ভুলের কাব্যকথন
মেহেদী হাসান হৃদয় || রাইজিংবিডি.কম
ভুলে গেছি সব-
কীভাবে পাড়ি দিতে হয় দুর্গম পথ
পাড়ি দিতে হয় প্রতিকূল সমুদ্র
ভুলে গেছি তা।
ভুলে গেছি বৃদ্ধ মাঝি রহমতের সকাতর গান
রাস্তার মোড়ের পাগলের প্রলাপে অগোছালো দর্শন,
কিংবা চায়ের কাপের রাজনীতি, মোল্লা সাবের ধর্মতত্ত্ব
ক্ষুধাকাতুরে সেই কাধে ব্যাগওয়ালা তরুণের পঙক্তিমালা,
ভুলে গেছি ইতিহাস, সমাজ, ভুগোল, অর্থনীতির গড়মিল
পদার্থ, রসায়ন, গণিতের তুমুল পর্যালোচনা কিংবা বেরসিক জীববিজ্ঞান।
ভুলে গেছি কূটনীতির গোলটেবিল, সংসদ নির্বাচন কিংবা শাসনতন্ত্র।
ভুলে গেছি অন্তহীন মাঝরাত, বিবর্ণ সকাল, বিষণ্ণ বিকেল
ভুলে গেছি সড়কের চোরাগলি, সোডিয়াম মাখা রাজপথ।
তোমাকে ভুলে গেছি প্রিয়তমা; তোমার কথা ভুলে গেছি,
ভুলেছি তোমার হাসি, গান, প্রিয়মুখের সেই অন্তহীন মুহূর্তগুলো
ভুলেছি ততটা যতটা ভুললে বলা যায় সবটা ভুলেছি।
ভুলে গেছি জন্মদিন, মৃত্যুদিন, বার্ষিকীর বিশেষ দিনগুলো।
ভুলেছি জীবনানন্দ, রবীন্দ্রনাথ, হেলাল হাফিজ
কিংবা নজরুল, সুকান্ত, রুদ্র, শামসুর রাহমানের কবিতা।
ভুলে গেছি স্বপ্ন, ইচ্ছা, আগ্রহের বিষয়গুলো, ভুলেছি আকাশ
ভুলে গেছি সেই টানটান আবৃত্তি, দৃপ্ত কন্ঠের ভাষণ,
আমার প্রাণ কবিতাকে ভুলেছি, ভুলেছি প্রিয় গানগুলো।
ভুলেছি সেই লাজুক কিশোরের মিষ্টি ছটফটানি
আমাকে ভালোবেসে কাঁদতে থাকা সেই মেয়েটির প্রিয়মুখ
ভুলেছি সংসার, ভুলেছি গৃহত্যাগী, ভুলেছি সভ্যতা।
ভুলে গেছি পরিবার, আত্নীয়, বন্ধু, পরিচিত সবকিছুই,
মাঝে মাঝে ভুলে যেতে হয় সবটা, একেবারেই সবটা।
মনে রাখার আনন্দের থেকে ভুলে যাবার বিষাদ কম নয়
একবিংশ শতাব্দীতে মানুষ আর কতটাই বা মনে রাখতে পারে?
কবি: শিক্ষার্থী, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ (এইচএসসি-২০)।|
ঢাকা/মাহি
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন