ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

প্রকৃতির এক বদলে যাওয়ার গল্প

জুনাইদ আল হাবিব || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৫১, ১১ মে ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রকৃতির এক বদলে যাওয়ার গল্প

বাড়ির বাইরে চোখ মেলুন। কী দেখতে পাচ্ছেন? প্রকৃতির নতুন রূপ! আকাশ বেশ স্বচ্ছ-নীল। পাখিদের কলকাকলি, নয়তো নদী আর সবুজে ঘেরা বন। খোলা চোখে এ যেন অপূর্ব দৃশ্য। চোখ আটকে যায় প্রকৃতির সীমানায়। মানুষের দুর্বলতার সুযোগে প্রকৃতি এখন আপন মনে নিজকে সাজাচ্ছে।

পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ, যুদ্ধের যত ভয়াবহতা আজ নেই। করোনার ভয়, প্রকৃতি করছে জয়। যেখানে মানুষ আজ নিজের জীবন নিয়ে টানাটানি করছে, সেখানে প্রকৃতি তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করছে। নিজকে সাজিয়েছে নতুন ঠিকানায়। প্রতিদিন যুদ্ধের বাজনা প্রকৃতির জন্য কত যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল, তারই প্রমাণ প্রকৃতির বদলে যাওয়া এ রূপ।
 


শহরের গলিপথ ছুঁয়ে গ্রামের মেঠোপথ, তারপর যদি নদীপাড়ের দৃশ্যে চোখ রাখা যায়, তবেই দেখা মেলে প্রকৃতির শ্রেষ্ঠত্বের। চারদিকের গাছগাছালির দৃশ্যটা সবুজের পরম আবেশে বদলেছে। গেলো বছরগুলোতে কিন্তু এমন দৃশ্যের তেমন একটা দেখা মেলেনি। এখন বায়ুদূষণ কমেছে। তাই প্রকৃতির মাঝে ফিরে এসেছে সজীবতা।

শহরের পথ ছুঁয়ে এখন দেখা মিলছে ইঁদুরের দৌড়াদৌড়ি। ইঁদুরের এ দৌড়টা প্রকৃতির শক্তি, মানুষের নয়। প্রকৃতি সতেজ বলে, প্রকৃতি শীতল বলে আজ বন্যপ্রাণীরা নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে৷ সমুদ্র, নদীর মোহনায় চোখ ফেলুন। তীরের বেলাভূমির তেপান্তরে দেখা মিলছে বিভিন্ন রঙের ফুলের। নয়তো ঘাস বিছিয়ে আছে তেপান্তরজুড়ে। মাঝে মাঝে দেখা মেলে পাটি পাতা, নয়তো অন্য কোনো বন দখিনা বাতাসের পরম ছোঁয়ায় দুলছে। এ সব দৃশ্যের সৃষ্টি বেশি দিনের নয়। গত দু’মাসের। এটা নিশ্চিতভাবে বলা চলে, প্রকৃতির প্রতি মানুষের নিষ্ঠুরতা যেখানে থমকে দাঁড়িয়েছে, সেখান থেকে প্রকৃতির নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়ানো শুরু হয়েছে।
 


পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টির আগেও সৃষ্টিকর্তা অনেক জাতি সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু কোনো জাতিই স্থায়ী হয়নি। জাতিগুলোর অস্তিত্ব বিলীন থেকে আমরা দেখতে পাই, পৃথিবীতে প্রকৃতি ছাড়া কোনো কিছুই স্থায়ী নয়। একদিন মানুষের অস্তিত্বও বিলীন হয়ে যাবে, কিন্তু প্রকৃতি রয়ে যাবে। সে প্রমাণ এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচে বড় সংকট কোভিড-১৯ এর দিকে তাকালে খুব সহজেই অনুমেয়। প্রকৃতিতে বায়ুদূষণ কমেছে, প্রকৃতির মাঝে সতেজতাও এখন বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়।

মানুষের শূন্যতায় প্রকৃতি যে এক বিরাট রাজত্ব সৃষ্টি করছে, তার প্রমাণ মেলে দেশের দর্শনীয় স্থানগুলোতে। লক্ষ্মীপুর জেলার সেরা দু’টি দর্শনীয় স্থানের মধ্যে একটি কমলনগরের মতিরহাট মেঘনা বিচ। সংবাদ সংগ্রহের সুবাদে বেশ কয়েকবার যাওয়া হয়েছে সেখানে।
 


নদীর মাঝে বেশ কয়েক মাস ইলিশ শিকারও নিষিদ্ধ ছিল। এর মাঝে করোনা। দু'য়ে মিলে সেখানকার দৃশ্য একদম বদলেই গেছে। বিচে মানুষের বিচরণ নেই। বিচের প্রকৃতিও দূষণ হয় না। তাই সেখানের প্রকৃতিতে লেপ্টে আছে সবুজের ছোঁয়া। মিশে আছে নদী আর আকাশের নীল আবরণে। যা দেখে মুগ্ধতায় ভরে ওঠে মন।

লেখক: শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ।

 

লক্ষ্মীপুর/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়