ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

এলাকাবাসী বর্জ্য ফেলছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে

জাবি সংবাদদাতা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ১৭ জুলাই ২০২১  
এলাকাবাসী বর্জ্য ফেলছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের এলাকায় বসবাসকারীরা নিজ ঘরে বসেই গৃহস্থালির বর্জ্য নিক্ষেপ করছেন ক্যাম্পাসের ভেতরে। এতে ভ্রূক্ষেপ নেই প্রশাসনের-এমনই অভিযোগ করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।  

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, এইসব বর্জ্য ফেলতে নিচে নামারও প্রয়োজন হয় না তাদের। তিন-চার তলা থেকে রুমে বসেই নিক্ষেপ করছেন তারা। মনে হচ্ছে, বিশ্বিবদ্যালয় যেন তাদের ময়লা ফেলার জায়গা! 

অভিযোগের ভিত্তিতে বেশ কিছু দিন পর্যবেক্ষণে রাখার পর বিষয়টির সত্যতা মিলেছে। এমন দৃশ্যের দেখা মিলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলাভবন, হাজির পুকুরপাড়সহ বেশ কয়েকটি প্রাচীর সংলগ্ন এলাকাতেই। 

দেখা গেছে, পুরাতন কলাভবন প্রাচীর সংলগ্ন বাড়িগুলো থেকে গৃহস্থালির বর্জ্য নিক্ষেপ করা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে। এমনকি বাড়ির তিন-চার তলা থেকে গৃহস্থলির বর্জ্য ঘরে বসেই নিক্ষেপ করা হচ্ছে ক্যাম্পাসে। ময়লার স্তূপ জমে আছে সেখানে। মাসের পর মাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে এভাবে বর্জ্য ফেলে আসছেন ওই বাসায় বসবাসকারীরা। দুর্গন্ধযুক্ত পানি জমে থাকায় মশা, মাছি ভোঁ ভোঁ করছে। বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলার কিংবা নির্দিষ্ট স্থানে রাখার নিয়ম থাকলেও ওই বাড়িগুলোতে দেখা যায় না এমন কোনো উদ্যোগ। এদিকে তাদের বর্জ্য রাখার নেই কোনো নির্দিষ্ট স্থান। 

এ ব্যাপারে ওই বাসাগুলোতে বসবাসকারীদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী। আমরা চাই না এভাবে বর্জ্য ফেলতে, আমাদেরও খারাপ লাগে। এটা আমাদের জন্যও সমস্যাজনক। প্রচুর মশার উৎপত্তি হয় এখান থেকে; দুর্গন্ধও আসে।  কিন্তু বাড়ির মালিক বর্জ্য ফেলার জন্য রাখেননি কোনো নির্দিষ্ট স্থান, কোনো ভ্যানও আসে না এসব বাড়িতে। ক্যাম্পাসে ময়লা ফেলা যায় বলেই হয়তো তারা অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ময়লা ফেলার ভ্যান রাখেন না। 

এ বিষলে এলাকার একজন বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, যারা একথা বলেছে তারা মিথ্যা বলছে। আমরা ভ্যান রেখেছিলাম কিন্তু আশেপাশের অন্যরা ভ্যান না রাখাতে তারা একটা বাড়ির জন্য ময়লা নিতে আসে না। এখানের আশেপাশের কোনো বাড়ি থেকে বর্জ্য নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো ভ্যান রাখা হয় না। সবাই ক্যাম্পাসে ফেলেন, তাই আমরাও সেখানে ফেলি।

একই ঘটনার দেখা মিলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ইসলামনগর হাজির পুকুড়পাড় সংলগ্ন এলাকায়। ওই বাড়িগুলো থেকেও বর্জ্য নিক্ষেপ করা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে।  অপরিচ্ছন্ন এইসব এলাকা হতে পারে মশক প্রজননকেন্দ্র তথা মশাদের আবাসস্থল, এমনটাই মিলছে বিভিন্ন গবেষণায়।

এবিষয়ে গবেষক ও প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, এসব ময়লার স্তূপে যদি ভাঙা কোনো পাত্র থাকে, তবে সেটি হবে বিপদজনক। কারণ, এসব পাত্রে পানি জমে জন্ম নিতে পারে এডিস মশা। তাছাড়া প্রচুর কিউলেক্স মশা জন্মায় সাধারণ ময়লার স্তূপে, যেটা বিভিন্ন রোগ ছড়াতে পারে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানরতদের জন্য বিপদজনক। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (এস্টেট) মো. আবদুর রহমান বলেন, এটা তো খুবই বিপদজনক। এলাকাবাসী এখানে এতদিন ধরে ময়লা ফেলায়, এটা তো কখনো জানতামই না। আমি এক্ষুণি লোক পাঠাচ্ছি এবং রেজিস্ট্রারের সাথে কথা বলছি বিষয়টি নিয়ে। এটা খুবই অপমানজনক আমাদের জন্য। এটা অপরাধ। 

তাজুল/মাহি 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়