ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

মিস ইউনিভার্সের সেরা দশে ঢাবির মানবিক কন্যা

স্বপ্নিল চৌধুরী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৮, ৫ মার্চ ২০২১  
মিস ইউনিভার্সের সেরা দশে ঢাবির মানবিক কন্যা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের মেধাবী ছাত্রী ফারজানা ইয়াসমিন অনন্যা। এই একটা বিশেষণে অনন্যাকে বিশেষায়িত করা যাবে না। অনন্যার বিশেষণের গল্পের ব্যাপ্তিটা একটু বড়। মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশে ৫০ হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছেন ঢাবির তারুণ্যের এই আইকন।

অন্য ১০ জন প্রতিযোগীর চাইতে অনন্যাকে একটু আলাদা করা যেতেই পারে। কেননা অনন্যা অন্যদের চাইতে এগিয়ে আজকে না হয় সেই গল্পটাই করবো। আজকের গল্পটা ‘কর্মে অনন্য ঢাবির অন্যতম প্রতিভা অনন্যার’। ২০২০ সালে সারা বিশ্ব যখন করোনার থাবায় স্থবির, সবাই যখন ঘরবন্দী। ঠিক ওই সময়ে তিনি নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে ছিলেন। করোনায় ভয়কে উপেক্ষা করে ছুটে গিয়েছেন মানুষের পাশে। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান তিনি। সেই সময়ে সবাই যেখানে জীবনের নিরাপত্তার জন্য ঘর থেকে বের হননি, অনন্যার জন্য ঘর থেকে বের হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোটা মোটেও সহজ ছিল না।

সেই অসাধ্য সাধন করে লকডাউনের শুরুতে ত্রাণ দিয়েছেন ৭০০ পরিবারকে। শুধু সাহায্য করেই থেমে থাকেননি। রাতের বেলায় গরীব-দুঃখী প্রতিবেশীর বাড়ি বাড়ি গিয়েছেন কেউ খাবার সংকটে আছেন কিনা দেখতে। উনি দেখিয়ে দিয়েছেন মানবতার চাইতে বড় কিছু হতে পারে না, এমনকি নিজের জীবনও না।

অনন্যা বলেন, 'অামি মনে করি যেকোনো ক্রান্তিকালে মানুষের পাশে দাঁড়ানো মানুষেরই উচিৎ। আমি এক অনন্যার জন্য যদি কেউ ভালো থাকে, সেটা আমার জন্য সবচেয়ে বড় পাওয়া। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।'

লকডাউনে আর্থিকভাবে সমস্যায় পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ শিক্ষার্থীকে আর্থিকভাবে সাহায্য করেছেন। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ১০০ পরিবারকে ত্রাণের পাশাপাশি আর্থিকভাবে সাহায্য করেছেন। রমজান মাসের শেষ ১০ দিন প্রতিদিন ২০০ পরিবারকে ইফতার দিয়েছেন। বন্যা কবলিত ২০০ পরিবারকে ত্রাণ, আর্থিক সাহায্য, বিশুদ্ধ পানি, সেলাইন দিয়েছেন মানবিক কন্যা খ্যাত ঢাবির এই মেধাবী ছাত্রী।

এতটুকু পর্যন্ত থেমে ছিলেন না অনন্যা। এই শীতেও ২০০ পরিবারের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন। অনন্যা বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তিনি, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ, নারীদের অধিকার ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার। যেখানেই অসঙ্গতি দেখেছেন, প্রতিবাদ করেছেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকেও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এর পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তার উপস্থিতি অনন্যাকে ঢাবিতে দিয়েছে অনেক ভালো অবস্থান। প্রতিভার অধিকারী অনন্যার এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে বাংলাদেশের অনেক পত্রিকায় ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।

তিনি একজন সত্যিকারের অলরাউন্ডার। তার শুভ্রতায় রঙিন হোক চারপাশ, প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হোক কর্মে অনন্য অনন্যাকে দেখে। তিনি এগিয়ে যাবেন তার মেধায়, তার যোগ্যতায়। অনন্যাদের হাত ধরে বাংলাদেশের পতাকা উঁচু হয়ে উঠুক বিশ্বমঞ্চে। তারুণ্যের বাংলাদেশ গড়তে তারা নেতৃত্ব দিক সামনের দিক থেকে। এমনটাই মনে করেন অনন্যার শুভাকাঙ্ক্ষীরা।

ঢাবি/মাহি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়