ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ প্রান্তে

স্বপনীল আঁকাশ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৫, ১২ জুলাই ২০২১  
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ প্রান্তে

ছাত্র জীবনের সবচেয়ে আনন্দের সময়ের মধ্যে অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। ভার্সিটি জীবনের প্রায় শেষ প্রান্তে অবস্থান করছি। বিশ্ববিদ্যালয় শেষ সেমিস্টারের রেজিস্ট্রেশন সেদিন সম্পন্ন করলাম। ইন্টারমিডিয়েট অনেক আগেই শেষ হয়েছে। এবার রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে অনার্স লাইফেরও ইতি ঘটতে যাচ্ছে। সময় এত দ্রুত চলে গেলো! ভাবতেই কেমন আবেগী হয়ে যাচ্ছি। 

মনে হচ্ছে এইতো সেদিন ইউনিভার্সিটিতে এডমিশন নিয়েছি। অথচ আজ চার বছর। ছেড়ে যাওয়াও সময় হয়েছে। পুরাতন খাতাগুলো খুলে দেখলাম প্রথম সেমিস্টারে আমাদের প্রথম ক্লাসটা নিয়েছিলেন শ্রদ্ধেয় ফাহিম ম্যাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাস এত বেশি আবেগ আর উচ্ছ্বলতা ছিল, ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আজও ঠিক মনে আছে, তিনি পড়িয়েছিলেন হিউম্যান এনাটমির ব্যাসিক পার্টগুলো।

করোনার এই সময়ে প্রায় দেড় বছর যাবত অনলাইনে ক্লাস করছি। ভেবেছিলাম হয়তো পরিস্থিতি ঠিক হলে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ ক্লাসগুলো বন্ধুদের সাথে আড্ডা/ঘুড়াঘুড়ি করে কাটাবো। শত চেষ্টা করলেও আর কোনো দিন সম্ভব হবে না। পাশাপাশি একত্রে বসে কোনো দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার ম্যাডামদের কোনো ক্লাস করতে পারবো না। পারবো না বন্ধুদের সাথে ক্লাসে বসে দুষ্টুমি করতে। যদিও আমি ব্যাকবেঞ্চার স্টুডেন্ট হিসেবে পরিচিত। তবুও ক্লাসের প্রথম সিটটা সবসময় আমার দখলে থাকতো। ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে মোবাইলে বন্ধুদের দুষ্টুমি করার ছবি তোলা কিংবা অদ্ভুদ ধরনের এডিট করে সবাইকে হাসানো, এই সব কিছুই একসময় হয়ে যাবে স্মৃতি। কোনোটাই আর হয়ে উঠবে না।

আজ থেকে ঠিক ছয়মাস পর কোনো ঝামেলা থাকবে না, সকালে ঘুম থেকে ওঠার যন্ত্রণা থাকবে না, সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ক্লাস, ল্যাবের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা, দেড়িতে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়ার জন্য স্যার-ম্যাডামদের ধমক খাওয়া। এসব কিছুই হয়ে উঠবে একসময় শুধুই স্মৃতি।

বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো চার বছরের রঙিন সময়গুলো সব এখন স্মৃতিময়। ডিপার্টমেন্ট থেকে বনভোজনের উদ্দেশ্যে বাসে চড়ে চিৎকার করতে করতে যাওয়া, কখনো দল বেধে ঘুড়তে যাওয়া আর কোনো দিন হবে না। জীবন কারও জন্য থেমে থাকে না, সবাই নিজ নিজ গন্তব্যে এক সময় পৌছায়। হেঁটে যাই জীবনের একপ্রান্ত হতে অন্যপ্রান্তের দিকে ক্রমশ, ক্রমাগতভাবে অনন্তের দিকে। হয়তো আমাদের সমাজ জীবনে ও ব্যক্তিজীবনে এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আসবে, কিন্তু বন্ধুদের ঘিরে কিংবা ক্যাম্পাসের এই স্মৃতিমধুর সময়গুলো আর কোনো দিন ফিরে আসবে না।

চার বছরের বন্ধুত্ব টিকে থাকুক আজীবন। কর্মজীবন এবং পারিবারিক ব্যস্ততার মাঝেও যেন বন্ধুত্বের বন্ধন ছিন্ন না হয়, এমনটিই প্রত্যাশা।

লেখক: শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

ডিআইইউ/মাহি 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়