ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বিদেশে উচ্চশিক্ষার দশ সুবিধা

ক্যাম্পাস ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২৩, ২৫ নভেম্বর ২০২০  
বিদেশে উচ্চশিক্ষার দশ সুবিধা

পৃথিবীজুড়ে উন্নয়নশীল ও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে উন্নত দেশে উচ্চশিক্ষা। এই তুমুল আগ্রহের পেছনে আছে বিদেশে উচ্চশিক্ষার নানাবিধ সুবিধা। ডিগ্রির মান থেকে শুরু করে নানা দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি জানার সুযোগসহ বেশকিছু দরজা খুলে দিতে পারে বিদেশে উচ্চশিক্ষা।

বিদেশে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো পৃথিবীটাকে দেখার সুযোগ পাওয়া। বিদেশে পড়তে গেলে একজন শিক্ষার্থী একদম নতুন একটি দেশকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার সুযোগ পায়। দেশটির সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, আচার-রীতি সম্পর্কে ধারণা লাভ করে। বিদেশে পড়াশোনার সুবিধার মধ্যে রয়েছে নতুন অঞ্চল, প্রাকৃতিক বিস্ময়, জাদুঘর ইত্যাদি দেখার সুযোগ। বড় কথা হলো, বিদেশে থাকাকালীন শিক্ষার্থী যে দেশটিতে পড়াশোনা করছে কেবল সে দেশটিতেই ভ্রমণে সীমাবদ্ধ থাকে না। প্রতিবেশী দেশগুলোকেও দেখার সুযোগ পায়। উদাহরণস্বরূপ, ফ্রান্সে অধ্যয়ন করলে পাশের দেশে লন্ডন, বার্সেলোনা এবং রোমসহ ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করার সুযোগ তৈরি হবে।

যেসব কারণে শিক্ষার্থীরা বিদেশী ভ্রমণ করে সেগুলোর মাঝে একটি হলো, বিশ্বের বিভিন্ন শিক্ষাপদ্ধতির অভিজ্ঞতা লাভ করা। বিদেশি একটি প্রোগ্রামে ভর্তি হলে শিক্ষার্থী ঘরে বসে তার পড়ার বিষয়টির ভিন্ন শিখনপদ্ধতি সম্পর্কে জানবে যা সে তার নিজের দেশে থেকে পারতো না।

দেখা যায়, যে দেশে সে পড়তে যাচ্ছে সে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা দেশটির ঐতিহ্য-সংস্কৃতিকে প্রতিনিধিত্ব করছে। যা শিক্ষার্থীর দৃষ্টিকে আরও বেশি প্রসারিত করে।

বিদেশে পড়তে গেলে শিক্ষার্থীরা নিজের মধ্যে নতু্ন একটি সংস্কৃতি ধারণ করার সুযোগ পায়। অনেক শিক্ষার্থী প্রথমবারের মতো নিজের দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পড়তে গিয়ে দেশটির অদেখা সংস্কৃতি দেখে বিমোহিত হয়। বিদেশে পড়তে গিয়ে নতুন সব খাবার, রীতি, ঐতিহ্য, সামাজিক পরিবেশ ও উৎসবের মাঝে নিজেকে নতুন করে মানিয়ে নিতে শেখে শিক্ষার্থীরা।

বিদেশে উচ্চশিক্ষার একটি অন্যতম সুবিধা হলো ভাষাগত দক্ষতা উন্নয়ন। বিদেশে পড়তে যাওয়ার পরিকল্পনা করতে গেলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নতুন ভাষা শিখতে হয়। নিজেকে একেবারে নতুন একটি ভাষাভাষী মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ পাওয়া যায় বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে গেলে। যা কি না সাধারণ সময়ে শেখা হতো না। এছাড়াও, যে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী পড়তে যায় সেখানেও ভাষা শিক্ষার কোর্স রাখা হয়।

আছে ক্যারিয়ার গড়ে তোলার বিস্তর সুযোগও। বিদেশে উচ্চশিক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার সময়ে একজন শিক্ষার্থীর সাথে থাকা নানাবিধ সংস্কৃতি, ভাষা, উঁচু মানের শিক্ষা। যা তাকে প্রতিযোগীতার বাজারে অনেক এগিয়ে রাখে। আবার অনেক শিক্ষার্থীকেই যে দেশে তারা পড়তে যায় সে দেশ কাজ করার সুযোগ দেয়।

ভিন্ন একটি দেশে পড়াশোনা শিক্ষার্থীর মাঝে অনেকগুলো নতুন কার্যকলাপ ও আগ্রহ তৈরি করে যেগুলো তার মধ্যে দেশে থাকাকালীন তৈরি হয়নি। যেমন, হাইকিং, ওয়াটার স্পোর্টস, স্নো স্কিইং, গল্ফ বা অন্যান্য খেলাধুলায় শিক্ষার্থীরা নিজের দেশে থাকাকালীন আগ্রহী হতো না। পাশাপাশি বিনোদন ও অবসর কাটানোর নতুন সব অনুষঙ্গ তৈরি হবে।

বিদেশে পড়তে গেলে সারাজীবনের জন্য বৈচিত্রপুর্ণ এক বন্ধুমহল তৈরি হবে। বিদেশে পড়াকালীন আপনি যেমন ওই দেশের ছেলেমেয়েদের সাথে মিশবেন, তেমনি মিশবেন বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বিচিত্র সংস্কৃতির অধিকারী বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সাথে। তাদের সাথে বন্ধুত্ব বিভিন্ন দেশ সম্পর্কে জানতে ও ভবিষ্যতে সেখানে ভ্রমণের দারুণ সুযোগ তৈরি করে দেবে। পড়াশোনা শেষে এই বন্ধুত্ব বাঁচিয়ে রাখলে ভবিষ্যতের অনেক দরজা খুলে যেতে পারে।

বিদেশে পড়তে যাওয়ার বড় সুবিধা হল ভিন্ন সংস্কৃতিতে ঢুকে নিজেকে আলাদাভাবে আবিষ্কার করা যায়। নিজের দেশে একই সংস্কৃতি, একই নিয়মে আবদ্ধ মানুষের মাঝে থেকে নিজেকে আলাদাভাবে চেনার সুযোগ আসে না। বিদেশে পড়াশোনা নিজের ভেতরের স্বাধীন সত্ত্বাকে সামনে নিয়ে আসে। মানুষ তখন বিভিন্ন পরিস্থিতিতে নিজেকে আলাদা একটি দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিবেচনা করার সুযোগ পায়।

ভবিষ্যতের চাকুরিদাতারাও বিদেশে পড়ে আসা শিক্ষার্থীদের খোঁজে। কেননা, বিদেশে পড়ে আসা শিক্ষার্থীদের মাঝে নিয়মের মাঝে চলা, সময়ানুবর্তিতা, ভিন্ন পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া ও ঝুঁকি নেওয়ার সাহস থাকে। বিদেশে সাধারণত মেধাবী শিক্ষার্থীরাই পড়তে যায়। ফলে, তাদের মেধা নিয়েও কারো কোনো প্রশ্ন থাকে না।

সবশেষ ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বিদেশে উচ্চশিক্ষা শিক্ষার্থীর একটি জীবনমুখী অভিজ্ঞতা দেয়। শিক্ষার্থী নতুন দেশে, নতুন পরিবেশে জীবন গড়ে তোলার শিক্ষা অর্জন করে। 

ঢাকা/নোবেল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়