জবির মার্কেটিং বিভাগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অনলাইন সেমিনার

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) মার্কেটিং বিভাগের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি অনলাইন সেমিনার হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ জুলাই) সকাল ১১টায় বিভাগীয় উদ্যোগে মার্কেটিং ক্লাব ও বিভাগের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় অনলাইনে সেমিনারটি হয়।

মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবীর চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। সেমিনারে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।

ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘মূলত প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথেই উৎপাদন ব্যবস্থায় গতি আসে, কিন্তু দেখা যায় যে যত সহজে প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদন বাড়ানো যায়, তত সহজে বাজারে তা বিক্রি করা যায় না। তখনই মার্কেটিং গুরুত্ব পেতে শুরু করে। আর আধুনিক মার্কেটিংয়ের যাত্রা শুরু হয় তখনই, যখন উপলব্ধি করা হয় যে, উৎপাদনের পরে নয় বরং এর আগেই মার্কেটিং প্রসেসের প্রয়োজন। মার্কেটিংয়ের মূলত ২টি দিক থাকে- ফিলোসফিক্যাল ও টেকনোলজিক্যাল। একটি অর্গানাইজেশনের ক্ষেত্রে প্রথমত ইন্টারনাল মার্কেটিং এবং তারপর এক্সটার্নাল মার্কেটিংয়ের দিকে নজর দিতে হবে, মূলত সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া হবে কাস্টমারকে কেন্দ্রে রেখেই।’

‘সৃজনশীল হতে হলে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যহীনভাবে জ্ঞান চর্চা করতে হবে৷ যে জ্ঞান চর্চার পেছনে কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থাকে, সে জ্ঞান দিয়ে টিকে থাকা যাবে না। শুধু ভালো ফলাফল অর্জন করা যাবে৷ মার্কেটিং ক্ষেত্রে ভালো করতে হলে জানতে হবে অন্যান্য বিষয় সম্পর্কেও। ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি থেকে শুরু করে সামাজিক বিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, দর্শনের মতো বিষয়সহ অন্য সব বিষয়ে রাখতে হবে সমানভাবে ধারণা। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, প্রশাসন, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ সর্বক্ষেত্রে মার্কেটিং দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন। অর্থ্যাৎ Marketing Everywhere /Marketing Everything কনসেপ্টটা চালু করতে হবে’, বলেন তিনি।

সেমিনারে মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী বলেন, ‘যেটুকু সময় আছে সেটা যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য যেসব টেকনোলজি আপনাকে জানতে হবে, সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত জ্ঞানের সাথে ঐ সকল টেকনোলজির লিংক খোঁজার চেষ্টা করুন। এই কাজটুকু আপনি যদি এখন অবসর সময়ে অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন সময়ে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করতে পারেন। তবে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, আপনার সফলতা আসবেই। আর যদি এই কাজে এক মিনিট দেরি করেন, তবে আপনি এক মিনিট পিছিয়ে যাবেন। আমি আপনাদের মঙ্গলকামনা করছি।’

সেমিনার সম্পর্কে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রাব্বি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে যখন দেশের সমস্ত শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ হয়ে আমরা এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছিলাম, তখন একই সাথে বদলে যাচ্ছিল দেশের বিপণন ব্যবস্থাও। তখনই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ ৪টি ধারাবাহিক সেমিনার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয়। যার মাধ্যমে আমরা বদলে যাওয়া পৃথিবীতে বিপণন ব্যবস্থায় কী ধরনের পরিবর্তন আসবে এবং সেই পরিবর্তিত বিপণন ব্যবস্থায় কীভাবে একজন বিপণন কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হবে, সে ব্যাপারে বিস্তার ধারণা লাভ করতে পেরেছি।’

উল্লেখ্য, সেমিনারটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ আয়োজন করেছে। সেমিনারটি পরিচালনায় সার্বিক সহযোগিতায় ছিল মার্কেটিং ক্লাব এবং বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা। উক্ত সেমিনারে মার্কেটিংয়ের অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ এবং শিক্ষার্থীদের করণীয় দিক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয়।

 

 

জবি/সৌদিপ/মাহি