ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেম চির অম্লান 

রাইয়ান জিহাদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৯, ১৫ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেম চির অম্লান 

‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই/ তবে বিশ্ব পেত এক মহান নেতা/ আমরা পেতাম ফিরে জাতির পিতা।’ বঙ্গবন্ধু হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, তা কখনো পূরণ হওয়ার নয়।    

জাতি আজ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ৪৫ বছর আগে ৭৫’এর ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর বিপথগামী একদল ঘাতকের হাতে তার নৃশংস হত্যাকাণ্ড ছিল জাতির ইতিহাসে এক বড় কলঙ্ক।

সেই রাতে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য ধানমণ্ডির বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। ঘাতকেরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে হত্যা করেছে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামালসহ পরিবারের ১৭ জন সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন। 

এ সময় বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।

একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশে বছরের পর বছর এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ থাকা ছিল আইনের শাসনের পরিপন্থী। এর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর অবদান মুছে ফেলার প্রক্রিয়াও নানাভাবে চালানো হয়েছে।

ইতিহাসে যার স্থান সুনির্দিষ্ট ও স্বীয় মহিমায় সমুজ্জ্বল, তাকে অস্বীকারের মূঢ়তা বিভিন্ন সরকারের আমলে কম দেখানো হয়নি। এতে করে স্বল্পকালীন সুবিধা হাসিল করা গেলেও চূড়ান্ত বিচারে তা সফল হয়নি। বরং শহীদ বঙ্গবন্ধু দিনের পর দিন হয়ে উঠেছেন আরও শক্তিশালী। জাতির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় অবদানই তাকে অজেয় করে রেখেছে।

দেশের স্থপতি ও নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধানকে তার পরিবারের সদস্যসহ এমন ভয়াবহভাবে হত্যার ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে দেশ ও জাতিকে বিপথগামী করার অপপ্রয়াস চালানো হয় পরবর্তীকালেও।

হত্যাকারীদের বিচার থেকে রেহাই দিয়ে জারি করা হয় কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ। সেই অধ্যাদেশ বাতিলের পর দেরিতে হলেও বিচার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এ বছরও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত এক জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর অন্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন দেশে। এই পলাতক খুনিদের দেশে এনে তাদের শাস্তি কার্যকর করা সরকারের দায়িত্ব।

বঙ্গবন্ধুর সমগ্র জীবনে একটিই ইচ্ছা এবং প্রচেষ্টা ছিল বাংলা এবং বাংলার মানুষকে অত্যাচারী শাসকের জুলুম থেকে মুক্ত করা।  

বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তা এগিয়ে নিতে হলে রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন কাম্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেশ ও জাতির সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে তার আপন মহিমায় প্রতিস্থাপন করা হলে জাতি হিসেবে সবাই গৌরবান্বিত হবে।

বঙ্গবন্ধু নিঃসন্দেহে মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সব ধরনের জুলুম, আত্যাচার, নির্যাতন বরণ করে নিয়েছেন। তিনি আমাদের প্রগতিবাদী অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ গঠন করাই হবে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের সর্বোত্তম উপায়। পরিশেষে কবির ভাষায় বলতে চাই- 

‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।’ 

 

লেখক: শিক্ষার্থী, মোল্লাকান্দি লালমিয়া পাইলট হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

কুমিল্লা/মাহি 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়