লন্ডনে একা থাকার দিনগুলো (পর্ব-৩)
রিয়াদ আরেফিন রিমন || রাইজিংবিডি.কম
আমি লন্ডনে প্রথমবারের মতো যেই বাসাটি ভাড়া নিয়েছি, সেটি সম্পূর্ণ কাঁঠের তৈরি। এইসব ধরনের বাড়িতে শীত কিছুটা কম লাগে। প্রত্যেকটি বাসা পাশাপাশি ও কাঠামোগতভাবে একই রকম হওয়ার কারণে আমার জন্য প্রথম কিছু দিন খুব বিভ্রান্তিকর ছিল।
আমার বাসায় দুইজন পাকিস্তানি ও একজন ইউরোপিয়ান থাকতো। এই দেশে প্রত্যেকটি বাড়িতেই ফার্নিচার দেওয়া থাকে, তাই কোনো ধরনের কিছু বাড়ির জন্য কেনা লাগেনি। এছাড়া ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদি প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা যাবে।
আমার প্রত্যেকটি হাউজমেট খুবই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন করতো। কেউ যদি রান্না করতো, তার পরের জন বুঝতেই পারতো না যে, কিছুক্ষণ আগে কেউ রান্না করে গিয়েছেন।
এখানে একটা সমস্যা আছে, কাপড় রৌদ্রে শুকানো যেতো না, কারণ রৌদ্রের তাপমাত্রা খুবই হাল্কা ছিল। সকালে কাপর দিলে সেটি শুকাতো পরের দিন বিকেলে। কাপর সহজে ময়লা হতো না, কারণ লন্ডন খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন একটি শহর।
এখানে জিনিসপত্রের দাম মোটামুটি বেশি। আমি যখন বাংলাদেশ ছাড়লাম, তখন আমি এক লাখ টাকা নিয়ে এখানে আসি, কিন্তু এখানে আসার ৪ দিনের মধ্যে আমার মোটামুটি সব টাকা শেষের দিকে চলে আসে। আমার কাছে এখন মাত্র ২৫ পাউন্ড অর্থাৎ মাত্র ৩২৫০ টাকা আছে। আমি একটিও বাজে খরচ করিনি, যা করেছি সব আমার প্রয়োজনীয় খরচ ছিল। আমি ভয়ে ভয়ে দেশে বাবার কাছে ফোন দিয়ে টাকা চাইলাম।
একটা বাঙালি রেস্টুরেন্টে আমার চাকরি হয়েছে। সপ্তাহে ৩ দিন, ৬ ঘণ্টা করে বেতন ধরা হয়েছিল ৪০০ পাউন্ড। আর রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। এখন আমি অপেক্ষা করছি শিক্ষার্থী সোস্যাল সিকিউরিটি নম্বরের, যা হাতে পেলে আমি চাকরিটি করতে পারবো।
লেখক: ব্যারিস্টার এট ল, নর্থাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি, লন্ডন।
আরো পড়ুন