ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘শিক্ষা জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করে’

ইসরাত জাহান শিউলি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১১, ১২ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
‘শিক্ষা জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করে’

রাষ্ট্রের মৌলিক উপাদান জনসংখ্যা। দেশভেদে জনসংখ্যার তারতম্য হয়। কোনো দেশে কম, কোনো দেশে বেশি। কোনো দেশ জনসংখ্যা বৃদ্ধি করতে চায়। কোনো দেশ জনসংখ্যা হ্রাস করে। যারা বৃদ্ধি করতে চায় তারা জনসংখ্যাকে জনসম্পদ হিসেবে বিবেচনা করে। যারা হ্রাস করতে চায় তারা জনসংখ্যাকে বোঝা ভাবে। রাষ্ট্রসমূহের ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। শিক্ষা, উন্নত প্রযুক্তি, অর্থনৈতিক অবস্থা এবং চিন্তাধারার ভিন্নতাই এর প্রধান কারণ।

গতকাল ১১ জুলাই ছিলো বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস। প্রতি বছর এ দিনে সারাবিশ্বে এক যোগে পালিত হয় দিবসটি। ১৯৮৯ সাল থেকে জাতিসংঘের উদ্যোগে দিবসটি পারিত হয়ে আসছে। ১৯৯০ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে সারা বিশ্বে এই দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। দিবসটি পালনের অন্যতম মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সারা বিশ্বে জনসংখ্যাবিষয়ক জনসচেতনতা বৃদ্ধি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি মিনিটে বিশ্বে ‌২৫০টি শিশু জন্ম নেয়। বৃদ্ধি পাচ্ছে জনসংখ্যা। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংবাদপত্র ইউএসএ টুডে’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এভাবে যদি জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে তাহলে ২০৩০ সালে পৃথিবীতে জনসংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ৮৫০ কোটিতে। গাজী শামছুর রহমানের ‘বাংলাদেশের পুলিশ প্রবিধানের ভাষ্য পিআরব’ বইটি থেকে জানা যায়- চীন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি জনবহুল দেশ। তবে এই দেশগুলোতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম। আরও জানা যায়, সম্প্রতি আফ্রিকা ও এশিয়াতে প্রায় ২০টি দেশে দ্রুত হারে বাড়ছে জনসংখ্যা।

বলা হয়, এশিয়া-আফ্রিকার মতো ২০টি দেশে এই বৃদ্ধির হার অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ এসব দেশে অস্বাভাবিকভাবে জনসংখ্যার বিস্ফোরণ ঘটবে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ইতিবাচক প্রভাব হলো জনবল। যদি একটি রাষ্ট্রে উন্নত প্রযুক্তি ও উন্নত শিক্ষা থাকে তাহলে জনসংখ্যাকে কাজে লাগানো যায়। উন্নতি ঘটে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থারও।

দারিদ্র্যতা বৃদ্ধি জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য বহুলাংশে দায়ী। যদি একটি দেশে কর্মসংস্থান নির্দিষ্ট থাকে, কিন্তু কর্মী বৃদ্ধি পায়। তাহলে কর্মী নিয়োগ দেয়া দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে বেকারত্ব বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও দেশের জমি বৃদ্ধি পায় না। ফলে বসবাসের জন্য বনভূমি উজাড় করতে হয়। এতে হ্রাস পায় গাছ-পালা। ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে জলবায়ুতে। আর এর ফলে বৃদ্ধি পায় বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগও। সবমিলিয়ে প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে একটি দেশ দূর্বল হয়ে পড়ে। সঙ্গে থাকে অপুষ্টি, শিক্ষার অভাব, অপ্রতুল চিকিৎসা। এসবই জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য দায়ী।

শিক্ষা ও সচেতনতাই পারে জনসংখ্যাকে নিয়ন্ত্রণ করতে কিংবা জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে। দেশের নাগরিকরা শিক্ষিত হলে সে জাতি উন্নত‌ হয়। সচেতনতা ও শিক্ষাই পারে জনসংখ্যাকে বোঝা নামের অভিশাপ থেকে দূর করতে। পুরো পৃথিবীতে জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে হবে শিক্ষার মাধ্যমে।

লেখক: ফিন্যান্স বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

 

 

ঢাকা/মাহফুজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়