ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ঘুড়ি প্রতিযোগিতায় সেরাদের কথা 

শেখ নাসির উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৫, ১৬ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১২:৪২, ১৬ জানুয়ারি ২০২১
ঘুড়ি প্রতিযোগিতায় সেরাদের কথা 

পৌষের শেষ দিন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় হলিছড়া চা বাগানের পাল টিলায় দেখা যায় শিশু কিশোর ও তরুণ-তরুণীদের আনাগোনা। বাদ যায়নি প্রবীণরাও।

মুহূর্তেই কোলাহলে মুখরিত হয়ে ওঠে চা ঘেরা পাল টিলার চারপাশ। কেউ টিলার স্টল থেকে কিনছেন ঘুড়ি, আবার কেউ বাড়ি থেকে বানিয়ে এনেছেন।  কেউ কেউ এখানেই নিজের হাতে ঘুড়ি ও নাটাই তৈরি করার চেষ্টা করছেন। সেইসঙ্গে বাড়তি আনন্দ যোগ করে ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতা। এরপর চা বাগানের উঁচু টিলা থেকে বিভিন্ন রঙ ও আকারের দৃষ্টিনন্দন ঘুড়ি কুলাউড়ার আকাশে উড়িয়ে দেওয়া হয়। অর্ধশত প্রতিযোগীর মধ্যে চলে ঘুড়ির লড়াই। 

শীতের বিকেল বেলা পিঠার আয়োজন থাকবে না তা কি হয়! ‘পিঠা বাহার’ নামক স্টলে ছিল হরেক রকমের দেশীয় পিঠা। সেখানে শিশুসহ নানা বয়সের মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল। এছাড়াও ছিল দেশীয় জিনিসপত্রের স্টল ও শিশুদের জন্য খেলার আয়োজন। ঘুড়ি উড়ানোর দক্ষতা ও আকর্ষণীয় উপস্থাপনের উপর ভিত্তি করে বিজয়ী পাঁচজন প্রতিযোগীকে পুরস্কার দেওয়া হয়৷ সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বর্ণাঢ্য আতশবাজি এবং ফানুস উড়ানোর মধ্য দিয়ে এই আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে৷

পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে অর্ধশত প্রতিযোগীর অংশগ্রহণে তৃতীয়বারের মতো বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) দিনব্যাপী এই ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করে স্থানীয় সামাজিক সংগঠন প্লাটুন টুয়েলভ। এই উৎসবের উদ্বোধন করেন মৌলভীবাজারের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন এমপি।

এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংস্কৃতির সঙ্গে ঘুড়ির এক নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। ঘুড়ি উৎসব এখন বিলুপ্তির পথে। এখানে এসে আমার ছোটবেলায় ঘুড়ি উড়ানো স্মৃতি মনে পড়ে গেলে। আমি আজকে আসতে পেরে খুবই আনন্দিত। আর আয়োজকদের ধন্যবাদ, তারা ঐতিহ্যকে লালন করছেন। আশাকরি আগামী দিনেও এটা চালু রাখবেন।

ঘুড়ি প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়া তোফায়েল আহমেদ রিফাত বলেন, ঘুড়ি উড়াতে খুব ভালোবাসি। গ্রাম বাংলার এই ঘুড়ি ঐতিহ্য নিয়ে তরুণদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করার জন্য ধন্যবাদ আয়োজকদের।

দ্বিতীয় হয়েছেন রায়হান কাওসার। তিনি বলেন, খুব আনন্দ হচ্ছে আমি প্রতিযোগিতা দ্বিতীয় হয়েছি। দীর্ঘদিন ঘরবন্ধি সময়ের পর এত আনন্দে আমি উৎফুল্ল। আমাদের উচিত ঐতিহ্যকে ধরে রাখা।

আয়োজকরা জানান, দেশীয় সাংস্কৃতি ও প্রাচীন ঐতিহ্য ধরে রাখতে এবং আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতেই তাদের এই প্রয়াস।

প্লাটুন টুয়েলভের সভাপতি মেহেদী হাসান সাদি বলেন, আমাদের সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সবার সহযোগিতা ছিল বলেই সফলভাবে শেষ করতে পেরেছি। এ উৎসব ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

প্লাটুন টুয়েলভের ফেসবুক পেজ-
https://www.facebook.com/1506777556292816/posts/2546749852295576/?app=fbl

লেখক: শিক্ষার্থী, ছাফদার আলী কলেজ। 

টাঙ্গাইল/মাহি 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়