ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

থ্রিজির প্রস্তুতি নিচ্ছে গ্রামীণফোন

|| রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৪৫, ১২ ডিসেম্বর ২০১২   আপডেট: ০৮:৪৫, ১১ আগস্ট ২০২০
থ্রিজির প্রস্তুতি নিচ্ছে গ্রামীণফোন

এক বছরের বেশি সময় ধরে নেটওয়ার্কের গুণগত মান বৃদ্ধির (সোয়াপ) মাধ্যমে তৃতীয় প্রজন্মের (থ্রিজি) সেবার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করেছে দেশের শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন। এখন লাইসেন্স পেলে সফটওয়্যারের কিছু পরিবর্তন এবং বেজ স্টেশনগুলোয় বিশেষায়িত একটি কার্ড স্থাপনের মাধ্যমে থ্রিজি সেবা দিতে পারবে এ অপারেটর। এ জন্য খুব বেশি সময় লাগবে না।

ইতিমধ্যে ৮ হাজার ২৯টি বিটিএসের সবগুলোতে এ প্রস্তুতি শেষ করেছে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ। এর পরেও রাজধানীসহ বড় শহরগুলোতে প্রথম দফায় থ্রিজি দেওয়ার পর পরিকল্পনা তাদের। পরে পর্যায়ক্রমে জেলা-উপজেলা ও গ্রোথ সেন্টারে নতুন প্রযুক্তির এ সেবা দেবে তারা। তাছাড়া বড় শহরগুলোর কোন এলাকায় কী পরিমাণ ব্যান্ডউইথের সেবা দেওয়া সম্ভব হবে, তার ছকও তৈরি করেছে অপারেটরটি।

দেশে বর্তমানে থ্রিজি সেবা দিচ্ছে শুধু রাষ্ট্রায়ত্ব টেলিটক। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি আরও চার কোম্পানিকে নতুন এ প্রযুক্তি চালু করতে লাইসেন্স দেবে। এর মধ্যে বর্তমানে চালু বেসরকারি পাঁচ কোম্পানির মধ্য থেকে নিলামের মাধ্যমে তিনটি এবং নতুন একটি কোম্পানিকে দেশে থ্রিজি চালুর অনুমোদন দেওয়া হবে। আগামী বছরের মাঝামাঝিতে যাতে বেসরকারি অপারেটররা থ্রিজি চালু শুরুতে পারে সেজন্য বছরের শুরুতে লাইসেন্স দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিটিআরসির।

গ্রামীণফোনের চিফ টেকনিক্যল অফিসার (সিটিও) তানভীর মোহাম্মদ দেশে থ্রিজি চালু করতে তাদের এসব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। তিনি  বলেন, এর মধ্যে গ্রামীণফোন বিটিআরসির কাছে পরীক্ষামূলক ব্যবহারের জন্য থ্রিজির স্পেকট্রাম চেয়েছিল। বিটিআরসি সেটি না দিলেও তারা প্রস্তুতি এগিয়ে রাখছেন।একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত থ্রিজির

পরিকল্পনা সাজিয়েছেন তারা। তিনি বলেন, সোয়াপের মাধ্যমে এমনভাবে কাজ করা হয়েছে, যাতে থ্রিজির পর আরও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এলে সেটি গ্রহণ করতেও তাদের কোনো সমস্যা হবে না।

গত বছরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে নিজেদের নেটওয়ার্ক সোয়াপ করে গ্রামীণফোন। এর ফলে তাদের সেবায় গুণগত পরিবর্তন এসেছে। গ্রামীণফোন জানায়, সোয়াপের আগে ঢাকা শহরে গড়ে প্রতি ২শ’ মিনিটে একটি কল ড্রপ হতো। এখন ২৫১ মিনিটে একটি কল ড্রপ হয়। একই সঙ্গে সারাদেশে অন্য তিনটি অপারেটরের সঙ্গে তুলনামূলক আলোচনায় নেটওয়ার্কের কার্যক্ষমতা গ্রামীণফোনের অনেক বেশি বলেও বলা হয়েছে। তবে অপর তিন অপারেটরের নাম উল্লেখ করেনি তারা। গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক সক্ষমতা বর্তমানে ৯৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ। গ্রামীণফোন বলছে, নিজেদের নেটওয়ার্কের শক্তি পরিমাপের পাশাপাশি ড্রাইভ টেস্টের মাধ্যমে তারা প্রতিদ্বন্দ্বী অপারেটরদের ক্ষমতাও পরিমাপ করে। সেখানে একটি অপারেটরের নেটওয়ার্ক ক্ষমতা ৯৭ দশমিক ২৩ শতাংশ। এটি গ্রামীণফোনের সবচেয়ে কাছাকাছি। পরের দুটি ৯৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ ও ৮৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। ২০১২ সালে সারাদেশের সব উপজেলা মিলিয়ে তারা গাড়িতে ৫০ হাজার কিলোমিটার ড্রাইভ টেস্ট নিয়েছে। আগামী বছর তাদের ৭০ হাজার কিলোমিটার ড্রাইভ টেস্ট নেওয়ার পরিকল্পনা আছে বলেও জানান গ্রামীণফোনের সিটিও।

এখনও গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্কে যা কিছু সমস্যা রয়েছে, তাতে সিলেট এবং চট্টগ্রামের গ্রাহকদেরই বেশি ভুগতে হয়। তবে এর পরিমাণ উল্লেখ করেননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের অপর এক কর্মকর্তা বলেন, এ দুটি এলাকায় অনেক হাওর-বাঁওড়, পাহাড়, খালি জায়গা থাকায় তাদের পক্ষে সব জায়গা কাভার করা সম্ভব হয়নি। সে কারণে কিছুটা সমস্যা হয়।

সোয়াপের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করায় তাদের বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিমাণও আগের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে দাবি করেন তানভীর। আগে সব বিটিএসে একটি করে এয়ারকন্ডিশনার থাকলেও এখন সব এয়ারকন্ডিশনার খুলে ফেলা হয়েছে। গ্রামীণফোন বলছে, এক সময় নেটওয়ার্কের বিস্তৃতির মাধ্যমে অন্যদের সঙ্গে পার্থক্য তৈরি করত তারা। আর এখন পার্থক্য তৈরি করে গুণগত মানের মাধ্যমে। বর্তমানে তাদের মোট বিটিএসের অর্ধেকটাই প্রতিদ্বন্দ্ব্বীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করছেন বলেও জানান তিনি।

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়