‘হতাশা ও মাদকাসক্তি থেকে মুক্তি পেতে খেলাধুলা জরুরি’
খালিদ সাইফুল্লাহ || রাইজিংবিডি.কম
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত সকল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পৃষ্ঠপোষকতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মেহেদি হাসান। তিনি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাথলেটিকস ক্লাবের ফ্যাকাল্টি অ্যাডভাইজরের দায়িত্বও পালন করছেন।
এই ক্লাবের আয়োজনে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে দেশের বৃহত্তম আন্তঃবেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস কার্নিভাল ২০২০। এ বিষয়ে মেহেদি হাসানের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাইজিংবিডির ক্যাম্পাস পাতার নিয়মিত লেখক খালিদ সাইফুল্লাহ্।
খালিদ: নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত সকল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় আপনি পৃষ্ঠপোষকতা করছেন দীর্ঘদিন। এর পেছনে আপনার অনুপ্রেরণা কী?
মেহেদি হাসান: ব্যক্তিগতভাবে আমি সবসময়ই পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলাকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছি। কারণ, আমি মনে করি, লেখাপড়ার পাশাপাশি ক্রীড়া চর্চা একজন শিক্ষার্থীকে সকল অবৈধ অপকর্ম থেকে দূরে রাখার মাধ্যমে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে তৈরি হতে সাহায্য করে। তাই, আমার কর্মস্থলের সকল ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পৃষ্ঠপোষকতার সুযোগ পেয়ে আমি সে সুযোগ হাতছাড়া হতে দেইনি।
খালিদ: আপনি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি অ্যাথলেটিকস ক্লাবের ফ্যাকাল্টি অ্যাডভাইজর হিসেবে আছেন, ক্লাবটির কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাই।
মেহেদি হাসান: ১৯৯৫ সাল থেকে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি অ্যাথলেটিকস ক্লাব (এনএসইউএসি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। ক্লাবটি প্রতি বছর এনএসইউ ক্রিকেট ও ফুটবল লিগ, এনএসইউ ইন্ট্রা ব্যাচ ক্রিকেট ও ফুটবল টুর্নামেন্ট, ইন্ট্রা এনএসইউ চেস অ্যান্ড ক্যারাম টুর্নামেন্ট, শাটল মাস্টারস, এনএসইউ স্পোর্টস কার্নিভাল ইত্যাদি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করে থাকে। এছাড়াও নর্থ সাউথের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণসহ আরো কিছু কাজ সম্পাদন করে থাকে এ ক্লাব।
খালিদ: খেলাধুলার পাশাপাশি এনএসইউ অ্যাথলেটিকস ক্লাবের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম কি কি?
মেহেদি হাসান: খেলাধুলার পাশাপাশি এনএসইউ অ্যাথলেটিকস ক্লাব বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তার মধ্যে এনএসইউ ট্রাই আউটস নামের একটি ইভেন্ট রয়েছে, যেখানে এনএসইউ ক্রিকেট টিম, ফুটবল টিম, ব্যাডমিন্টন, বাস্কেটবল ও টেবিল টেনিস দলের জন্য প্রতিভাবান খেলোয়াড় বাছাই করা হয়। এছাড়াও প্রতি সেমিস্টারে একবার ক্লাবে নতুন সদস্য সংগ্রহ করা হয়, যারা বছর জুড়ে ক্লাবের কার্যাবলি সম্পাদনের পাশাপাশি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ও বিভিন্ন কাজে অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও সদস্যদের জন্য প্রতি বছর ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও বার্ষিক বনভোজনের আয়োজন করা হয়।
খালিদ: নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে আন্তঃবেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস কার্নিভাল আয়োজিত হতে যাচ্ছে। এই স্পোর্টস কার্নিভাল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই।
মেহেদি হাসান: বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ৯৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে ৫টি ভিন্নধর্মী খেলার সমন্বয়ে গঠিত একটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় অনুষ্ঠিত খেলাগুলো হচ্ছে ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, বাস্কেটবল ও টেবিল টেনিস। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি এ খেলা শুরু হবে। এ সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সম্মানিত সভাপতি জনাব নাজমুল হাসান পাপন, এমপি উপস্থিত থেকে খেলঅ উদ্ভোধন করবেন। আগামি ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ টুর্নামেন্ট চলবে।
খালিদ: আপনাদের পরবর্তী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা কি কি?
মেহেদি হাসান: স্পোর্টস কার্নিভাল শেষে আমাদের ২টি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা রয়েছে, সেগুলো হচ্ছে- এনএসইউ ইন্ট্রা ব্যাচ ক্রিকেট এবং ফুটবল টুর্নামেন্ট।
খালিদ: আপনি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি অ্যাথলেটিকস ক্লাবকে কোন অবস্থানে দেখতে চান?
মেহেদি হাসান: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণের সবচেয়ে সফল ও সেরা ক্রীড়া সংগঠন হিসেবে এই ক্লাবকে দেখতে চাই।
খালিদ: বর্তমান প্রজন্মের অনেককেই হতাশায় নিমজ্জিত থাকতে দেখা যায়। হতাশা দূর করতে খেলাধুলা কী ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন?
মেহেদি হাসান: হতাশা একটি মানসিক রোগ। জীবনে তরুণদের অনেক কিছুই হতাশার কারণ হতে পারে। তারা সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য খেলাধুলা সর্বোত্তম বিকল্প। এটি যথাযথ মনোযোগ এবং মনোভাব নেয়, যা একজন ব্যক্তিকে সংস্কৃতির দিকে মনোনিবেশ করে। প্রতিটি জয় হলো এমন একটি অর্জন, যা হতাশ ব্যক্তিকে আত্মবিশ্বাস দেয়।
খালিদ: মাদকাসক্তি, দুর্নীতি এবং অপরাধ কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় নিয়মিত অংশগ্রহণ কী সুফল বয়ে আনতে পারবে বলে মনে করেন?
মেহেদি হাসান: মাদকাসক্তি, দুর্নীতি ও অপরাধ থেকে দূরে থাকতে ন্যায় নিষ্ঠা ও আদর্শ শিক্ষার বিকল্প নেই। এই আদর্শ শিখতে হলে সুস্থ মস্তিষ্কের প্রয়োজন। নিয়মিত খেলাধুলায় অংশগ্রহণ শরীর ও মন সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। খেলাধুলার প্রতি মনোনিবেশ অপরাধমূলক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে সাহায্য করে। তাই আমি মনে করি, মাদক, দুর্নীতি ও অপরাধ কমিয়ে আনতে খেলাধুলায় নিয়মিত অংশ নেওয়া জরুরি।
এনএসইউ/হাকিম মাহি
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন