ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জনাকীর্ণ ক্যাম্পাসটি এখন জনশূন্য

মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৫, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০  
জনাকীর্ণ ক্যাম্পাসটি এখন জনশূন্য

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। অধিকাংশ শিক্ষার্থীই নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। ক্যাম্পাস তাই শূন্য। কারো আনাগোনাও নেই। সাড়ে সাত একরের এই ছোট ক্যাম্পাসটিতে প্রতিদিন প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখরিত থাকতো। এখন কারো দেখা মেলা ভার।

সারি সারি বাসে ক্যাম্পাসে আসতো তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীরা। বাসগুলোও ঠায় দাঁড়িয়ে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে। করোনাভাইরাস প্রাণচঞ্চল ক্যাম্পাসটিকে স্থবির করে তুলেছে। শিক্ষার্থীদের সকল ব্যস্ততা যেই ক্যাম্পাসকে নিয়ে সেই ক্যাম্পাসই এখন ফাঁকা।

করোনাভাইরাস প্রতিটি ক্যাম্পাসের মতো জবি ক্যাম্পাসকেও নিস্তব্ধ করে রেখেছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে ভার্সিটি বাসের জন্য অপেক্ষা কিংবা দৌঁড়ে বাস ধরা থেকে শুরু করে শেষবেলায় সেই বাসেই গন্তব্যে পৌঁছানো, সবকিছুই বন্ধ।

একের পর এক ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন শেষে একসঙ্গে বসে গল্প, আড্ডা, রসিকতা ও বিনোদনে মেতে ওঠা প্রাণচঞ্চল ক্যাম্পাসটাতে এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না কাউকে। জবি টিএসসি, ক্যাফেটেরিয়া, শান্ত চত্বর, বিবিএ বিল্ডিং, কাঁঠালতলা সহ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন আড্ডাস্থল জনশূন্য। সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থান শান্ত চত্বরটি হাহাকার করছে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ছেলেমেয়েরা পরিবার থেকে দূরে থেকেও আরেক নতুন পরিবার গড়ে তুলেছে ক্যাম্পাসে।

এখন অনলাইন ক্লাসেই মনোযোগি বেশিরভাগ শিক্ষার্থী। কাঁঠালতলায় নেই কেউ এখন। নেই কোনো মিটিং-মিছিল। ডিপার্টমেন্ট বন্ধ, ক্লাসরুম ফাঁকা। ফাঁকা লিফটও। লিফটগুলো চালু না হওয়ায় নষ্ট হয়ে যাবে নাতো? বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে যেখানে শিক্ষার্থীদের ভিড় থাকতো সেখানে কেউ নেই। শুধু নেই আর নেই।

বিজ্ঞান অনুষদ চত্বর, কলা অনুষদ চত্বর, মূলগেইটের বাহিরে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় গেইটের সামনে, বিশ্ববিদ্যালয় বাসের ভেতরে, ক্যান্টিনে, ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে, অবকাশ ভবণে, শহীদ মিনারের সামনে এবং বিভিন্ন একাডেমিক ভবনে খোশগল্পের জায়গাগুলো নিরবে দাঁড়িয়ে আছে।

এখন রাতের আড্ডায় মুখরিত হয় না শহীদ মিনার। আইইআর আর পোগোজ স্কুলের সাদা বালুর মাঠে এখন ঘাসের পাহাড়।ক্যাম্পাসের মসজিদটিতেও তেমন মুসল্লি নেই। কলা ভবন শিক্ষার্থীদের শূন্যতা অনুভব করছে সবচেয়ে বেশি।

বর্তমানে ক্যাম্পাসে জরুরি বা বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউই প্রবেশ করতে পারছে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমই ভরসা। সেখানেই একে-অপরের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন তারা। করোনা থমকে দিয়েছে সবই। আবার সবাই মেতে উঠতে চাই বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায়। একদিন শান্ত হবে করোনা। আবার অনুকূলে আসবে সব। আবারও ফিরে যাবো প্রাণপ্রিয় ক্যাম্পাসে। এই প্রত্যাশা সবার।

লেখক: শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

জবি/মাহফুজ/মাহি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়