ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

করোনাকালে জাপানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল মাত্র ২ মাস 

রাহমান মনি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০০, ২০ জুন ২০২১   আপডেট: ১৬:১২, ২০ জুন ২০২১
করোনাকালে জাপানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল মাত্র ২ মাস 

করোনা মহামারিতে বর্তমানে সারাবিশ্ব বিপর্যস্ত। প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুহার। প্রতি দেশেই কম-বেশি লকডাউন আরোপের মাধ্যমে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্যান্য দেশের মত ভাইরাসের প্রকোপ থেকে জাপানও মুক্ত নয়। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন উন্নত দেশ হওয়া সত্ত্বেও করোনা থেকে মুক্ত হতে পারছে না দেশটি। তবে, সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশটির সাফল্য উল্লেখযোগ্য।

কোভিড-১৯ সংক্রমনের পর থেকে দেশটি পূর্ণ লকডাউনের পথে হাটেনি। শুধুমাত্র অধিক আক্রান্ত অঞ্চলগুলোতে জরুরি অবস্থা জারির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে দেশটি এবং এক্ষেত্রে তারা সফল। মানুষের সচেতনতা ও সহযোগিতাই এই নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে।

তবে, ভ্যাকসিন কার্যক্রমে অন্য দেশের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে জাপান। দেশটিতে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে টিকাগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) অবধি ২ কোটি ৭০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। চলতি মাসে মোট ৪ কোটি টিকা প্রদান এবং আগামী নভেম্বরের মধ্যে দেশের সবাইকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সরকার।

জাপানে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি। এই পর্যন্ত দেশটিতে মোট পাঁচবার অঞ্চলভিত্তিক জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। জরুরি অবস্থা চলাকালে আওতাধীন অঞ্চলসমূহের সিনেমা হল, রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান পূর্ন অথবা সময়সীমা সাপেক্ষে অর্ধেক বন্ধ রাখা হয়।

জরুরি অবস্থার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দীর্ঘমেয়াদী তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমগুলো চালু রাখা রয়েছে। যদিও আগের মত জাঁকজমকপূর্ণ ও উৎসব মুখর পরিবেশ নেই। তার পরিবর্তে শিথিল ও অনাড়ম্বর পরিবেশ বজায় রাখা হয়েছে।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে থাকা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসে ১৭৫ জন করোনায় আক্রান্তের খবর প্রচার হলে ২ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় মেয়াদে ২৬ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বসন্তকালীন ছুটি হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সময়সীমা বর্ধিত করা হয়। করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করলে তৃতীয় মেয়াদে ৬ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরই মধ্যে নতুন বর্ষে উত্তীর্ণ শিশুদের স্বাগতম জানানোর জন্য ৭ এপ্রিল একটি সাদামাটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

গত বছরের ১ জুন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হয়। পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্বে  থেকে প্রথমে কিছুদিন ভিন্ন ভিন্ন শিফটে ভাগ করে ক্লাস নেওয়া হয়। গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষ হবার পর স্কুলগুলোতে পুরোদমে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে যা এখনও অব্যাহত আছে। সবধরনের শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক চললেও শিক্ষার্থীদের করোনায় আক্রান্ত হবার খবর পাওয়া যায়নি।

লেখক: প্রবাসী, টোকিও, জাপান।

ঢাকা/সাব্বির

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়