ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

ফিরে চলো কৈশোরে...

রায়হান হোসেন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৬, ১৭ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১৫:২০, ১৭ অক্টোবর ২০২০
ফিরে চলো কৈশোরে...

কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ‘কেশে আমার পাক ধরেছে বটে, তাহার পানে নজর এত কেন?’ সত্যি তাই। শরীরের বয়স তো সংখ্যা ছাড়া আর কিছু নয়, মন বুড়ো না হলেই হয়। 

ঢাকা কলেজ ও অন্যান্য কলেজের এসএসসি ১৯৯৪ ও এইচএসসি ১৯৯৬ ব্যাচ। তাদের বয়স ঠিকই বেড়েছে, কিন্তু কিশোর বয়সের ক্যাম্পাসের সেই আড্ডাগুলো এখনও বাঁচিয়ে রাখতে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। পুরনো দিনগুলোকে স্মরণ করতে নানা আয়োজন করেছেন সোশ্যাল মিডিয়াভিত্তিক ৯৪ ও ৯৬ ক্লাবের সদস্যরা।

সোস্যাল মিডিয়া ভিত্তিক গ্রুপ ৯৪ ও ৯৬ ক্লাবের প্রায় চার শতাধিক বন্ধুরা শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) ধানমণ্ডি কনভেনশন সেন্টারে মিলিত হয়েছিলেন। নীল রঙের টি-শার্ট রঙ ছড়াচ্ছিল যেন পুরো কনভেনশন হলজুড়ে। 

সুনসান নীরবতা ভাঙে তাদের কোলাহলে। বয়স যেখানে বাঁধ মানে উচ্ছ্বাসে। এ যেন ফিরে পাওয়া সেই কিশোর-তারুণ্য। গলা ছেড়ে গান, কাঁধে কাঁধ রেখে ছবি তোলা, স্মৃতি রোমন্থন করেই দিনটি কাটিয়েছেন তারা। 

আয়োজকদের ভাষ্য, ‘করোনা না থাকলে আরও অন্তত কয়েকগুণ বেশি বন্ধু জড়ো হতে পারতাম’।

অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া নিগার সুলতানা খুবই উৎফুল্ল হয়ে বলেন, ‘করোনার এই সময়টাতে ঘরবন্দি থেকে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলাম। আজ একটা দিনে সেইসব অবসাদ ভুলে মনে হচ্ছে ফেলে আসা শৈশবে হারিয়ে গেলাম। বন্ধুত্ব যেখানে নেই কোন ক্লান্তি কিংবা অবসাদ। এখানে শুধুই আনন্দ আর উৎসবে মেতে থাকা এক সম্পর্ক।’

২০১৯ সালের ২৭ জুলাই শুরু হওয়া এই ক্লাবে ইতোমধ্যে প্রায় পাঁচ হাজারেরও বেশি সদস্য যুক্ত হয়েছেন। দেশসহ বিদেশের অন্তত ৫টি দেশে প্রতিনিধি রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর গত বছর বিজয় দিবসে রাজধানীর লালবাগ এলাকায় একটি এতিমখানায় খাবার ও কম্বল বিতরণের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করে। এরপর সারাদেশে ছোট-বড় অন্তত ১০টি বন্ধু আড্ডার আয়োজন করে। করোনাকালে সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে অসহায় মানুষের পাশে দাড়ায় তারা।

উদ্যোক্তাদের লক্ষ্য, এসএসসি ১৯৯৪ ও এইচএসসি ১৯৯৬-এর বন্ধুদের সবাইকে এক ছাতার নিচে যুক্ত করা। একসঙ্গে পথচলা ও একে-অন্যেরও সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়ানো। সেইসঙ্গে দেশের নাগরিক হিসেবে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে পরিবর্তনের জন্য কাজ করবে।

এ আয়োজনের উদ্যোক্তা ঢাকা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সায়েম ইবনে ইসলাম অনিক। তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকে সাংগঠনিক কাজে আমার আসক্তি। ঢাকা কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন করতাম। সেখান থেকেই মূলত ব্যাচের বন্ধুদের সম্মিলন ঘটাতে উদ্বুদ্ধ হই। গত বছর ২৭ জুলাই একটি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে বন্ধুদের জড়ো করি। আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করি ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিবসে রাজধানীর লালবাগ এলাকায় একটি এতিমখানায় শিশুদের মাঝে খাবার ও কম্বল বিতরণের মাধ্যমে।

এরপর বিভিন্ন সময়ে বন্ধুরা সারাদেশের অন্তত ১০টি ইভেন্টে মিলিত হয়েছি। করোনাকালে ব্যাচের তরফ থেকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে। ইতোমধ্যে দেশসহ বিদেশের অন্তত পাঁচটি দেশে আমাদের প্রতিনিধি রয়েছে, বলেন তিনি।

অনিক বলেন, আমাদের এই আয়োজনকে সফল করতে বন্ধু সাঈদ, রাজু আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছে৷ তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ৷ আজকের আয়োজনে অন্তত চার শতাধিক বন্ধু যুক্ত হয়েছে। এছাড়া ফেসবুক গ্রুপে ইতোমধ্যে প্রায় ৫ হাজার বন্ধু যুক্ত হয়েছে। 

এই সংগঠন নিয়ে আমাদের সবার অনেক স্বপ্ন ও পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথমত, এসএসসি ১৯৯৪ ও এইচএসসি ১৯৯৬ ব্যাচের প্রত্যেক বন্ধুকে একই প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা। এর মাধ্যমে একটা শক্ত বন্ধন তৈরি হবে, বলেন তিনি।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, ঢাকা কলেজ।

ঢাকা/মাহি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়