেলে না দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রিয় দেশবাসীর প্রতি আমার আহ্বান, অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবার ন্যায়-সঙ্গত অধিকার আপনাদের আছে। তাই সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে এবং নিজেদের অধিকার আদায় করতে এই বিজয়ের মাসে সোচ্চার হোন। আগামীকাল সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালনের মাধ্যমে জনগণের আন্দোলনকে পরবর্তী ধাপে উন্নীত করুন।  ইনশাআল্লাহ্ নিপীড়িত জনগণের বিজয় অনিবার্য এবং অতি নিকটবর্তী।

পরম করুণাময় আল্লাহ আমাদের সকলের সহায় হোন।’

 

 

 

 

 

 

 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়