ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

দিলওয়ালে দুলহানিয়ার ২৫ বছর আজ

তাহরিমা মাহজাবিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৫৫, ২০ অক্টোবর ২০২০   আপডেট: ১৮:৫৭, ২০ অক্টোবর ২০২০
দিলওয়ালে দুলহানিয়ার ২৫ বছর আজ

বলিউড সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যমণি শাহরুখ-কাজল। এখনও বলিউডের সেরা জুটির নাম জানতে চাইলে অকপটেই এই দুটো নাম বলে দেন অনেক দর্শক। ১৯৯২ সালে এ জুটির প্রথন সিনেমা বাজিগর মুক্তি পায়। পরবর্তী সময়ে প্রায় তিন দশক ধরে অনেকগুলো সিনেমায় জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন তারা। প্রায় সবগুলো সিনেমাই পেয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা আর বেশিরভাগ ছবিই ব্যবসা সফল। 

তবে, শাহরুখ কাজলের যে সিনেমাটি এখনও দর্শকের মনে দাগ কেটে রেখেছে, সেটি হলো ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ সিনেমাটি। আদিত্য চোপড়া পরিচালিত এ সিনেমা মুক্তি পায় ১৯৯৫ সালে, যা ভারতের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আয় করা সিনেমাগুলোর একটি। 

প্রায় ৫২০ সপ্তাহ ধরে সিনেমা হলে হাউজফুল চলে এই সিনেমা, যা ইতিহাসে বিরল। তাছাড়া এ সিনেমায় ব্যবহৃত ‘তুঝে দেখা তু এ জানা সানাম, মেহেন্দী লাগা কে রাখনা’ ইত্যাদি গানগুলো এখনও দর্শকদের হৃদয়কে দোলা দেয়। এই সিনেমায় অসাধারণ অভিনয়ের কারণে নায়ক চরিত্রে প্রথম সেরা অভিনেতা অ্যাওয়ার্ড পান বলিউড বাদশা খ্যাত অভিনেতা শাহরুখ খান। 

সিনেমার সারসংক্ষেপ 

সাধারণ পরিবারের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক তরুণী সিমরান। প্রায়ই অদেখা এক মানুষকে স্বপ্ন দেখে সে আর বিশ্বাস করে এই স্বপ্নের নায়ক একদিন সত্যিই তার সামনে এসে দাঁড়াবে। স্বপ্নের সেই মানুষটিকে নিয়ে ডায়েরিতে কবিতা লিখে সে। একদিন তার মা ডায়েরির লেখাগুলো পড়ে ফেলেন এবং তাকে নিয়ে হাসাহাসি করেন। সেই সময়ের আর ৫টা পরিবারের মতোই মেয়ের মতামত না নিয়েই তার বিয়ে ঠিক করেন নায়িকার বাবা। এসময় ডায়েরির লেখাগুলো ছিড়ে ফেলতে চাইলে মা সিমরানকে বাঁধা দেন। বিয়ের আগে শেষবারের মতো বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার জন্য বাবার কাছে আবদার করে নায়িকা। ঘুরতে যাওয়ার সময়ই ট্রেনে রাজ নামক এক ছেলের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। শুরুতে ছেলেটাকে একদমই সহ্য করতে পারে না সে। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন বিপদের সম্মুখীন হয় তারা এবং একসঙ্গে সেগুলো মোকাবিলা করে। এই সময় তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। সেসময় নায়ক জানতে পারে নায়িকার বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার কথাটা। ট্যুর শেষে একে-অপরকে বিদায় জানিয়ে নিজেদের বাড়িতে চলে যায় তারা। 

পরবর্তী সময়ে দুজনেই বুঝতে পারে এটা শুধু বন্ধুত্বের সম্পর্ক নয়, তারা একে-অপরকে ভালোবাসে। নিজের ভালোবাসার কথা প্রথমে তার মাকে জানায় সিমরান। এসময় হঠাৎ তার বাবা এসে সব ঘটনা শুনে ফেলেন এবং সিমরানকে গালাগাল দেন। মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য গ্রামে দেশের বাড়িতে নিয়ে যান তিনি। অপর দিকে সিমরানকে খুঁজতে তাদের বাসায় যায় রাজ এবং জানতে পারে তাদের গ্রামে চলে যাওয়ার কথা৷ 

সিমরান তার কল্পনা, বাস্তবে সব জায়গায় রাজকে অনুভব করতে থাকে। কিন্তু মায়ের অনুরোধে একসময় সিদ্ধান্ত নেয় তার বাবার পছন্দের ছেলেকেই বিয়ে করবে সে। ঘটনাক্রমে সেদিনই রাজ গিয়ে উপস্থিত হয় সিমরানের এলাকায়। সরিষা ক্ষেতের মধ্য দিয়ে দৌড়ে নায়ককে জড়িয়ে ধরে নায়িকা। এ দৃশ্যটি এখনও বলিউডের সেরা রোমান্টিক দৃশ্য বলে থাকেন অনেকেই। 

পাত্রের বন্ধু হিসেবে সিমরানদের বাড়িতে যায় রাজ। একপর্যায়ে তাকে নিয়ে পালিয়ে যেতে রাজকে অনুরোধ করে সিমরান। রাজ তা প্রত্যাখ্যান করে এবং বলে সবার অনুমতি নিয়েই সে দুলহান নিয়ে যাবে। বিভিন্নভাবে সবার মনে জায়গা করে নেওয়ার চেষ্টা করে রাজ। এ সময় আরও কিছু ঘটনা ঘটে। তবে কোনোভাবেই সবার সম্মতিতে নায়িকাকে বিয়ে করার কোনো উপায় পায় না রাজ। পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে নিজেদের ভালোবাসা কোরবানির সিদ্ধান্ত নেয় দুজনেই। 

কথা ছিল সিমরানের বিয়ের দিন এ বাড়ি থেকে চলে যাবে রাজ। কিন্তু সেদিন সকালেই তাদের ২ জনের একসঙ্গে তোলা একটা ছবি এসে পড়ে নায়িকার বাবার হাতে। তখন নায়ককে অনেক গালাগাল ও চড় থাপ্পড় দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন তিনি। 

বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার সময় পথ আটকে নায়ক রাজ আর তার বাবাকে প্রচণ্ড মারধর করে নায়িকার সঙ্গে বিয়ে ঠিক হওয়া সেই পাত্রপক্ষ। এ ঘটনা নায়িকার বাবার কানে যায় এবং তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। অপর দিকে সিমরানকে রাজের কাছে দিয়ে দিতে তাকে নিয়ে স্টেশনে হাজির হন সিমরানের মা। ইতোমধ্যে ট্রেনে উঠে পড়েছে রাজ। 

এদিকে রাজের সঙ্গে যাওয়ার জন্য কাঁদতে কাঁদতে বাবার কাছে অনুমতি প্রার্থনা করে সিমরান। একদম শেষের দিকে রাজ-সিমরানের ভালোবাসা বুঝতে পারেন নায়িকার বাবা। মেয়েকে রাজের কাছে যাওয়ার জন্য হাত ছেড়ে দেন তিনি। দৌড়ে গিয়ে চলন্ত ট্রেনে উঠে নায়ককে জড়িয়ে ধরে নায়িকা। এভাবেই শুভ পরিণয় ঘটে রাজ-সিমরানের।

সিনেমাটির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ সকালে নিজের প্রোফাইল পিকচারে এই সিনেমার একটি ছবি দিয়েছেন শাহরুখ খান। এছাড়াও সিনেমাটির ছোট্ট একটি ভিডিও নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছেন তিনি। আজ সারাদিন ভারতীয় বিভিন্ন চ্যানেলে দেখানো হচ্ছে সিনেমাটি। 

লেখক: শিক্ষার্থী, রসায়ন বিভাগ, সরকারি তিতুমীর কলেজ।

ঢাকা/মাহি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ