ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বাংলা সংস্কৃতির ‘বাঙ্গালা’ ফাউন্ডেশন

জাফর আহমেদ শিমুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১২, ১২ মে ২০২১  
বাংলা সংস্কৃতির ‘বাঙ্গালা’ ফাউন্ডেশন

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দেশের এক ঝাঁক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তরুণের প্রচেষ্টায় ২০১৯-সালে যাত্রা শুরু করে বাংলা কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন-বিসিডিএফ। প্রতিষ্ঠানটি আজ দেশীয় সংস্কৃতিকে বুকে লালন করা মানুষের আস্থার জায়গা দখল করে নিয়েছে।

একটি শিশু কবে আর কীভাবে হাঁটি হাঁটি পা পা করে হাঁটতে শেখে, তা আসলে কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারে না। শুধু পরিবারের মানুষ তাকে সাহায্য ও উৎসাহ প্রদান করে। তেমনি একজন স্বেচ্ছাসেবী ও নিঃস্বার্থভাবে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যাওয়া মানুষের কথা বলবো, যিনি এমন একটা পরিবারে জন্মেছেন, যেখানে দেশপ্রেম ও বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতি কাব্য চর্চার কোনো অভাব ছিল না, ছিলো না কোনো বাঁধা। তিনি বাংলা ভাষা সাহিত্যের অন্যতম কবি ‘জাহাঙ্গীরুল আলম’ এর একমাত্র ছেলে শাহাদ শরীফ। তিনি তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন দেশের অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বাঙ্গালা ফাউন্ডেশন’।

বাঙালি সংস্কৃতির যেসব উপাদান আজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে কিংবা বিলুপ্তির পথে, সেগুলোকে যতটা পারা যায় সংগ্রহ ও সংরক্ষণের মাধ্যমে তার চর্চা চালিয়ে যাওয়াই ‘বাঙ্গালা’র মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। এই বাঙ্গালা’র স্বত্বাধিকারী সাহাদ শরীফ। তার বাবা (প্রয়াত কবি জাহাঙ্গীরুল ইসলাম) ছিলেন একজন বাংলদেশের অন্যতম সেরা কবি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। 

তার চাচা বাংলা একাডেমির তালিকাভুক্ত প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য সমালোচক (জামিরুল ইসলাম শরীফ), যিনি বর্তমানে খুবই অসুস্থ, তবুও তিনি সর্বক্ষণ বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে বিশেষ গবেষণায় ব্যস্ত থাকেন। কথায় বলে, বাপ দাদার রক্ত পরবর্তী প্রজন্মে প্রবাহিত হয়। তাই একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, বাবা-চাচাদের অস্থিমজ্জায় থাকা সংস্কৃতি চর্চার স্পৃহা থেকেই শাহাদ শরীফের এমন উদ্যোগ। সেই অনুপ্রেরণা থেকে ২০১৯ সালে অনলাইনের মাধ্যমে প্রকাশ ঘটে ‘বাঙ্গালা’র।

‘বাঙ্গালা’ বাংলাদেশের এমন একটি সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র, যেখানে বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিভিন্ন অনুষঙ্গ নিয়ে চর্চা করা যায়। একার্যক্রম ফেসবুক পেজের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলা ভাষাভাষী বা বাঙালির সাহিত্য-সংস্কৃতিমূলক চিন্তা চেতনার প্রকাশ ও ভাববিনিময়ের মাধ্যমে বাঙালিয়ানার সমৃদ্ধি ঘটানোই এই পেজের মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য।

সম্পূর্ণ অলাভজনক ও স্বেচ্ছাসেবামূলক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ‘বাঙ্গালা’ তার কার্যক্রম চালিয়ে থাকে। বর্তমান বিশ্বের উন্নত প্রযুক্তির যুগে খুব সহজেই একে অপরের সাথে যোগাযোগ ও মেলবন্ধন তৈরির সুযোগ গ্রহণ করে ‘বাঙ্গালা’ বাংলা সংস্কৃতির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধির প্রচেষ্টা নিরলসভাবে চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।

‘বাঙ্গালা’ নামের এই সৃষ্টিশীল ও অলাভজনক, স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠন সম্পর্কে বলতে গিয়ে এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জনাব শাহাদ শরীফ বলেন, বাঙ্গালা আমাদের একটি প্রাণের সংগঠন। আমি বাংলা ভাষার অন্যতম কবি, সাহিত্যিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে গর্বিত। তাই বাংলা ভাষা-সাহিত্য এবং বাংলা সংস্কৃতি সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয়ই আমার কাছে পরম আরাধ্য। 

তিনি আরও বলেন, আমার বাবা ছিলেন কাব্য ও সাহিত্য অন্তঃপ্রাণ একজন মানুষ। যতদিন বেঁচে ছিলেন, সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করে গেছেন কী করে এর উৎকর্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করা যায়। একজন কবি-সাহিত্যিক ও মানবদরদী মানুষের সন্তান হিসেবে বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও সম্মান তুলে ধরতে ও বাংলা ভাষাভাষী অবহেলিত ও অযত্নে বেড়ে ওঠা মেধাবী মানুষকে সব শ্রেণীর বাঙালির নিকট পৌঁছে দিতে আমৃত্যু পরিশ্রম করে যাবো।

ডিআইইউ/মাহি 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়