ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

পাথর কুড়িয়ে পড়ার খরচ জোগাচ্ছে ছোট্ট সাহেবা  

মেহেদী হাসান শিয়াম, চাঁপাইনাববগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪০, ১৮ জানুয়ারি ২০২২   আপডেট: ১২:৪১, ১৮ জানুয়ারি ২০২২
পাথর কুড়িয়ে পড়ার খরচ জোগাচ্ছে ছোট্ট সাহেবা  

পাথর কুড়িয়ে রাস্তার পাশে জমা করছিলেন সাহেবা ও তার মা শলোকী বেগম। দেখা হতেই এক মুখ হাসি নিয়ে জানতে চাইলেন কোনো প্রয়োজন আছে কিনা। আমিও মাথা নেড়ে উত্তর দিলাম, আছে। তারপর শুনলাম তাদের হার না মানা জীবনের গল্প। সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমস অফিসের সামনে মা-মেয়েকে পাথর কুড়াতে দেখা যায়।

সাহেবার বাবা মোহাম্মদ আলী খান। পেশায় তিনি ভ্যানচালক। তারা দুই বোন আর তাদের বাবা-মা। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে। পাথর কুড়ানোর কারণ জানাতে চাইলে শলোকী বেগম বললেন, অভাবের সংসার। সাহেবা পড়ালিখা করতে চায়। কিন্তু যেখানে সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে কিভাবে পড়ালিখার খরচ যোগান দেবো। সেই ভাবনা থেকে সকাল থেকে সন্ধ‌্যা পর্যন্ত পাথর কুড়াই।

তিনি আরও বললেন, প্রতিদিন ভারত থেকে ট্রাকে করে কয়েক রকমের পাথর আসে এ বন্দরে। মা ও মেয়ে মিলে গড়ে প্রতিদিন ৩ থেকে ৫ ডালি পর্যন্ত পাথর কুড়াই। বাড়িতে এনে পরিষ্কার করে সেগুলো বিক্রি করি। রকম ভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে কিনে নেয় পাথর আমদানি কারকরা। তবে বেশির ভাগ সময়ে একট্রলি পাথর ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারি। একসাথে টাকাটা হাতে পেলে সংসারের বিভিন্ন কাজে লাগাতে পারি।

শলোকী বেগম কুড়ানো পাথর বিক্রির টাকা কোথায় ব্যবহার করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, সাহেবার পড়ালিখার জন্য টাকাগুলো বেশি ব্যয় করা হয়। আর যে টাকা বাকি থাকে, সেটা দিয়ে সংসারের কাজে ব্যয় করি।

সাহেবার বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলার বালিয়াদিঘির এলাকায়। সে বালিয়াদিঘি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। করোনার সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সকাল থেকে সন্ধ‌্যা পর্যন্ত বাড়ির সব কাজে তার মাকে সহাযোগিতা করতো। এর আগে কুড়ানো পাথরের টাকা দিয়ে স্কুলের ভর্তি ফি ও ঈদের জামা কাপড় কিনেছে সে। স্কুল খোলার দিন ক্লাস করে, আর বাকি দিনগুলো সে পাথর কুড়ায়। 

সাহেবা বলে, আমি পাথর কুড়াই, আর সেগুলো বিক্রি করি। যে টাকা পাই, সেটা দিয়ে পড়ালিখা আর সংসারের কাজে ব্যয় করে মা।

/মাহি/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়