ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

বিশ্বজুড়ে অনলাইন ক্লাস: চলছে শিক্ষার্থীদের অসদুপায়

আবু সালেহ শামীম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫৯, ২০ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১৫:০১, ২০ ডিসেম্বর ২০২০
বিশ্বজুড়ে অনলাইন ক্লাস: চলছে শিক্ষার্থীদের অসদুপায়

চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বাভাবিক শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ থাকায় বিশ্বের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিকল্প পন্থা হিসেবে অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম চালু করেছে। এই সুযোগে চলছে শিক্ষার্থীদের অসদুপায়, ভাইরাল হয়েছে একজন অধ্যাপকের সতর্ক বার্তা। 

সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দেশে দেশে বিশ্ববিদ্যালয়েগুলো অনলাইনে পাঠদান, পরীক্ষা গ্রহণ, মূল্যায়ন ও শিক্ষার্থী ভর্তি বিষয়ে গাইডলাইন প্রণয়ন করেছে। তবে, অনলাইন মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সরাসরি তদারকি করা সম্ভব হচ্ছে না। যথেষ্ট তদারকির অভাবে শিক্ষার্থীরা অসদুপায় অবলম্বনের সুযোগ পাচ্ছে ও এই প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যবেক্ষণ বলছে, অনলাইন শিক্ষামাধ্যমে শিক্ষার্থীরা চরম ফাঁকিবাজি করছে, বিশেষ করে পরীক্ষায় তারা অনেক রকমের প্রতারণার সুযোগ নিচ্ছে। 

কয়েক দিন আগে, মিডটার্ম পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে অভিযুক্ত এন্ট্রি-লেভেলের প্রায় শতাধিক গণিত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলোম্বিয়া (ইউবিসি)।  

একজন অধ্যাপক শিক্ষার্থীদের ধিক্কার জানিয়ে ও বহিষ্কারের ভয় দেখিয়ে একটি সতর্ক বার্তা অনলাইনে পোস্ট করার পর উক্ত তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে সবাই অবগত হয়। সে সতর্ক বার্তাটি অভিযুক্ত সব শিক্ষার্থীর কাছেও পাঠানো হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে।  

ইউবিসি রেডডিট থ্রেডে আপলোড করা একটি স্ক্রিনশট নোটে লেখা ছিল ‘গণিত বিভাগের ১০০ শিক্ষার্থীর ২টি মিডটার্ম পরীক্ষা ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আমি আপনাদের এটা জানাতে চরম হতাশা প্রকাশ করছি, আমি তদন্ত করে ১০০টিরও বেশি প্রতারণার ক্যাশ/মামলা পেয়েছি। যদি পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারি, তবে জড়িত শিক্ষার্থীরা কোর্সের জন্য চূড়ান্ত পরীক্ষাতেও ‘শূন্য’ মার্ক পাবে ও আমি ইউবিসি থেকে তাদের বহিষ্কারের সুপারিশ করবো।’

নোটে ‘মাইক’ নামে একজন অধ্যাপকের স্বাক্ষর রয়েছে। সিবিসি ইউবিসি অধ্যাপকের পরিচয় যাচাই করতে পারেনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে এন্ট্রি-লেভেলের গণিত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতারণার অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। 

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র বিষয়ক পরিচালক ম্যাথিউ রামসে নিশ্চিত করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যাপক প্রতারণার অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা কিভাবে প্রতারণা করেছে বা কিভাবে তারা ধরা পড়েছে, সে সম্পর্কে দ্রুতই বিস্তারিত জানানো হবে। 

রামসে জানিয়েছেন, অধ্যাপকের বিজ্ঞপ্তিটি প্রথমে শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠানো হয়েছিল, তারপরে অনলাইনে পোস্ট করা হয়েছে।

ভার্চুয়াল ক্লাস চালু হওয়ার পর থেকে ইউবিসিসহ সারাদেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতারণা শনাক্ত ও নিরুৎসাহিত করতে অনলাইন সফটওয়্যার এক্সটেনশন ব্যবহার করছে। প্রক্টরিও নামে প্রতারণা শনাক্তকারী একটি পরীক্ষার-চালিকা টুল, শিক্ষার্থীদের ভার্চুয়াল পরীক্ষায় লেখার সময় তাদের সন্দেহজনক আচরণের জন্য শিক্ষার্থীদের পর্যবেক্ষণ করে। 

ইউবিসি অধ্যাপকরা যদি প্রতারণার বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে থাকেন, তবে তারা অনেক সময় পরীক্ষা পদ্ধতির বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করেন। যেমন প্রজেক্ট প্রদর্শন ও অ্যাসাইনমেন্ট প্রদান। তবে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার অগ্রগতি নির্ণয়ে সবসময় বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করা যায় না।

ঢাকা/মাহি

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়