ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘করোনা শোধ করছে পরিবেশের ঋণ’

ফারিয়া নাজনীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ৫ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
‘করোনা শোধ করছে পরিবেশের ঋণ’

ভোরে ঘুম ভাঙতেই কিচিরমিচির শব্দগুলো যেন এখন আরও প্রাণোচ্ছল লাগে। জানালার পর্দাটা সরাতেই প্রকৃতির রঙ আরও প্রাণবন্ত মনে হয়। হাজারো পাখির ডাক যেন কানে কানে এসে বলে ‘আমরা আবারও ফিরে এসেছি প্রকৃতিতে’। গাছের পাতার সবুজ রঙয়ের ছটা যেন বিঁধে গেছে চোখের মণিকোঠায়।

মনে হয়, প্রকৃতি যেন কেবল‌ই গৃহবন্দি হতে ছাড়া পেলো। কিন্তু আসলেই কি তাই? গৃহবন্দি হয়েছিলাম তো আমরাই। করোনার দ্বারপ্রান্তে এসে কেই বা আর মুক্ত থাকতে চায়? তবেই কি করোনা প্রকৃতিকে মুক্ত করতেই এলো? হয়তো তাই। প্রকৃতির আশীর্বাদ হয়ে এই ফ্যাকাশে, ধোঁয়াটে, দগদগে পরিবেশটাতে প্রাণের সঞ্চার ঘটিয়ে দিলো এই নভেল করোনা। আর পরিবেশও খুশি হয়ে হয়তো তার রূপকে অলঙ্কৃত করে ধন্যবাদ জানালো কোভিড-১৯ কে।

আমরা বন্দি থাকাতেই যেহেতু প্রকৃতি মুক্তি পেলো, তবে কি আমরাই এদের খাঁচায় পুরে রেখেছিলাম এত দিন? হ্যাঁ, আমরাই তো বিলাসিতা মেটাতে চায়ের কাপ রাখার চারপায়ী বানাতে বৃক্ষ কেটে ফেলছি। আমরাই তো তাদের আহাররূপে কালো বিষাক্ত ধোঁয়া পান করাচ্ছি। আমরাই তো রাস্তায় আরামে হাঁটতে গিয়ে সদ্য জন্ম নেওয়া কোনো চারা লতাকে পিষিয়ে ফেলছি। আমরাই তো অন্যের বৃক্ষপ্রেমকে সয়ে নিতে পারছি না। পাখিদের ঐ ছোট্ট সংসারটিকে উচ্ছেদ করে ফেলছি আমরাই।

আজ এই বিশ্ব পরিবেশ দিবসই হয়ত মনে করিয়ে দেয়, পরিবেশের সাথে আমাদের দেওয়া-নেওয়া। কী উপহার দিচ্ছি পরিবেশকে আমরা প্রাণভরে তাও হয়তো উপলব্ধি করায়। যেই পরিবেশ দিনের পর দিন আমাদের বাঁচার মানে খুঁজে দিচ্ছে, আর তার ঋণ যেখানে আমাদেরই শোধ করার কথা, সেই জায়গায় আমাদের প্রাণনাশকারী করোনাই দুহাত ভরে প্রকৃতিকে বাঁচতে শিখিয়েছে।

আমরা কি পারি না একটি ফুটফুটে চারার সাথে মাটির মিলন ঘটাতে? আমরা কি পারি না পিচ ঢালা রাস্তার দুপাশ সবুজের সারিতে ভরিয়ে তুলতে? চাইলেই তো পারি পাশের বন্ধুটিকে‌ একটি গাছ উপহার দিতে। আমাদের গৃহের উপত্যকা, বারান্দাকে ভরিয়ে তুলতে পারি গাছে গাছে, আশেপাশের সবাইকে হয়তো বৃক্ষ লাগানোর প্রতিযোগিতায় সামিল করতে পারি।

তাই আজ ৫ জুন ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’। চলুন, ভাবি কতটুকু প্রকৃতিকে দিতে পেরেছি, আর কতটুকু নিয়েছি। আর যদি পারি, আজ থেকেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হ‌ই যেন পরিবেশকে রক্ষা করতে পারি এবং ধরে রাখতে পারি তার এই প্রাণবন্ততাকে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উপহারস্বরূপ পাবে সুন্দর এক ধরণি, এটাই কাম্য।

লেখক: শিক্ষার্থী, কৃষি বিভাগ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

 

নোবিপ্রবি/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়