অনলাইনে পরীক্ষার কথা ভাবছে না ৭ কলেজ 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের চূড়ান্ত পরীক্ষা অনলাইনে নেওয়ার কথা ভাবছে না কর্তৃপক্ষ। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর সশরীরে পরীক্ষার কথা ভাবছেন তারা। একাধিক কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ১৫ জুন থেকে সশরীরে স্থগিত পরীক্ষা এবং ১ জুলাই থেকে করোনা পরিস্থিতির উপর বিবেচনা করে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল। সাত কলেজ সমন্বয়ক ও ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার জুনেই স্থগিত পরীক্ষা শুরুর আভাস দিলেও পরীক্ষার শুরুর বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি সাত কলেজ।

কোভিড পরিস্থিতিতে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান৷ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সেশনজট কমাতে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে পরীক্ষা শুরু হয়েছে৷ তবে সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থগিতও হয়েছে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা৷ স্থগিত রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাত সরকারি কলেজের পরীক্ষাও৷ সাত কলেজের স্থগিত ও নতুন করে শুরুর প্রস্তাবনায় থাকা পরীক্ষাগুলো জুনের প্রথম সপ্তাহে শুরুর আভাস দিয়েছিলেন সাত কলেজের সমন্বয়ক (ফোকাল পয়েন্ট) ও ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার৷ তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটি আর সম্ভব হচ্ছে না৷ এদিকে অনলাইনে পরীক্ষা নিতে অনেক জটিলতা আছে উল্লেখ করে এর বিপক্ষে মত দিয়েছেন সাত কলেজের কয়েকজন অধ্যক্ষ৷

মঙ্গলবার (২২ জুন) সাত কলেজের কয়েকজন অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এই মুহূর্তে অনালইনে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানান তারা৷ আর এতে জটিলতাও বেশি৷ সেইসঙ্গে নেই প্রস্তুতি৷ আর অনলাইনে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে দীর্ঘ সময় লাগবে৷ আর এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে সশরীরে পরীক্ষা শুরু সম্ভব বলেও মনে করছেন তারা ৷

কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমেনা বেগম বলেন, আমরা চেয়েছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়ে নেওয়ার জন্য। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে এটি আমাদের জন্য আবারও কঠিন হয়ে গেলো। আর পরীক্ষার ব্যাপারে এককভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। সাত কলেজের সিদ্ধান্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের ব্যাপার রয়েছে।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ মহসীন কবির বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা অনলাইনে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছি। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার জন্য যে সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছিলাম, সেটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমরা যত দ্রুত সম্ভব পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব। আর আমাদের তো একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। কারণ আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। আর অনলাইন পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে কিন্তু বড় ধরনের একটা প্রস্তুতির ব্যাপার রয়েছে। যা সাত কলেজ প্রশাসনের নেই, সেটিও সময় সাপেক্ষ।

ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য বলেন, আগে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, সেটি এখন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা আবারও বসবো এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো এবং সম্ভাব্য একটি তারিখ নির্ধারণ করবো, যাতে শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিতে পারে। তাছাড়া আমরা অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার কথাও ভাবছি না, কেননা আমাদের যে বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থী, তাদের অনলাইন পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা এই সপ্তাহে এই বিষয়টা নিয়ে বসবো।