শতবর্ষে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়
আবু সালেহ শামীম || রাইজিংবিডি.কম
শতবর্ষে পদার্পণ করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়।
বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও একশতম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করা হচ্ছে।
জানা যায়, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার বোলপুর শহরে অবস্থিত। ১৯২১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫১ সালে এটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। দেশ-বিদেশ থেকে অনেক শিক্ষার্থী এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে আসেন। এ প্রতিষ্ঠানের স্বনামধন্য প্রাক্তনদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, অস্কারবিজয়ী চিত্র-পরিচালক সত্যজিৎ রায়, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
পশ্চিমবঙ্গের আনন্দবাজার পত্রিকাসূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের একশতম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য নরেন্দ্র মোদি।
মোদি বলেন, ‘আত্মনির্ভর ভারতের ভাবনা চালু করেছিলেন রবীন্দ্রনাথই। বিশ্বভারতীতে পৌষ মেলায় বহু শিল্পী তাদের শিল্পকর্ম বিক্রি করে স্বনির্ভরতার দিশা পেতেন। কোভিডের জন্য এ বছর পৌষ মেলা হয়নি। এই পৌষ মেলায় যেসব শিল্পী আসতেন, তাদের খুঁজে বের করে শিল্পকর্মকে অনলাইনে তুলে ধরার চেষ্টা করুন। বিক্রির জন্য তাদের উদ্বুদ্ধ করুন। প্রয়োজনে সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যও নিন। ’
‘গৌরব দাও’ বিশ্বভারতীর শতবর্ষে এটাই দেশের প্রার্থনা। দেশের পক্ষে বিশ্বভারতীর শতবর্ষ গৌরবের বিষয়। মোদি বলেন, ‘‘বিশ্বভারতী মানেই গুরুদেবের চিন্তন, দর্শনের স্বার্থক রূপ। কবিগুরুর এই প্রতিষ্ঠান দেশকে শক্তি জুগিয়েছে। স্বাধীনতা আন্দোলনেও বিশ্বভারতীর অবদান রয়েছে। ভারত নির্মাণে বিশ্বভারতী কাজ করছে।
কবিগুরুর দাদা সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর গুজরাটে থাকতেন বলে সেখানে মাঝেমধ্যেই যেতেন গুরুদেব। গুজরাটের সংস্কৃতি তার ভালো লাগত। আমদাবাদে থাকাকালীনই দুটি কাব্যগ্রন্থ লিখেছিলেন। ‘ক্ষুধিত পাষাণ’-এর কিছু অংশও সেখানেই লিখেছিলেন।’’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তা ও দর্শনকে সংরক্ষণ করার কথাও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন।
শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে টুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি টুইটে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান উদ্ধৃত করে লিখেছেন, ‘‘বিশ্বসাথে যোগে যেথায় বিহারো, সেইখানে যোগ তোমার সাথে আমারও।’ ১০০ বছর হলো বিশ্বভারতীর। আদর্শ মানুষ তৈরির পথে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সবচেয়ে বড় এক গবেষণার ফসল এই শিক্ষার মন্দির। আমাদের উচিত এই মহান দার্শনিকের চিন্তা ও দর্শনকে সংরক্ষণ করা।’’
ঢাকা/মাহি
আরো পড়ুন