ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সীমাবদ্ধতার পরও নতুন কিছু করতে চান তিতুমীর কলেজ অধ্যক্ষ

নাজমুল হুদা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২৬, ১ জানুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সীমাবদ্ধতার পরও নতুন কিছু করতে চান তিতুমীর কলেজ অধ্যক্ষ

সীমাবদ্ধতার কমতি নেই। ঘাটতি নেই চেষ্টায়। গুণগত শিক্ষার মানকে বাড়িয়ে দিতে সব ধরনের চেষ্টা করছে প্রশাসন। সর্বাধিক শিক্ষার্থী খ্যাত রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের চাহিদা অনুযায়ী অবকাঠামো গত সুযোগ সুবিধা যে নেই, তার দায় এড়াতে পারেননি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আশরাফ হোসেন। তাইতো দায় গুলোকে মাথায় নিয়েই নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টায় নতুন বছরে নতুন কিছু কর‍তে চান তিনি। 

নতুন বছরে কলেজের সাংবাদিক সমিতির সাথে সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ বলেন, "আমাদের গুণগত শিক্ষা আসল উদ্দেশ্য। শিক্ষার্থী অনুযায়ী আমাদের যে অবকাঠামো সুযোগ-সুবিধা দরকার তা আমাদের নেই। পর্যাপ্ত ক্লাসরুমও নেই। আর এর ভিতরে পরীক্ষা তো লেগেই আছে। পরীক্ষার সময় গুলোতে আমরা ঠিকমতো ক্লাস নিতে পারি না। এটা আমাদের অনেক বড় একটা সমস্যা। এছাড়াও আমাদের প্রয়োজনীয় শিক্ষকের অভাব তো আছেই।" 

তবে নতুন বছরে বেশ কিছু সুখবর দিয়েছেন কলেজটির অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, আমাদের নির্মাণাধীন দশতলা দুইটি একাডেমিক ভবন এর কাজ খুব দ্রুত শেষ হবে। যার ফলে চলমান ক্লাসরুম সংকট অনেকটাই কেটে যাবে। আর শিক্ষক এর ব্যাপারে বলব আমাদের এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত হওয়ার পরে আমাদের এখানে তারা প্রতি বিভাগে একজন করে শিক্ষক দেওয়ার কথা বলেছিল। শিক্ষক সংকট দূর করার জন্য বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার তালিকায় সাড়ে ১২ হাজার পোস্ট দিয়েছে। পোস্ট রিজন সাড়ে ১২ হাজার পদ তৈরীর কাজ চলছে। বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর প্রচেষ্টায় এ কাজ অনেক দ্রুত চলছে। আর এর বাস্তবায়ন হলে শিক্ষক সংকট দূর হবে বলে আশা করি।

ভবন গুলোর কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন, ভবন গুলোর কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে এবং কখন থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারবে তা নির্দিষ্ট ভাবে বলা যাচ্ছে না তবে আমাদের কাজ চলছে এবং আশা করি বছরখানেকের মধ্যেই শিক্ষার্থীরা ভবনগুলোতে ক্লাস করতে পারবে।

বিগত বছরের প্রাপ্তি নিয়ে জানতে চাওয়ায় তিনি বলেন, ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ৭ কলেজের মধ্যে আমাদের ফলাফল বেশ ভালো। এছাড়াও দশ তলা ভবন আমাদের জন্য অনেক বড় কিছু। সেই সঙ্গে বিজ্ঞান ভবনে ছাদ বেয়ে পানি পড়ার মত নাজুক অবস্থা এখন আর নেই। গত ৫-৬ মাস আগে শিক্ষা মন্ত্রী এখানে এসেছিলেন। এই ভবনটি দেখে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে এর সংস্কারের জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী কে নির্দেশ দেন এবং তিনি অনেক দ্রুততার সাথে সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করেন। যেটা আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। আগামীতে ৫ মাসের মধ্যে মাস্টার ভবনের সংস্কার কাজ চলবে।

এছাড়াও তিনি আরও বলেন, আমরা সচিবের কাছে বিভিন্ন আবদার করেছিলাম। তিনি পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং তার নির্দেশ অনুযায়ী কলেজের বিভিন্ন কাজ অনেক দ্রুত শুরু হবে এবং অলরেডি সেন্ট্রাল এসির কাজ এবং অডিটোরিয়াম সংস্করনের কাজ শুরু হয়ে গেছে। আমাদের পরিকল্পনা আছে আমরা কোন একজন মন্ত্রীকে দিয়ে আমাদের কলেজের যে ব্রেস্টফিডিং টা নির্মাণ করা হয়েছে সেটির উদ্বোধন করাবো। শিক্ষা মন্ত্রী কিংবা সমাজকল্যাণমন্ত্রী দিয়ে উদ্বোধন করানোর পরিকল্পনা আছে। মোটামুটি মাসখানেক এরমধ্যে এটা শেষ করবো। নতুন বছরে মাননীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম গত সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বলে গেছেন তিতুমীর কলেজ সংস্করণে কলেজ প্রশাসন উদ্যোগ নিলে সরকার সহায়তা করবে। আমরা তার সাথে বসবো এবং আশা করি ইতিবাচক ফল পাব। আমরা সেই আশাতেই বুক বেঁধে আছি।

অবকাঠামোগত প্রতিকূলতা ছাপিয়ে বরাবরের মত রয়েছে যাতায়াত সমস্যা। শিক্ষার্থীদের পরিবহন সংকট নিরসনে অধ্যক্ষ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে একটা বাস আমরা পেয়েছি। তবে পাওয়ার ভাগ্য প্রসন্ন থাকলে নতুন বছরে আরো দুই একটা বাস পেতে পারি। আমরা কিছুদিন আগে সচিবের সাথে দেখা করেছি নতুন বাস কেনার জন্য। আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে আমরা বাস কেনার জন্য আবেদন করেছি। আশা করি এবছরে তা পাবো।

তিতুমীর কলেজের ইতিহাসে গত বছরেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সর্বাধিক সহ শিক্ষামূলক সংগঠন। কলেজের সামাজিক সংগঠন গুলো নিয়ে তাদের চিন্তাভাবনাও আন্তরিক। এবারে অধ্যক্ষ বলেন, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে যারা জড়িত আমরা তাদের সাথে কথা বলেছি। শিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম গুলো জোরদার করা বিশেষ ভাবে দরকার। জঙ্গিবাদ এবং মাদক এগুলো থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে হলে ছাত্র-ছাত্রীদের মুক্ত রাখতে হলে সহশিক্ষা কার্যক্রম এর কোন বিকল্প নেই। এগুলো খারাপ জিনিস থেকে দূরে রাখে। চেষ্টা করেছি কলেজে শিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম জোরদার করা এবং এগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন হওয়ার একটা সময় সামাজিক সংগঠনগুলো ছিলই না। যেমন বলতে গেলে আমাদের যেমন সাংবাদিক সমিতি, ডিবেট ক্লাব, শুদ্ধস্বর কবিতা মঞ্চ, বিএনসিসি, স্কাউট, বন্ধুমঞ্চ পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন তৈরি হয়েছে। যা শিক্ষার্থীদের বিকশিত করবে বলে মনে করি।

পরিশেষে সকলের মঙ্গল কামনা করে কলেজের অধ্যক্ষ জানান, নতুন বছর বয়ে আনুক যা কিছু সুন্দর, যা মঙ্গলজনক। নতুন বছর আমাদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে এটাই প্রত্যাশা।


ঢাকা/নাজমুল হুদা/নাসিম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়