ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

সিলসার চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ

ইমরান ইমন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১৩, ২ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
সিলসার চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ

একটা প্রবাদে সবাই একমত, ‘শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড’। হ্যাঁ, শিক্ষাই একটি জাতির মেরুদণ্ড, শিক্ষাই একটি জাতির আলো। শিক্ষাই পারে মানুষকে অজ্ঞতা, কুসংস্কার ও অন্ধকার থেকে দূরে রেখে রঙিন আলোয় জীবনকে আলোকিত করতে।

মেরুদণ্ড ছাড়া যেমন মানুষ দাঁড়াতে পারে না, ঠিক তেমনি শিক্ষার সঠিক পদ্ধতি, কলাকৌশল জানা ব্যতীত একজন শিক্ষার্থী সফলতার চূড়ায় আরোহণ করতে পারে না। শিক্ষার্থীদের সঠিক গাইডলাইন, পড়াশোনার কলাকৌশল তথা শিক্ষার সুমহান আলো শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্রত নিয়ে ২০১৭ সালের ২ জুলাই জন্ম হয় সিলসার।

এবার জেনে নেওয়া যাক সিলসা কী? সিলসা হলো- ‘Secondary and Intermediate Level Students' Welfare Association – SILSWA’।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একঝাঁক স্বপ্নবাজ শিক্ষার্থীর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় সিলসা। শুরুতে এর কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন বাংলাদেশের সব প্রান্তে, সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচালিত হচ্ছে এর কার্যক্রম। আর এর পরিচালনা পর্ষদে আছেন দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবীরা।

সিলসা বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম শিক্ষামূলক অমুনাফাভোগী প্রতিষ্ঠান, নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উন্নতির জন্য।

আমাদের দেশে শিক্ষার প্রতিটি স্তরেই অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে। অবকাঠামোগতভাবে পিছিয়ে থাকা এসব শিক্ষার্থীরা স্কুল শেষে কলেজে পা দিতে পারে না কিংবা কলেজে পা দিলেও কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে পারে না।  এর প্রধান কারণ হচ্ছে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছলতা, সঠিক তথ্য এবং দিক নির্দেশনার অভাব। এসব পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়ানোর একান্ত ইচ্ছা থেকে জন্ম হয় সিলসার।

মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ফেসবুক গ্রুপ, ওয়েবসাইট এবং ইউটিউবের মাধ্যমে শিক্ষামূলক সাহায্যের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার দিকনির্দেশনা, স্কিল ডেভেলপমেন্ট কার্যক্রমসহ নানাবিধ কাজ করে যাচ্ছে সিলসা। এসব কাজ সিলসার অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ, ড্রিম টু ঢাকা ইউনিভার্সিটি গ্রুপ, ড্রিম টু চিটাগাং ইউনিভার্সিটি গ্রুপ এমন ভার্চুয়াল ক্যাম্পাস গ্রুপ, সিলসার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এবং সিলসার অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে নিয়মিত করে যাচ্ছে।

এছাড়াও সিলসা অ্যাডমিশন হেল্পডেস্ক, ব্লগস্টোরি, বুক ফটোগ্রাফি, মিট উইথ টপারসহ বিভিন্ন ইভেন্ট আয়োজন করে আসছে।

শিক্ষার সুহান আলোয় দেশকে আলোকিত করার মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১৭ সালের ২ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হওয়া সিলসা হাঁটি হাঁটি পা পা করে এবছর চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত এ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে প্রায় ১ মিলিয়ন শিক্ষার্থীর একটি পরিবার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের অন্যতম ৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সিলসার শাখা রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে সিলসা রাবি উইং, সিলসা চবি উইং, সিলসা বশেমুরবিপ্রবি উইং, সিলসা কুবি উইং, সিলসা নোবিপ্রবি উইং, সিলসা বেরোবি উইং। এছাড়াও বাংলাদেশের প্রায় তিনশত কলেজ থেকে রয়েছে প্রায় ৫০০’র কাছাকাছি কলেজ অ্যাম্বাসেডর।

প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় হাজার হাজার শিক্ষার্থী সিলসার সাথে যুক্ত থেকে ফ্রি সেবা নিচ্ছে। তাঁদের যেকোনো সমস্যার কথা সিলসাকে জানাচ্ছে। সিলসা তাঁদের সমস্যা মোতাবেক সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছে।  সিলসার দেওয়া গাইডলাইন, পড়াশোনার পদ্ধতি ও কলাকৌশল অনুসরণ করে অসংখ্য স্বপ্নবাজ শিক্ষার্থী মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করাসহ ঢাবি, রাবি, চবি এবং দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে।

দেশের কোনো শিক্ষার্থীই যাতে আর্থিক অসচ্ছলতা কিংবা সঠিক পদ্ধতি, কলাকৌশল ও পরামর্শের অভাবে ঝরে না পড়ে-সে ব্রত বুকে লালন করেই সিলসা এগিয়ে চলছে।

সিলসার স্বপ্ন দেখে ‘শিক্ষার আলোয় দেশকে আলোকিত করার।’ একদিন বাংলাদেশের সব শিক্ষার্থী সিলসার প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হবে, গঠিত হবে সিলসাময় একটি বৃহৎ পরিবার।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

 

চবি/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়