ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘মেস ভাড়া শঙ্কা’য় জবি শিক্ষার্থীরা

জবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৯, ৯ জুন ২০২১  
‘মেস ভাড়া শঙ্কা’য় জবি শিক্ষার্থীরা

অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ন্যায় স্থবির হয়ে আছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী-ই মনে করছেন, দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো আবাসন প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে। পূর্ণ অনাবাসিক এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বৃদ্ধি করবে। 

জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী আবাসিক ব্যবস্থার জন্য পুরান ঢাকার উপর নির্ভরশীল। আর পুরান ঢাকায় বাসা পাওয়া অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার, ব্যাচেলর শিক্ষার্থীদের জন্য তা আরও বেশি। তারা বলছেন, দফায় দফায় ছুটি বাড়ানোর ফলে আমরা বাসা রাখবো নাকি ছেড়ে দেবো, এনিয়ে অনেক দ্বিধাবোধে ছিলাম। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারে এমন সম্ভাবনায় বাসা নিয়েও পরবর্তী সময়ে ছুটির মেয়াদকাল বাড়ানোর ফলে অনেক শিক্ষার্থীকে বাসা ভাড়া দিয়ে যেতে হয়েছে। যা তাদের পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে বলে অনেকে অভিমত দেন।

গত মঙ্গলবার (৯ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সভায়, জুন মাসের মধ্যে রিভিউ ক্লাস শেষ করা এবং জুলাইতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার পরীক্ষাগুলো নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়।

নীতিগত সিদ্ধান্তের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী ‘মেস ভাড়া নেবেন কি-নেবেন না’ এমন শঙ্কা প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের মত তুলে ধরেন। অনেক শিক্ষার্থী দ্বিধাবোধ থেকে হতাশা সৃষ্টি হচ্ছে বলে মতামত প্রকাশ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মিদুল হাসান বলেন, ‘ইউজিসি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলে আমাদের জন্য পরিস্থিতি কঠিন হয়ে যাবে। হুটহাট বাসা পাওয়া আমাদের জন্য অনেক কঠিন। বার বার মালামাল আনা-নেওয়া করাও কষ্টসাধ্য। নতুন বাসায় ওঠা এবং সেখানের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত থাকতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আবাসিক সমস্যায় নিরাপত্তা দেওয়া হবে, এই ধরনের আশ্বস্ত করলে আমাদের উপকার হতো।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী বিভু দেবনাথ বলেন, ‘বন্ধ হওয়ার পরেও খোলা না খোলার অনিশ্চয়তায় দীর্ঘ দিনের আমি মেস ভাড়া পরিশোধ করেছি। ঢাকায় গিয়ে সবাই হঠাৎ করেই বাসা পাবেন না। একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ের জন্য অপেক্ষা করছি। ১৩ তারিখ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত দিলে ১৫ দিনের মধ্যে বাসা খুঁজতে হবে। আবাসিক ব্যবস্থা করা কষ্ট হলেও পরীক্ষা দিতে চাই। কিন্তু মেস নেওয়া নিয়ে আমাদের অনেককেই নিরাপত্তাহীনতায় পড়তে হয়। জুনের বাকি ১৫ দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী এই ধরনের পরিস্থিতির শিকার হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের নিরাপত্তা দেবে, এমন নিশ্চয়তা দিলে আমাদের দুশ্চিন্তা কিছুটা লাঘব হতো।’

এব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সরকার আলী আক্কাসের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘১৩ তারিখ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলে শিক্ষার্থীরা ১৮ দিনের মতো সময় পাবে, তখন বাসা নিতে পারবে, সমস্যা হবে না। ১৩ তারিখের আগে এই তিন দিন অস্থির হওয়ার কোনো কারণ নেই।’

এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করা উচিত। পরীক্ষার প্রস্তুতির মধ্যে যা যা পড়ে, যেমন- বাসা ভাড়া নেওয়া, পড়াশুনায় মনোনিবেশ হওয়া ইত্যাদি যাবতীয় কাজ শুরু করা উচিত। ১৩ তারিখ একাডেমিক কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু আমি মনে করি শিক্ষার্থীদের আগাম প্রস্তুতি শুরু করা উচিত।’

মেস/বাসা ভাড়া নেওয়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের ঝামেলার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকার বাড়িওয়ালারা যথেষ্ট ভালো, আমাদের শিক্ষার্থীরাও ভালো। অতীতেও সবার সহযোগিতায় আমরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি, ভবিষ্যতেও যদি কোনো রকমের সমস্যা হয়, তাহলে আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করবো।’

সৌদিপ/মাহি 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়