সেশনজট নিরসনে শিক্ষার্থীদের কিছু সুপারিশ
আবু তালহা আকাশ || রাইজিংবিডি.কম
করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে এক আতঙ্কের নাম। বিশ্বব্যাপী প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছেন হাজারো মানুষ। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখতেই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু দীর্ঘ দিন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সেশনজটের কবলে পড়ছে শিক্ষাব্যবস্থা।
সেশনজট নিরসনে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, এ নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষর্থীদের ভাবনা তুলে ধরছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু তালহা আকাশ।
আখতার হোসেন আজাদ, লোক প্রশাসন বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যাম্পাস খোলার পর পাঠদান শুরু হলেই এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব। তবে এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের পূর্ণ মাত্রায় আন্তরিকতা নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তাই উদ্বিগ্ন হবার তেমন কারণ নেই। তবে ক্যাম্পাস খোলার পর সেশনজট নিরসনের নামে দ্রুত পরীক্ষা নিয়ে পঙ্গু গ্র্যাজুয়েট তৈরি করা মোটেও সমীচীন হবে না। বরং সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও অতিরিক্ত ক্লাস করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা যেতে পারে।
ফয়সাল আহমেদ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ
দীর্ঘ দিন ধরেই পড়াশোনার বাইরে আমরা। কবে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরবো কেউ তা জানি না। এই দীর্ঘ সময়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে৷ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর হঠাৎ করেই দীর্ঘ সিলেবাস দ্রুত শেষ করার বোঝা চাপিয়ে দেওয়া যাবে না শিক্ষার্থীদের ওপর। ধীরেই এগিয়ে যেতে হবে সবার।
মারফি সরকার তিন্নি, ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
করোনায় সেশনজট সৃষ্টি হবে এটা নিশ্চিত। সেশনজট নিরসনে আমার কিছু পরামর্শ রয়েছে।
প্রথমত, আমাদের সিলেবাসগুলো যদি সংক্ষিপ্ত করা হয়, তাহলে অল্প সময়ের মধ্যে কোর্স শেষ করা যাবে।
দ্বিতীয়ত, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন। ছুটি একদিন করে দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি অন্যান্য নিয়মিত ছুটিও কমিয়ে আনা যেতে পারে।
তৃতীয়ত, এই বছরের সেশনের সঙ্গে পরবর্তী সেমিস্টারের কিছু সময় যুক্ত করা যেতে পারে। পরবর্তী সেমিস্টারগুলোও ছোট করে আনা যেতে পারে।
ইসরাত জাহান ইমু, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
করোনায় চলতি শিক্ষাবর্ষ থমকে দাঁড়িয়েছে। সেশনজট নামক বিভীষিকা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের স্বপ্নগুলোকে বন্দি করে রেখেছে। ক্যাম্পাস খোলার পর স্বল্প সময়ে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষাগুলো নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে যেন একটি বছর নষ্ট না হয় সেজন্য চলতি শিক্ষাবর্ষ আগামী মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যায়। ২০২০-২০২১ সেশন ২০২১ সালের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে।
ইউসুফ আলী, আইন ও বিচার বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
করোনায় বন্ধ শিক্ষাকার্যক্রম। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিৎ সেশনজটের দিকে নজর দেওয়া। এক্ষেত্রে সেশনজট নিরসনে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। চলতি বছরের কোর্সের কিছু অংশ পরবর্তী বছরের কোর্সের সঙ্গেও যুক্ত করা যাবে। সবচেয়ে বড় বিষয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সবারই এই সেশনজট নিরসনে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।
ঢাকা/মাহফুজ/মাহি
আরো পড়ুন