ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বৃষ্টিস্নাত দিনে বেরোবির সৌন্দর্য

বিথী হোসাইন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:১৫, ২৭ জুন ২০২২   আপডেট: ১৮:১৭, ২৭ জুন ২০২২
বৃষ্টিস্নাত দিনে বেরোবির সৌন্দর্য

‘এমন দিনে তারে বলা যায়/ এমন ঘন ঘোর বরিষায়…’ কবিগুরুর এই লাইন দুটি মনে করিয়ে দেয় বর্ষার আবেদনময়ী রূপ। ঋতু পরিক্রমায় গ্রীষ্মের প্রখরতা শেষে আসে বর্ষাকাল। বাংলা ক্যালেন্ডারের দুই মাস আষাঢ়-শ্রাবণ নিয়ে বর্ষা তৃষ্ণার্ত বসুন্ধরাকে নব যৌবনে পরিপূর্ণতা বয়ে আনে। অঝোর ধারার বৃষ্টি পিঠে করে নিয়ে আসে পরিবেশের সজীব কোমলতা। বর্ষাকালে কবি-সাহিত্যিকরা সাহিত্য রচনার রসদ বলে মনে করেন।  

আষাঢ়ের শুরুতে সেজেগুজে নতুন রূপ নিচ্ছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাসে । বৃষ্টি হলেই যেন ৭৫ একরের ভূমিতে ছাড়িয়ে যায় একরাশ মুগ্ধতা জড়ানো মায়া আর ভালোবাসা। ঝুম বৃষ্টির দিনে টাপুর টুপুর শব্দে ৩৬ হাজার বৃক্ষের যাদু ঘরে যেন নৈসর্গিক দৃশ্যে ফুটে ওঠে। বৃষ্টি শেষে স্নিগ্ধ আকাশ যেন সবুজের উপর ঢেলে দেয় এক গুচ্ছ সাদা মেঘ। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে প্রতিটি বৃষ্টির ফোটা শিহরিত করে মন।

সেজেগুজে তৈরি হয় প্রেমমোহিত বৃষ্টি বাদলার দিনে কৃষ্ণচূড়া সড়ক, দেবদারু সড়ক, বিজয় সড়ক, শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বর, ক্যাফেটেরিয়ার মুক্ত মঞ্চ, ভিসি সড়কের দুপাশ, বঙ্গবন্ধু হলের সম্মুখ, গগন-চুম্বী লাল সাদার দালানগুলো, স্বাধীনতা স্মারক, শহীদ মিনার। প্রকৃতির রং-বেরঙের ফুল- কৃষ্ণচূড়া, জারুল, সোনালু, হাসনাহেনা, কাঠগোলাপ,বেলী, নয়নতারা, লতা-পাতা,ইত্যাদি।

এক পশলা বৃষ্টি ক্যাম্পাসের কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য দ্বিগুণ রূপে ফুটিয়ে তোলে। জারুলের বেগুনী রঙের আভা আর বৃষ্টি শেষে নীলাভ আকাশ মিশে একাকার হয়ে যায়। এ যেন দুটি হৃদয়ের এক আসাধারন মেল বন্ধন। এই বৃষ্টিস্নাত সকাল শিক্ষার্থীদের কাছে ঘুমের রাজ্য হলেও বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ক্লাসের জন্য ছুটে চলে। এমন বর্ষার দিনে শিক্ষার্থীরা কোলাহল মুখরিত পরিবেশ থেকে একটু জিরানোর সুযোগ পায়। তাদের কাছে কর্মব্যস্ত জীবনের বিরতিকাল বর্ষা ঋতু। অঝোর বৃষ্টির দিন যেন আড্ডা বা খোশ গল্পে মেতে ওঠার উপযুক্ত সময়। তাছাড়া কখনো চলে গানের আসর, কখনো বা খিচুড়ি রান্না। আবার অনেকেই প্রিয় বই নিয়ে হারিয়ে যায় অজানা রাজ্যে। ফুটবলপ্রেমী শিক্ষার্থীরা বৃষ্টি উপভোগ করতে মাঠে নামে ফুটবল নিয়ে। শিক্ষার্থীদের ক্লাস, পরীক্ষা, এসাইনমেন্টের এক ঘেয়েমিতে বৃষ্টি মুখর সময়টি হয়ে ওঠে অনাবিল আনন্দের।
এসব কিছু চোখের সামনে আসতেই ফিরে যাই শৈশবের কল্পনার রাজ্যে। শৈশবের পল্লীর কাদা মাটি ডিঙিয়ে চলার স্মৃতি রোমন্থন হয় বারংবার। বৃষ্টির অবিরল ধারা ব্যথিত হৃদয়ে চির সৌন্দর্যলোকের আভাস দেয়।

ঝুম বৃষ্টিতে ঠাঁয় দাড়িয়ে থাকা গগণচুম্বী দালান, স্বাধীনতা স্মারক, শহিদমিনারও মেতে ওঠে বৃষ্টি বিলাসে; এ যেন সবুজের অলঙ্কারে আবৃত এক রূপকথার মায়াপুরী।

লেখক: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর

শান্ত/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়