ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

করোনায় নিউজিল্যান্ডে শিক্ষার্থীদের আবাসন খাতে ক্ষতি 

মো. মঈন উদ্দিন সাব্বির  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৮, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১৬:৫৯, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১
করোনায় নিউজিল্যান্ডে শিক্ষার্থীদের আবাসন খাতে ক্ষতি 

করোনা মোকাবিলায় নিউজিল্যান্ড সম্মুখসারির দেশগুলোর একটি। এখন পর্যন্ত দেশটিতে ২৫ জনের মৃত্যু হলেও, প্রথম থেকে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে আক্রান্ত এবং মৃত্যুহার বিবেচনায় দেশটিকে সফলই বলা চলে। তবে শিক্ষা ব্যবস্থাসহ সব সেক্টরে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়েছে দেশটিকে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষার্থীদের আবাসিক খাত। 

হোস্ট ফ্যামিলি নিউজিল্যান্ড এর প্রতিনিধি হুই লি এবং জিওবানা রে বলেন, আমরা বর্তমানে বেশ চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছি। দ্বীপপুঞ্জের এই দেশটিতে স্বাভাবিক সময়ে বিভিন্ন বাড়িতে আমরা ৬০০ শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা করে থাকি যা বর্তমানে সামান্যতে এসে পৌঁছেছে। যদিও স্থানীয় শিক্ষার্থীদের দিয়ে এই ক্ষতি পোষানোর চেষ্টা করছি কিন্ত সেটা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যার তুলনা একেবারেই অপ্রতুল ।

গত জানুয়ারি মাসে নিউজিল্যান্ড সরকার জানায়, তারা দেশের মাটিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ফেরাতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্নাতক ডিগ্রির শেষের দিকে অবস্থানরত এমন ৩০০ শিক্ষার্থীদের এপ্রিল মাসে ফেরানোর মধ্য দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু হবে। প্রথমধাপে এক হাজার শিক্ষার্থীকে ফেরানো হবে। যদিও এর আগে সরকার ঘোষণা দেয় তারা শুধু মাত্র স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরাল মিলিয়ে ২৫০ জন শিক্ষার্থীকেই ফেরার অনুমতি দিবে।

দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, আমারা আশা করছি আসন্ন সেমিস্টারে সবমিলিয়ে দশ হাজার শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষাক্ষেত্রে যোগদান করবে।  যদিও হোম স্টে প্রোগ্রাম তেমন লাভবান হবে বলে মনে করা হচ্ছে না, কারণ অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা নিজেদের আবাসন পরিবর্তন করে সুবিধামত জায়গায় স্থানান্তর হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইংরেজি ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিটিউট অ‌্যাসোসিয়েশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর কিম রেনার বলেন, গত এক বছরে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা এবং সীমান্ত বন্ধ নীতির দরুন আমাদের দেশের ভাষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখিন হয়েছে।  ২০২০ সালের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের খাত থেকে প্রাপ্ত ৫২ মিলিয়ন ডলারের প্যাকেজের আওতায় ভাষা শিক্ষা সেক্টরকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। 

তিনি জানান, আমরা ভাষা শিক্ষা এবং ট্যুরিজম খাতে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় আকর্ষণ করতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা শিক্ষার্থীদের পুনর্বাসনে সরকারি-বেসরকারি এজেন্সিগুলোর সাথেও কাজ করছি ।

বৈশ্বিক মহামারির কারণে দেশটিতে ইতোমধ্যে অনেক ভাষা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে তাদের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। চালু থাকা অনেক প্রতিষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য হারে শিক্ষার্থী কমে গেছে। হুই লি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় যা শিক্ষকসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারিদের চাকরি চলে যাওয়ার মত করুন উদাহরণও তৈরি করে।  করোনা পুর্ববর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের সাহায্যার্থে যেখানে আমাদের ২০ জন কর্মকর্তা ছিলেন বর্তমানে এর সংখ্যা নেমে এসেছে ৩ জনে।  

অবশেষে ধিরে ধিরে শিক্ষার্থীরা ফিরতে শুরু করেছে এবং আমদের যা যা করণীয় তা আমরা অবশ্যই শুরু করব।  আমাদের শিক্ষকরা তাদের শিক্ষার্থীদের স্বাগতম জানাতে প্রস্তুত হচ্ছেন।  প্রাথমিকভাবে আমরা দেশে অবস্থানরত শিক্ষাথীদের কাগজপত্র হালনাগাদকরনে বেশি মনযোগী হচ্ছি। আমরা জানি, শিক্ষার্থীদের ফেরানো গতি মন্থর হবে। কেউই নিশ্চিতভাবেই বলতে পারছি না আমাদের সীমান্তগুলো কখন খুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে আমরা মেনেই নিয়েছি, হয়ত চলতি বছরটা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ছাড়াই আমাদের কার্যক্রমগুলো চালিয়ে যেতে হবে।

সাব্বির/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়