ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল থেকে অক্সফোর্ডে ইত্তিহাদ

ক্যাম্পাস ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৮, ২৭ নভেম্বর ২০২০  
ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল থেকে অক্সফোর্ডে ইত্তিহাদ

এইচএসসি পরীক্ষায় বসা হয়নি এখনো। ঢাকা রেসিডেন্সিয়ালের পাঠও চুকেনি। তার আগেই কলেজটির ছাত্র আহমেদ ইত্তিহাদ সুযোগ পেয়ে গেছেন অক্সফোর্ডে পড়ার। বর্তমানে আছেন অক্সফোর্ডের ম্যানসফিল্ড কলেজের হোস্টেলে।

মোটেই সহজ ছিল না তার অক্সফোর্ড যাত্রা। অক্সফোর্ডের আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) ও প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে হতাশ হননি। বিশ্বের নানা দেশে অধ্যয়নরতদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে পরিশ্রম করে গেছেন।

আহমেদ ইত্তিহাদ একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গত বছরের অক্টোবর মাসে ব্রিটিশ কাউন্সিলের অধীনে ঢাকার একটি স্কুলে বসে ভর্তি পরীক্ষা দিই। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ডিসেম্বরে দিলাম মৌখিক পরীক্ষা।

এরপর গত জানুয়ারি মাসে চূড়ান্তভাবে ফল প্রকাশিত হলো। মজার ব্যাপার হলো, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা না দিয়েই আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে গেলাম। মূলত অক্সফোর্ডে আমাদের দেশের এইচএসসি পরীক্ষাকে গ্রহণ করা হয় না। তাই আমি ভর্তি পরীক্ষার আগেই উচ্চমাধ্যমিকের সমমান হিসেবে স্যাট (স্কলাস্টিক অ্যাপটিটিউড টেস্ট) সম্পন্ন করেছিলাম। আর ভর্তির জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর টোয়েফল সম্পন্ন করি।’

অক্সফোর্ডের টিউশন ফি বেশি হওয়ায় রিচ অক্সফোর্ড স্কলারশিপের জন্য আবেদন করেন ইত্তিহাদ। বর্তমানে তিনি এই স্কলারশিপে সম্পূর্ণ বিনা খরচে অক্সফোর্ডের ম্যানসফিল্ড কলেজে গণিতে স্নাতক করছেন। হোস্টেলে থাকা ও খাওয়ার খরচ বিশ্ববিদ্যালয়ই বহন করছে।
ইত্তিহাদ জানান, মূলত গণিত উৎসব থেকে তার মাঝে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবের শুরু হয়। চতুর্থ শ্রেণিতে থাকাকালীন তার বড় বোন অ্যাভেলিনা রহমানের কাছে প্রথম গণিত অলিম্পিয়াড সম্পর্কে জেনেছিলেন তিনি। বোনের কাছেই তিনি গণিত উৎসবের জন্য অনুশীলন শুরু করেন। প্রথমবার আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে ফার্স্ট রানারআপ হন। পরের বছর প্রাইমারি ক্যাটাগরিতে জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন অব চ্যাম্পিয়নসের পুরস্কার পান।

ইত্তিহাদ বলেন, ‘আমি মূলত একাই অংক করতাম। অলিম্পিয়াডের আগের বছরের প্রশ্নগুলো নিয়ে অনুশীলন করতাম। বাংলাদেশ থেকে যাঁরা আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নিতেন, তাঁদের সঙ্গে বেশ ভালো যোগাযোগ ছিল আমার। গাণিতিক কোনো সমস্যায় পড়লে তাঁদের সাহায্য নিতাম। এ ছাড়া গণিত অলিম্পিয়াডের প্রশিক্ষক ও আমার স্কুলের শিক্ষকেরাও অনেক সাহায্য করেছেন। গণিত অলিম্পিয়াডের এই অনুশীলনগুলোই ছিল অক্সফোর্ডে ভর্তি পরীক্ষার জন্য আমার একমাত্র প্রস্তুতি।’

ইত্তিহাদ আরও বলেন, ‘বড় হয়ে ডাক্তার বা প্রকৌশলী হতে হবে—এমন কোনো লক্ষ্য মা-বাবা আমার সামনে কখনো দিয়ে দেননি। পরীক্ষায় অনেক ভালো ফল করতে হবে, সেই চাপও ছিল না। আমার যা করতে ভালো লাগে, যা পড়তে ভালো লাগে, সেটিই বেছে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন তাঁরা।’

ঢাকা/নোবেল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়