ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

আসছে নাহিদ আহসানের গল্পগ্রন্থ ‘মায়ের নীল শাড়ি’ 

দিবারুল ইসলাম দ্বীপ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১০, ২৬ অক্টোবর ২০২০  
আসছে নাহিদ আহসানের গল্পগ্রন্থ ‘মায়ের নীল শাড়ি’ 

সেই কৈশোর থেকেই বাড়িতে আসা পত্রিকার সাহিত্য অংশ পড়তে ভালোবাসতেন। পড়তেন তৎকালীন নামিদামি ম্যাগাজিনও। প্রত্যক্ষভাবে লেখালেখির সঙ্গে বাড়ির কেউ জড়িত না থাকলেও নিজের ভালো লাগা- ভালোবাসা থেকেই লেখালেখিতে মনোযোগী হন।

বলছি, একজন তরুণ লেখক, সংগঠক, উপস্থাপক, সমাজকর্মী নাহিদ আহসানের কথা। তার জন্ম ঢাকায় এবং বেড়ে ওঠাও এখানেই।

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক কাটিয়েছন শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজ প্রাঙ্গণে। ছোটবেলায় লেখালেখি ও সাহিত্যের প্রতি যে ভালোবাসা ছিল তার বিকাশের শুরুটা এই বিদ্যালয়েই হয়েছিল। ২০১১ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে থাকাকালীন স্কুলের বার্ষিক ম্যাগাজিনে কৌতুক লিখে জমা দেন এবং তা প্রকাশিত হয়। ২০১২-১৩ সালে সপ্তম-অষ্টম শ্রেণিতে থাকাকালীন তার গল্প প্রকাশিত হয়। লেখালেখির প্রতি আগ্রহের শক্ত ভিত্তি সেখান থেকেই শুরু।

উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হন দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে। সেখানে সাংগঠনিক ও যোগ্যতার কারণে কলেজের নিউট্রিনো এসিসি সায়েন্স ক্লাবের অলিম্পিয়াড সেক্টরের ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। 

পরবর্তী সময়ে তিনি লেখালেখির ভিতকে আরও মজবুত করতে ২০১৭ সালে চ্যানেল আগামী আয়োজিত ‘গ-তে গল্পকার’ ইভেন্টে অংশ নেন ও সেখানে ‘সেরা গল্পকার’ হিসেবে পুরস্কার পান। সেই সালেই তাদের উদ্যোগে একুশে বইমেলায় অন্বয় প্রকাশনীর ‘একুশ গল্প’ নামক বইতে তার প্রথম গল্প প্রকাশিত হয়। তিনি জানান, এতে তার লেখালেখির প্রতি ভালোবাসা যেমন বেড়ে গিয়েছিল, তেমনি নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস অর্জন করতেও সক্ষম হন।

বর্তমান নাহিদ পড়ছেন বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির ডিপার্টমেন্ট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের দ্বিতীয় বর্ষে। ইচ্ছে ছিল এ বছর একুশে বইমেলাতেই নিজের লেখা কোনো বই প্রকাশ করবেন। নানা জটিলতার কারণে তা সম্ভব না হলেও আগামী একুশে বইমেলায় প্রকাশ করতে যাচ্ছেন স্বরচিত প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘মায়ের নীল শাড়ি’। যার প্রকাশনায় রয়েছে পুস্তক প্রকাশন ও প্রচ্ছদ করেছেন সাহাদাত হোসাইন। 

শিক্ষণীয়, গভীর আবেগ-অনুভূতি, বন্ধুত্ব, ষড়যন্ত্র, হাসি ও মন খারাপের গল্প; বিভিন্ন ধরনের মোট ১১টি গল্প নিয়ে বইটি প্রকাশিত হবে। 

শুধু লেখালেখি নয়, উপস্থিত বক্তৃতায়ও রয়েছে তার পারদর্শিতা। ২০১৭ সালে পরিবেশ দিবসে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে আয়োজিত উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করার মধ্য দিয়ে '‘পাব্লিক স্পিকিং’-এর প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায় ও এখন পর্যন্ত অসংখ্য কোর্স-সেশন কমপ্লিট করেছেন এখনও শিখছেন বলে জানান তিনি। এমনকি এই কোয়ারেন্টাইনে এখন পর্যন্ত ৫৩টি লাইভ প্রোগ্রাম উপস্থাপনা করেছেন। গড়ে তুলেছেন মানবিক ও সহযোগিতামূলক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বপ্নদ্রষ্টা। কাজ করে যাচ্ছেন মানবতার সেবায়

তার প্রিয় লেখকদের মধ্যে রয়েছেন- হুমায়ূন আহমেদ, আহমদ ছফা ও বর্তমান সময়কার কিঙ্কর আহসান, তকিব তৌফিক, রিয়াজ ফাহমীসহ আরও অনেকে।

নাহিদ আহসান বলেন, ‘সাধারণ একজন মানুষ হয়ে দেশেই থাকতে চাই। অসংখ্য মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হওয়ার একটা প্রবল আকাঙ্ক্ষা বিরাজ করে আমার মধ্যে। তার চাইতেও বেশি আমাকে এ দেশের অসহায় মানুষগুলোর কাছে টানে, তাদের জন্য সারাজীবন কাজ করে যেতে চাই। মানুষের সেবা করে সাধারণভাবেই জীবন সাজাতে চাই। বাবা-মায়ের জন্য, তাদের ভালোর জন্য সবসময় কাজ করে যেতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাবা-মা সবসময়ই আমার সাহস, শক্তি হিসেবে পাশে আছেন। আমার অনুপ্রেরণা হিসেবে আমি নিজেকেই দেখি। কারণ দিন শেষে আমি একজন ‘নাহিদ’, অন্য কেউ হতে পারবো না।’

বই পড়ার গুরুত্ব নিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা বেশি বেশি বই পড়ে, তারা সত্যিকারের মানুষ হয়। সঠিক জীবনবোধ তাদের মধ্যে থাকে। তারা ভুল জীবনযাপন করে না। তাই সবাইকে বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করে তোলা উচিত।’ 

‘বই পড়লে, সুশিক্ষায় শিক্ষিত হলেই দেশের সামাজিক অসঙ্গতিগুলো কমে আসবে। তাই মানুষকে বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করা উচিত। একজন লেখক, একটা সমাজের অন্যতম সম্মানিত মানুষ। একজন লেখকের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো উচিত’, বলেন নাহিদ।

লেখক: শিক্ষার্থী, দ্বাদশ শ্রেণি, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ।

ঢাকা/মাহি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়