‘ভেড়ার অধিক মাংস উৎপাদনে দানাদার খাদ্যই যথেষ্ট’ 

দীর্ঘ তিন বছরের গবেষণায় আমরা দেখেছি পরিক্ষিত পদ্ধতিতে ভেড়া উৎপাদন প্রকল্প এলাকাগুলোতে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। প্রকল্প এলাকায় ১.৫ শতাংশ দানাদার খাদ্য প্রয়োগে ভেড়ার মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। স্টল ফিডিংয়ের চেয়ে মাঠে চড়ানো ভেড়ার বিকাশ বেশি হয়েছে। খোজা ভেড়ার তুলনায় অখোজা ভেড়ার উৎপাদন দক্ষতা বেশি ও ৯-১২ মাসের ভেড়ার মাংসের পুষ্টিগুণ ভালো। এছাড়া খামারিদের সঞ্চয় ও সম্পদ বৃদ্ধির পাশাপাশি আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। 

‘পরিক্ষিত পদ্ধতিতে খামারে ভেড়া উৎপাদনের উপযোগিতা নির্ধারণ’ শীর্ষক গবেষণা প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক ড. আবুল হাশেম। 

সোমবার (২১ জুন) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন অনুষদের সম্মেলন কক্ষে ওই প্রকল্পের সমাপনী কর্মশালা হয়।

তিনি আরও বলেন, বিএলআরআই এর উদ্ভাবিত পদ্ধতি সংস্কারকরণ, বাচ্চা ভেড়ার মৃত্যুহার কমানো, মাসল থেকে মাংস রুপান্তর ও সঠিকভাবে বাজারজাত করতে পারলে ভেড়া পালনে দারিদ্র্যতা বিমোচনের পাশাপাশি দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাবে। এজন্য কৃষক ও গবেষকদের মাঝে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপনে ‘আদর্শ ভেড়া উৎপাদন গ্রাম’ গঠনের লক্ষ্যে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

কর্মশালায় পশুবিজ্ঞান বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মুক্তা খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। এছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন বাকৃবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস মাহফুজুল বারি, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের প্রাণিসম্পদ বিশেষজ্ঞ ড. মো. মেহেদি হোসেন, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল জলিল।

আরও ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবু হাদী নূর আলী খান, পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। কর্মশালায় প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) কার্যনির্বাহী পরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকরা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

প্রকল্পের গবেষকরা জানান, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) অর্থায়নে ভেড়া উৎপাদন গোষ্ঠী তৈরি করা, মাংস জনপ্রিয়করণ ও বাজার সৃষ্টি করা এবং গ্রামীণ কৃষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ভেড়া পালনের প্রভাব পর্যালোচনা করার লক্ষ্যে গবেষণা প্রকল্পটি শুরু হয়।

প্রকল্প এলাকা হিসেবে শেরপুর সদর ও নালিতাবাড়ী উপজেলা, রাজশাহীর পবা ও গোদাগাড়ী উপজেলা এবং নোয়াখালির কোম্পানিগঞ্জ ও সুবর্ণচর উপজেলাকে নির্বাচন করা হয়। গবেষণার জন্য প্রতিটি এলাকা থেকে ৬০ জন খামারিকে নির্বাচন করা হয়। এসময় খামারিদের ভেড়া পালন ও ব্যবস্থাপনায় তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দেন গবেষক দল।