ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

জাতির মেধাবী সন্তানদের ফুলেল শ্রদ্ধা

সেন্ট্রাল ডেস্ক: || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৪৯, ১৫ ডিসেম্বর ২০১২   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জাতির মেধাবী সন্তানদের ফুলেল শ্রদ্ধা

বাংলার বিজয়ের ঊষালগ্নে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের দোসরদের সহায়তায় এ দেশের যে মেধাবী সন্তানদের হত্যা করেছিল, সেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছে দেশবাসী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া সকালে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল,সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষের ফুলে ফুলে ভরে উঠে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদিও।

নানা বয়সের হাজারো মানুষ জড়ো হন মিরপুর আর রায়েরবাজার স্মৃতিসৌধে।তাদের হাতে ফুল,কণ্ঠে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি।

১৯৭১সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক,চিকিৎসক,শিল্পী,লেখক, সাংবাদিকসহ বহু খ্যাতিমান বাঙালিকে হত্যা করে।এই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে রাজাকার,আলবদর ও আল শামস বাহিনীর সদস্যরা।

পরে শরীরে নিষ্ঠুর নির্যাতনের চিহ্নসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের লাশ পাওয়া যায় মিরপুর ও রায়েরবাজার এলাকায়।পরে তা বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে।

বলা হয়,পরাজয় নিশ্চিত জেনেই পাকিস্তানি বাহিনী এ কাজটি করে,যার উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের পুনর্গঠন বাধাগ্রস্ত করা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ৮টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে সেই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।এ সময় বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর।

মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও সংসদ সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর পর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার আব্দুল হামিদ।

এরপর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আবারো ফুল দেন শেখ হাসিনা।

শহীদ বেদীতে ফুল দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলেন।এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানান।প্রধানমন্ত্রী তাদের সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন।

প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পরপরই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

এরপর স্মৃতিসৌধ সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য খুলে দেয়া হয়।স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে জনতার ঢল নামে।বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ছাড়াও সর্বস্তরের মানুষ শহীদ বেদীতে দিয়ে যায় শ্রদ্ধার ফুল।

বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ,রফিকুল ইসলাম মিয়া,নজরুল ইসলাম খান ও ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।

সকাল থেকে মানুষের ঢল নামে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধেও।সকালে সেখানে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের পক্ষে ফুল দেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন,বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী দেশকে ‘গৃহযুদ্ধের দিকে’ নিয়ে ‘একাত্তরের মতো যুদ্ধ বাঁধানোর’ পরিকল্পনা করছে বলে সরকারের কাছে খবর আছে।

চলতি মাসেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি মামলার রায় আসতে পারে বলেও জানান তিনি।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে দেয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো.জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শ্রদ্ধায় শহীদ সন্তানদের স্মরণ করেন।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন,জাতির সূর্য সন্তান বুদ্ধিজীবীরা দেশের বিভিন্ন সঙ্কটে জাতিকে বুদ্ধি ও পরামর্শ দিয়ে কাণ্ডারির ভূমিকা পালন করেন।তাদের সৃজনশীলতা ও অসা¤প্রদায়িক চিন্তা-চেতনা আমাদেরকে দৃপ্ত প্রত্যয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখায়।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে নতুন প্রজন্ম একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে এগিয়ে আসবে বলে আশা করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন,এই পরিকল্পিত নৃশংস হত্যাযজ্ঞের উদ্দেশ্য ছিল বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করা।

“স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের জন্ম দেয়।সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দেয়।খুন-হত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতন চালায়। তাদের এ অপকর্ম আজো থেমে নেই।”

চলমান যুদ্ধাপরাধের বিচারের কথা তুলে ধরে তা বানচালে যে কোনো ষড়যন্ত্র রুখতে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল,সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করে।এর মধ্যে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ,আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়