ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

হাজারো স্বপ্নের ঠিকানা জবি

মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫৫, ২১ অক্টোবর ২০২১  
হাজারো স্বপ্নের ঠিকানা জবি

পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম দিবস ছিল ২০ অক্টোবর। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই দিনটিকে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। নানারকম প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এখন দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। গৌরব ও সাফল্যের এত কম সময়ে ক্যাম্পাসের অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও দেশে উচ্চশিক্ষা প্রসারে বিশ্ববিদ্যালয়টি এক অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন করে আসছে। 

এবারের দিবস নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর ভাবনা, প্রত্যাশা ও অভিব্যক্তি তুলে ধরেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ।

বাঙালির সংস্কৃতি চর্চার আঁতুড়ঘর জবি

একটি সদ্য প্রস্ফুটিত প্রাণের নাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে বাংলাবাজারে গড়ে ওঠা ১৫০ বছরের পুরাতন দেশের প্রাচীনতম এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অতীতকাল থেকেই বাঙালির শিক্ষা, সংস্কৃতি, সংগ্রাম, ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক হিসেবে আলো ছড়িয়ে আসছে। বাঙালির সাংস্কৃতিক চর্চার আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত এই বিদ্যাপীঠ সীমিত সময়ের মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে রোল মডেল হিসেবে পরিণত হয়েছে। 

আবির হাসান সুজন, শিক্ষার্থী, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগ

সম্ভাবনাময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় 

ব্যস্ত শহরের শান্ত বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আয়তনে ছোট হলেও এখানে প্রতিনিয়ত অধিকতর প্রাণসঞ্চার হয়। এখানকার ১৫ হাজার শিক্ষার্থী জানে জীবন সংগ্রামের ইতিহাস, সাহসিকতার গল্প। ক্লাসরুম, গণলাইব্রেরি, কাঁঠালতলা, শহীদ মিনার, শান্তচত্বর, ক্যাফিটিরিয়া, টিএসসি সর্বত্রই তাদের পদচারণায় উষ্ণ থাকে। এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগের দূরত্ব কম হওয়ায় জগন্নাথে সব শিক্ষক শিক্ষার্থীর মাঝে এক মেলবন্ধন রয়েছে। তাই পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পরিবার মনে হয়। যে পরিবারটি বিভিন্ন আনন্দ-অনুষ্ঠানে একসঙ্গে মেতে ওঠে। প্রিয় এই বিদ্যাপীঠটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গুটি গুটি পায়ে সতের বছরে পদার্পণ করল। অল্প সময়ের এ যাত্রায় জগন্নাথের মেধাবী শিক্ষার্থীরা দেশব্যাপী প্রশাসনিক কার্যক্রমে ছড়িয়ে পড়ে সাফল্যের চিহ্ন রাখছে। 

রুকাইয়া মিজান মিমি, শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ

এগিয়ে যাক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

একটি নাম, একটি হৃদস্পন্দন, একটি অনুভূতি। হাজারো স্বপ্নের সারথীর, পথ পাড়ি দেওয়ার এক সোপান। হাজারো তরুণ-তরুণীর প্রতিদিনের রুটিন এই ক্যাম্পাস, এই শান্ত চত্বর, এই কাঁঠালতলা। মাত্র ৭.৫ একরের এই ছোট ক্যাম্পাসটি আমাদের। কিন্তু ভ্রাতৃত্বের বন্ধন হাজার হাজার একরের ক্যাম্পাসধারীদের চেয়েও অনেক অনেক বেশি। বার বার অবহেলিত জবি থেমে যায়নি। সেই অবহেলাকেই করেছে শক্তিতে রূপান্তর, হয়েছে আত্মশক্তিতে বলীয়ান। 

শাহীন আলম প্রিন্স, শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ

আমার পরিচয় আমি গর্বিত জবিয়ান

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আমার কাছে একটা ভালোবাসা আর আবেগের নাম। বিশ্ববিদ্যালয় আমার প্রাণের স্পন্দন। এখানকার একজন ছাত্রী হতে পেরে আমি নিজেকে গর্বিত মনে করি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছেটা জেগেছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় থেকে। কোনো এক শীতের ঝরাপাতা হয়ে আমার আগমন ঘটেছিল এর প্রাঙ্গণে। জবি যেন আমাকে বরণ করে নিয়েছিল পরম মমতায়। ক্রমবর্ধমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে। মূলত বিশ্ববিদ্যালয় দিবসটি প্রতি শিক্ষার্থীর কাছে আনন্দের ও গৌরবের দিন। শুভ জন্মদিন প্রিয় প্রতিষ্ঠান।

সাঈমা আক্তার, শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ

হাজারো স্বপ্নের ঠিকানা জবি

জগন্নাথের ১৬তম জন্মদিন যেন হাজারো প্রাণের বেড়ে উঠার একটি দিন। ক্যাম্পাসের জন্মদিন প্রতিটা শিক্ষার্থীদের জন্য এক আনন্দ ও প্রত্যাশাময় দিন। ভালোবাসার আরেক নাম হলো জবি। ভাবতেই আবেগে আপ্লুত হই আমি একজন গর্বিত জবিয়ান। প্রতিবছর ২০ অক্টোবর জাঁকজমকপূর্ণভাবে দিনটি উদযাপিত হলেও গত করোনাকালীন সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন করা হয়ে উঠেনি। এবছর আবারও দিনটি উদযাপন হয়েছে নানা উৎসবের আমেজে, নিত্য-নতুন নান্দনিকতায়।  

নিপা রানী সাহা, শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ

শিক্ষার্থীদের পাঞ্জেরী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

বুড়িগঙ্গা নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে গৌরবোজ্জল ও সমৃদ্ধ ইতিহাস। বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা ও ১১ দফার আন্দোলন এবং উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলনের ইতিহাসে জগন্নাথের রয়েছে অবদান। দেশের সব সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের লালনকারী প্রতিষ্ঠানরূপে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আপন মহিমায় সমুজ্জল। শিক্ষা ব্যবস্থা সমৃদ্ধ হয়ে আরও অনেক গুণীজনের জন্মস্থান হোক প্রাণের এই বিদ্যাপীঠ, বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে এটাই প্রত্যাশা। 

শেখ শাহরিয়ার হোসেন, শিক্ষার্থী, সমাজকর্ম বিভাগ

সগৌরবে টিকে থাকুক প্রাণের বিদ্যাপীঠ

জীবনে যা কিছু আমাদের প্রাপ্তি, যা কিছু আমরা অর্জন করে থাকি তার সবকিছুর সাথেই বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগসূত্র থাকে। আর তাই প্রতিটি শিক্ষার্থীর অন্যতম স্বপ্ন থাকে স্বনামধন্য ও গৌরবময় কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের। কালের পরিক্রমায় উচ্চশিক্ষার জন্য দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। সেগুলোর মধ্যেই একটি হলো আমাদের প্রাণের বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস নিয়ে নানা পরিকল্পনা থাকলেও গত বছর করোনা মহামারি কেড়ে নিয়েছিল সব প্রফুল্লতা। তবে এবছর আবারো প্রাণের বিদ্যাপীঠ নতুন সাজে মুখরিত হয়ে উঠেছে। এ শিক্ষাঙ্গনকে আঁকড়ে ধরেই আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর স্বপ্ন দেখি। 

সিদরাতুল মুনতাহা, শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ

চির অমর হোক প্রিয় ক্যাম্পাস জবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৬ বছরেই প্রাপ্তির খাতাটা বেশ ভারী করে তুলেছে। প্রাণের এ বিদ্যাপীঠটি স্বমহিমায় উজ্জীবিত। পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম সারিতে অবস্থান জবির। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নানা সাফল্য অর্জনের ধারাবাহিকতায় দেশ ও দেশের বাইরে ছড়িয়ে দিচ্ছে এর সুনাম। বিসিএসসহ সব ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছে জবি শিক্ষার্থীরা। 

সব ধরনের সমস্যার সমাধান ঘটিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিণত হবে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর রোল মডেল, সেই প্রত্যাশা করছি। জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় কাটানোর সুযোগ হোক আমাদের প্রিয় ক্যাম্পাসে।

মাহমুদা আহমেদ মুক্তি, শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ। 

/মাহি/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়