কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
ভালো নেই দোকানিরা
এমদাদুল হক, কুবি || রাইজিংবিডি.কম
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে দিয়ে গেছে শালবন বিহার, ময়নামতি জাদুঘর, ম্যাজিক প্যারাডাইস যাওয়ার রাস্তা। এই রাস্তায় হোটেল, চা-পান, ফটোকপি, স্টেশনারি, সেলুনসহ শতাধিক দোকান রয়েছে।
এসব দোকানগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষার্থীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের চাহিদা মেটায়। আবার এ দোকানগুলো পুরোপুরি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নির্ভর। কোনো কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দোকানগুলোও বন্ধ হয়ে যায়।
গত ১৮ জুলাই রাতে কুবির আবাসিক হলগুলো শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা অযুহাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারপরই শূণ্য হতে থাকে আবাসিক হল ও ক্যাম্পাসের আশেপাশের মেসগুলো। যার প্রভাব পড়ে দোকানগুলোতে।
স্বাভাবিকের তুলনায় বিক্রি অনেক কম হওয়ায় ধীরে ধীরে বন্ধ হতে থাকে কিছু দোকান। দুই-একদিন পর প্রায় সবগুলো দোকানই বন্ধ হয়ে যায়। এই একটি দোকানের ওপর নির্ভর করে চলে একটি পরিবার। দীর্ঘ বন্ধে পরিবারকে নিয়ে নিদারুণ কষ্টে দিন কেটেছে এসব দোকানিদের। আবার কোনো কোনো দোকানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের টাকা বকেয়া আছে। এসব টাকা আর পাবেন না বলেও জানিয়েছেন তারা।
দীর্ঘ বন্ধের পর সোমবার (১২ আগস্ট) থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক ক্লাস শুরুর ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গে পণ্য বিক্রির আশায় কিছু দোকান খুলেছে। বিক্রি কম, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বকেয়া টাকা আদায় করতে না পারার দুশ্চিন্তাসহ নানা কারণে ভালো নেই দোকানিরা।
অপরদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে শিক্ষার্থী নির্ভর এ দোকানিরা দীর্ঘ বন্ধের কবলে পড়ে পরিবার নিয়ে চরম আর্থিক সংকটে ভুগছেন। তবে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরতে শুরু করায় ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মামা হোটেলের পরিচালক মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘এই বন্ধের মধ্যে লোকসান দিয়েও আমি হোটেল খোলা রাখসি। অনেক নেতাকর্মী আছে যারা আমার দোকান থেকে বাকি খাইয়া চইল্যা গেসে। অনেকে খাওয়ার পর লিস্টে নাম লেখে, অনেকে না লেখেই চলে যায়। যারা চইল্যা গেসে, তাদের টাকা আর পামু না। বহুত টাকা বাকি খাইসে নেতাকর্মীরা। এই টাকার হিসাব বাইর করতে পারমু না।’
প্রধান ফটকের সামনে নজরুল ফটোকপির মালিক নজরুল ইসলাম রাজু বলেন, ‘দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার ফলে আমার দোকানের ছয়টা প্রিন্টার নষ্ট হয়ে গেছে। ভার্সিটি বন্ধ থাকলে আমাদের দোকানগুলো খুব একটা চলে না। অথচ দোকানের ভাড়া ঠিকই দিতে হয়।’
সেলিম মুন্সি স্টোরের দোকানদার শাহরিয়ার ইসলাম বলেন, ‘ক্যাম্পাস বন্ধ না থাকলে দৈনিক ৮ হাজার টাকার মতো বিক্রি হয়। আব্বার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা লাগে। কিন্তু বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের খুব কষ্ট হয়।
/মেহেদী/